এবার শুরু হোক ক্যারিয়ারভিত্তিক পড়াশোনা
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
প্রকাশিত হলো এইচএসসি পরীক্ষার ফল। এখন নিশ্চয় মাথায় ঘুরছে ক্যারিয়ারের ভূত! কারণ নিজের পছন্দমতো পেশায় ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে এখনই তার নকশা আঁকতে হবে। এই মুহূর্তের ছোট একটি ভুল সিদ্ধান্তের মাসুল সারাজীবন আপনাকে বয়ে বেড়াতে হবে।
অতএব এখনই শুরু করে দিন ক্যারিয়ারভিত্তিক পড়াশোনা। ব্যাংকিংয়ে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে আপনাকে অবশ্যই এ্যাকাউন্টিং, ফিন্যান্সের ওপর দখল রাখতে হবে। অথবা ফার্মেসিতে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে বিজ্ঞান বিভাগের বিষয়গুলো রপ্ত করতে হবে।
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হতে চাইলে
বিশ্ববাজারে বাংলাদেশে উৎপাদিত বস্ত্রের চাহিদা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। আর সেই অনুপাতে গার্মেন্টসের সংখ্যাও বাড়ছে। বাড়ছে বায়িং হাউসও। বর্তমানে বায়িং হাউসগুলোতে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কারণ এখনকার বায়িং হাউসগুলো হয়ে গেছে প্রযুক্তিনির্ভর। আর প্রযুক্তিগতভাবে সুতা তৈরি। কাপড় তৈরি। কাপড়ে রং করা ও পোশাক তৈরিই হলো টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারের কাজ। এই কাজগুলো আবার ৪টি শ্রেণীতে বিভক্ত করা যেতে পারে। ইয়ার্ন ম্যানুফ্যাকচারিং, ফ্রেবিক ম্যানুফ্যাকচারিং, ওয়েট প্রসেসিং ও গার্মেন্টস ম্যানফ্যাকচারিং। বর্তমানে শুধুমাত্র বায়িং হাউসগুলো ছাড়াও উইবিং, নিটিং, ডাইং, ফিনিশিংয়ের কারখানাগুলোতেও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এই পেশায় আপনাকে ক্যারিয়ার গড়তে হলে অবশ্যই স্বীকৃত কোন বেসরকারী ভার্সিটি থেকে টেক্সটাইলের ওপর স্নাতক সম্পন্ন করতে হবে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণও নিতে পারেন।
হতে চাইলে স্মার্ট ব্যাংকার
সময়ের স্মার্ট পেশা ব্যাংকিং। সরকারী ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি দেশে বেসরকারী ব্যাংকের সংখ্যা ক্রমবর্ধমানহারে বাড়ছে। সেই তুলনায় বাড়ছে ব্যাংকগুলোর সেবার মান। নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় পেশা হিসেবে অনেকেই ব্যাংকিংকে প্রথম পছন্দে রাখেন। তবে আপনাকে এই পেশায় সফল হতে হলে অবশ্যই সদালাপী, মিশুক হতে হবে। ব্যাংকিংয়ে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে আপনাকে অবশ্যই এ্যাকাউন্টিং, ফিন্যান্সের ওপর স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে প্রায় সব ভার্সিটিগুলোতে স্নাতক সম্পন্ন করতে পারেন। পাশাপাশি প্রাইভেট ভার্সিটিগুলোতেও এই সাবজেক্টগুলোতে পড়তে পারেন।
পেশা যখন আর্কিটেকচার এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং
ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ব্রিজ–কালভার্টের নকশার কাজটা মূলত আর্কিটেক্টরা করে থাকেন। সবমিলিয়ে দেশে অবকাঠামো উন্নয়নে আর্কিটেক্টদের জুড়ি মেলা ভার। চাইলে আপনিও একজন প্রকৌশলী হিসেবে দেশ গড়ার অংশীদার হতে পারেন আর এই জন্য আপনাকে এইচএসসি শেষ করেই সরকারী পলিটেকনিকগুলোতে বিএসসি ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তি হতে পারেন।
প্রতিশ্রুতিশীল পেশা ফার্মাসিউটিক্যালস
বিশ্ববাজারে বাংলাদেশে তৈরি ওষুধের রফতানি বাড়ছে। সেই সাথে এই পেশায় লোকবল নিয়োগও বাড়ছে। ওষুধ কোম্পানিগুলোর সারাদেশে প্রচার–প্রসার–বিক্রির জন্য হাজার হাজার কর্মী প্রয়োজন। এই পেশায় আপনি অনেকটাই স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন। সেলস রিপ্রেজেন্টিভ হিসেবে কাজ করতে গেলে আপনার পরিচিতির পরিধি যেমন বাড়বে তেমনি বাড়বে আপনার সামাজিক মর্যাদা। এ ছাড়াও এই পেশার আরেকটি বড় সুবিধা হলো মাস শেষে নির্দিষ্ট বেতনের পাশাপাশি আপনি টার্গেট ফিলাপ করতে পারলে আপনার জন্য কমিশনেরও ব্যবস্থা থাকবে। সব মিলিয়ে এই পেশায় আসতে চাইলে আপনাকে এইচএসসির পরেই এমএসসি এমবিএ কোর্সে ভর্তি হতে হবে। তবে আপনাকে অবশ্যই বিজ্ঞানের ছাত্র হতে হবে।
স্বপ্নের পেশা সাংবাদিকতা
ছোটবেলায় টেলিভিশনের পর্দায় কোন সংবাদ পাঠককে দেখে স্বপ্ন দেখতেন সাংবাদিকতায় ক্যারিয়ার গড়ার? তাহলে আপনার পালা। আপনি কড়া নাড়ছেন স্বপ্নের দরজায়। চাইলে আপনিও হতে পারেন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় একজন জনপ্রিয় সংবাদ পাঠক/পাঠিকা, একজন সফল প্রোগ্রামার মানে ডিরেক্টিং। অভিনয়, উপস্থাপনায় মাতিয়ে রাখতে পারেন দর্শকদের।
আর প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকতার পাশাপাশি ফটোগ্রাফিও করতে পারেন। অতিশীঘ্রই আসছে নতুন কয়েকটি চ্যানেল ও সংবাদপত্র। আর তাই দিনে দিনে সংবাদকর্মীদের চাহিদা ও কদর দুই বাড়ছে। সাংবাদিকতার স্বপ্ন পূরণ করতে চাইলে এইচএসসির পরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে ভর্তি হতে পারেন। এ ছাড়াও বেশকিছু বেসরকারী প্রতিষ্ঠান সাংবাদিকতা, ফটোগ্রাফিতে স্বল্প মেয়াদি প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। অবসরে বসে না থেকে সেখানেও ভর্তি হতে পারেন।