কর্মক্ষেত্রে কাজের চাপ? কৌশলী হোন
- ফাহমিদা শিকদার
অফিসে প্রতিদিনই প্রচুর কাজ থাকে। এ কাজগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার একটা চাপ সবাই অনুভব করেন। অনেক সময় কাজের চাপে আমাদের হিমশিম খেতে হয়। বাংলাদেশ এডিবল অয়েল লিমিটেডের সিনিয়র মার্কেটিং ম্যানেজার ফয়সাল মাহমুদের মতে, নিজের ‘মাইন্ড সেট’ ঠিক থাকলে যেকোনো বড় ধরনের কাজের চাপ খুব ভালোভাবে সামলানো যায়। দেখা যায়, একজন অনেক বেশি কাজের চাপ খুব সহজেই সামলে নিতে পারেন। আবার কেউ কেউ খুব অল্প কাজের চাপে নাস্তানাবুদ হয়ে মেন্টাল ব্রেকডাউনের মতো অবস্থায় চলে যান।
প্রেশার অফিসের কাজের লোডের ওপর নির্ভর করে না, বরং লোডটাকে কীভাবে দেখা হচ্ছে, তার ওপর অনেকখানি নির্ভর করে। আর কাজের চাপ সামলানোর সময়, অভিজ্ঞতা ও ম্যাচুরিটি বড় ভূমিকা রাখে বলে মনে করেন ফয়সাল মাহমুদ।
কাজের ক্ষেত্রে দায়িত্বটাও অনেক বড় প্রেশার। দারাজ বাংলাদেশ লিমিটেডের হেড অব পিআর, মিডিয়া কমিউনিকেশন সায়ন্তনী ত্বিষা নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বললেন, ‘আগে আমি যখন জুনিয়র পোস্টে ছিলাম, তখন একটি কাজ করে জমা দিলেই হতো; আর এখন আমার অধীনে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের কাজ দেখতে হয়, সেই সঙ্গে নিজের দায়িত্বও সামলাতে হয়। আর এতগুলো মানুষের কাজে ভুল হলে তার জবাবদিহির চিন্তাও আছে।’
অফিসে কাজের সাধারণ দায়িত্ব ছাড়াও অনেক সময় বাড়তি কাজের করা লাগতে পারে। এ ধরনের বাড়তি কাজও অনেক চাপ সৃষ্টি করে।
সায়ন্তনী ত্বিষার মতে, একটি ভালো ক্যারিয়ার গড়তে হলে কর্মক্ষেত্রের শুরুর দিকে প্রচুর কাজ করতে হয়। কারণ, তখন নতুন কাজ শেখার সময়। এই সময়ের মানসিক চাপ, মাথাব্যথা বেশি হবে, তবে এটি সামলে কাজ করতে পারলে ভবিষ্যতে ভালো অবস্থানে যাওয়া যাবে।
কাজের চাপের জন্য অনেক সময় পরিবারের সদস্যদের ঠিকমতো সময় দেওয়া হয়ে ওঠে না। ফলে, পারিবারিক জীবনে সমস্যা তৈরি হতে পারে। এটি এড়ানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে বোঝাপড়া। এ ক্ষেত্রে অফিসের ঊর্ধ্বতন এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভালো বোঝাপাড়া থাকতে হবে।
ফয়সাল মাহমুদ বলেন, তিনি যখন কোনো কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, তখন পরিবারের সদস্যদের আগে থেকেই সেটি সম্পর্কে জানিয়ে রাখেন। আবার কাজ শেষে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যাতে সময় কাটাতে পারেন, তাই অফিস থেকে ছুটি নিয়ে নেন। অন্যদিকে, সায়ন্তনী ত্বিষা বলেন, অফিসের কাজ অফিসেই রেখে আসেন। বাড়ি ফিরলে পুরো সময়টি পরিবার আর নিজেকে দিয়ে থাকেন।
অনেকে কাজের চাপ সামলাতে না পেরে বা বেশি চাপে সহকর্মী বা পরিবারের সদস্যদের রাগ দেখিয়ে থাকেন। এ ধরনের আচরণ থেকে নিজেকে সংযত রাখা, মাথা ঠান্ডা রাখা জরুরি বলে মনে করেন ফয়সাল মাহমুদ।
অফিসের কর্মচারীদের মানসিক অবস্থা ঠিক রাখতে অফিস কর্তৃপক্ষকেই ভূমিকা রাখতে হবে। তাদের মোটিভেটেড করা এবং ভবিষ্যতে হতে পারে এমন কোনো সম্ভাব্য সমস্যার ব্যাপারে আগে থেকেই অবগত করে মানসিকভাবে প্রস্তুত রাখা জরুরি। আগে থেকে এমন প্রস্তুতি থাকলে যেকোনো চাপ সহজেই সামলানো যায়। আর কোনো সমস্যা হয়ে গেলেও মাথা ঠান্ডা রেখে তা সমাধানের কোনো বিকল্প নেই বলে জানান সায়ন্তনী ত্বিষা।
এ ছাড়া অফিস থেকেই সবার জন্য রিক্রিয়েশনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। সেটি হতে পারে টিম লাঞ্চ বা পিকনিক বা দেশের বাইরে থেকে ঘুরে আসা। এ ধরনের আয়োজন কর্মচারীদের মানসিকভাবে প্রফুল্ল রাখতে সহায়ক বলে বলেই উভয়ের অভিমত।
সূত্র: প্রথম আলো