বিনামূল্যে চামড়া শিল্পে প্রশিক্ষণ

বিনামূল্যে চামড়া শিল্পে প্রশিক্ষণ

  • ক্যারিয়ার ডেস্ক

চামড়া শিল্পে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে ৫০৯০ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইআইপি) এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়নে বেকার ও চামড়া শিল্পের কর্মীদের হাতে-কলমে এ প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তোলা হবে। সারা দেশে এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এলএফএমইএবি)। বিনামূল্যে দেয়া হবে এ প্রশিক্ষণ। মাস শেষে দেয়া হবে আকর্ষণীয় ভাতা। যারা দক্ষতা দেখাতে পারবেন প্রশিক্ষণ শেষে তারা পাবেন চাকরি।

চামড়া শিল্পে প্রসপেক্ট
চামড়া শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে বর্তমানে সম্ভাবনাময় শিল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম শিল্প হিসেবে বেশ সাড়া জাগিয়েছে চামড়া শিল্প। বাংলাদেশে তৈরি চামড়াজাত পণ্যের মান ভালো হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারেও এর রয়েছে বেশ কদর। বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি দেশে প্রায় সাড়ে চার হাজার ছোট জুতা তৈরির কারখানা রয়েছে। দেশে বর্তমানে প্রায় ১০০টি আধুনিক ট্যানারি চামড়া প্রস্তুত করছে। এরই মধ্যে অন্তত ৫১টি প্রতিষ্ঠান যৌথ বিনিয়োগে বাংলাদেশের জুতা শিল্পে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যানুযায়ী, দেশে বর্তমানে ১১০টি রফতানিমুখী কারখানায় চামড়ার জুতা তৈরি হয়। শুধু চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে এমন কারখানার সংখ্যা ২০৭টি। এ খাতের সঙ্গে সরাসরি জড়িত আছে প্রায় ৭ লাখ ৪১ হাজার মানুষ। ক্রমবর্ধমান এ শিল্পে দরকার হচ্ছে প্রচুর দক্ষ জনবলের। যা আমরা সরবরাহ করতে পারছি না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যেসব কর্মী চামড়া শিল্পে কাজ করছে তারাও আধা দক্ষ অথবা অদক্ষ। এদের প্রশিক্ষণ দিতে পারলে এবং বেকার তরুণদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে পারলে এ শিল্পে প্রচুর কর্মসংস্থান হবে।

কেন এই প্রশিক্ষণ
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চামড়া শিল্পকে ঘিরে রয়েছে কর্মসংস্থানের অনেক সুযোগ। নতুন যারা এ শিল্পে কর্মী বা অপারেটর লেভেলে কাজ করতে চায়, এমন ৪০২০ জনকে এ প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। মধ্যম স্তরের কর্মী হিসেবে বিভিন্ন কারখানায় কাজ করছে এমন ১০৭০ জনও প্রশিক্ষণ পাবেন। এ বছর প্রকল্পটি শুরু হয়েছে। চলবে ২০১৭ সাল পর্যন্ত।

ভাতা ও চাকরি
প্রশিক্ষণের জন্য কোনো ফি গুনতে হবে না। বরং প্রশিক্ষণ চলাকালে প্রতি মাসে দেয়া হবে ৩২৫০ টাকা হারে ভাতা। এছাড়া কারখানা থেকে দেয়া হবে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা। প্রশিক্ষণ শেষে কাজের মূল্যায়ন করে দেয়া হবে প্রশিক্ষণ সনদ। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীর তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হবে জাতীয় দক্ষতা ডাটাবেজে। প্রশিক্ষণে ভালো করতে পারলে মিলবে চাকরি।

যেসব বিষয়ে প্রশিক্ষণ
নতুনদের অর্থাৎ অপারেটর লেভেলে তিনটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। সেগুলো হচ্ছে- কাটিং মেশিন অপারেটর, সুইং মেশিন অপারেটর এবং সেটিং অ্যান্ড অ্যাসেমিব্লং অপারেটর। আর বিভিন্ন কারখানায় মধ্যম স্তরের কর্মীদের কর্মী ব্যবস্থাপনা, উৎপাদন ব্যবস্থাপনা, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট, কমপ্লায়েন্স, এইচআর ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

প্রশিক্ষণের মেয়াদ
প্রশিক্ষণ দেয়া হবে এলএফএমইএবি সদস্য কারখানাগুলোতে। প্রশিক্ষণের মোট সময় দুই মাস বা ৩০০ ঘণ্টা। এর মধ্যে ৬০ ঘণ্টা তাত্ত্বিক। এতে চামড়া শিল্পের মৌলিক বিষয়ে ধারণা দেয়া হবে। ২৪০ ঘণ্টার ব্যবহারিক প্রশিক্ষণে হাতে-কলমে কাজ শেখানো হবে।

কোর্সে কতজন
কাটিং মেশিন অপারেটর পদে প্রতি ব্যাচে ১৫ জন করে এবং সুইং মেশিন অপারেটর ও সেটিং অ্যান্ড অ্যাসেমিব্লং অপারেটর পদে প্রতি ব্যাচে নেয়া হবে ৩০ জন করে। ভর্তির জন্য যোগাযোগ করতে হবে প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহে। প্রকল্পের নিয়ম অনুসারে প্রশিক্ষণার্থীকে সপ্তাহে ছয় দিন ছয় ঘণ্টা করে কাজ করতে হবে। তবে কারখানাভেদে এ নিয়ম ভিন্ন হতে পারে।

যোগ্যতা
১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী বাংলাদেশী নাগরিকরা আবেদন করতে পারবেন। ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণী পাস। অগ্রাধিকার পাবেন নারী, উপজাতি ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রার্থীরা। ভর্তির সময় জমা দিতে হবে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ বা নম্বরপত্রের ফটোকপি, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ও দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।

আবেদন ও বাছাই প্রক্রিয়া
ভর্তি ফরম পাওয়া যাবে www.lfmeab.org ও www.coelbd.com ঠিকানায়। ফরম সংগ্রহ করা যাবে প্রকল্পের অফিস থেকেও। ফরম পূরণ করে জমা দিতে হবে প্রকল্পের গাজীপুরের চন্দ্রা অফিসে।

ভর্তি প্রক্রিয়া
বিভিন্ন সময় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রার্থী খোঁজা হবে। তাই নিয়মিত চোখ রাখতে হবে পত্রিকায়। www.lfmeab.org ও www.coelbd.comওয়েবসাইটেও পেতে পারেন দরকারি তথ্য। এছাড়া যে কোনো তথ্যের জন্য ০২-৬৮২২৫১৮৭৩, ০১৭৬৮৪২৩৩২২, ০১৬১৫২৪১০২০ নম্বরে ফোন করতে পারেন।favicon59

Sharing is caring!

Leave a Comment