তরুণদের আগ্রহ বাড়ছে পুষ্টিবিজ্ঞানে
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
খাদ্যের মান নির্ণয় ও নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই কাজ করে পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট। এ সম্পর্কে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশে রয়েছে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। উচ্চ শিক্ষায় পছন্দের বিষয় হিসেবে পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞানকে নির্বাচন করে শিক্ষার্থীরা গড়তে পারে দারুণ আগামী।
ভর্তি প্রক্রিয়া
এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষায় ৪র্থ বিষয় বাদে জিপিএ-৮ থাকতে হবে।প্রার্থীকে বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করতে হবে।পরীক্ষা দিতে হবে ‘ক’ ইউনিটের মাধ্যমে। ১২০ নম্বরের পরীক্ষার সময় ১ ঘণ্টা।
অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হলে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।
পুষ্টিবিজ্ঞান কী: ফুড এন্ড নিউট্রিশন বা পুষ্টিবিজ্ঞান এখন আর কারো কাছে শুধু রান্না-বান্নার বিষয় এর মধ্যে আটকে নেই। বর্তমানে খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টিকর জীবন-যাপনের চাহিদা অনুযায়ী নিত্যনতুন প্রযুক্তি ও জ্ঞানশক্তি কাজে লাগিয়ে খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণ, পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি, পরিমিত উপায়ে খাদ্য গ্রহণ প্রভৃতি বিষয় এর উপর চলছে পর্যালোচনা। অনিয়মিত উপায়ে খাদ্য গ্রহণ করে স্থূলতা, মেদ বৃদ্ধিসহ নানা জটিলতা তৈরি হচ্ছে। সুতরাং ডায়েটেশিয়ান এবং নিউট্রিশনিস্টদের কাছে সাক্ষাতও বেড়ে চলেছে। বাংলাদেশেও স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে কিংবা নিজেকে ফিট রাখতে অনেকেই এখন শরণাপন্ন হচ্ছেন ডায়েটেশিয়ানের। প্রতিদিন এর খাদ্য তালিকায় স্বাস্থ্যকর উপায়ে খাদ্য বাছাই করাটাও জরুরি। তাই এই বিষয় নিয়ে জানার আগ্রহও বাড়ছে। এ লক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশনাল সায়েন্সের উপর পড়াশোনা করানো হচ্ছে।
পুষ্টিবিজ্ঞানে অন্তর্ভুক্ত বিষয়: পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান অনুষদের অধীনে যেসব বিষয় পাঠ্যসূচি হিসেবে সংযুক্ত করা হয় সেগুলো হলো- ফুড সায়েন্স, ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন, ফুড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, নিউট্রিশন ইন ইমার্জেন্সি, ডেভেলপমেন্ট ফুড কেমিস্ট্রি, হিউম্যান মাইক্রোবায়োলজি, ইন্ট্রোডাকশন টু নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড সায়েন্স, মাইক্রো ইকনোমিক্স, হিউম্যান এনাটমি, হিউম্যান ফিজিওলজি, সোশ্যাল নিউট্রিশন, বায়োকেমিস্ট্রি, ম্যাটার্নাল অ্যান্ড চাইল্ড নিউট্রিশন, নিউট্রিশনাল প্রবলেম, নিউট্রিশনাল প্ল্যানিংসহ প্রয়োজনীয় বিভিন্ন বিষয়।
পড়া যাবে যেখানে: উচ্চশিক্ষার বিষয় হিসেবে পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান এ দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে নাম পরিবর্তিত হলেও পড়ার বিষয়বস্তু মূলত অভিন্ন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এটি পড়ানো হয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, নর্দান ইউনিভার্সিটি, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি এবং গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজে সম্মান পর্যায়ের কোর্স করানো হয়।
রয়েছে দারুণ আগামী: বিশেষত স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, মেডিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট, স্বাস্থ্য প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটসহ স্বাস্থ্য পুষ্টি ও জনসংখ্যা বিষয়ক অসংখ্য প্রতিষ্ঠান মেডিক্যাল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন খুব সহজেই। পড়াশোনা শেষে শিক্ষার্থীরাই BRAC, ASA, TMSS, NESTLE-এর মতো দেশীয় প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি কাজ করতে পারেন FAO, ICDDRAB, UNICEF, WHO-এর মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোতেও। এছাড়া বিএসসি এবং এমএসসি পাসের পর দেশে এবং দেশের বাইরে কাজ করার সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতাল, ক্লিনিক, স্কুল-কলেজে নিউট্রিশনিস্টের পোস্ট রয়েছে। এছাড়াও বড় বড় ফুড প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিগুলো, ন্যাশনাল-মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি, ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রি, পাবলিক হেলথ ডিপার্টমেন্ট, ফিটনেস সেন্টার, বাংলাদেশ ও আন্তজার্তিক বড় বড় রেস্তোরাঁ, ক্যাটারিং সংস্থা প্রভৃতি ক্ষেত্রে কাজের জায়গা রয়েছে। সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিচার, মেডিক্যাল রিসার্চার, এক্সারসাইজ ফিজিওলজিস্ট, ফুড সায়েন্স রিসার্চার, হোম ইকোনমিস্ট ইত্যাদি পেশায় যুক্ত হওয়ার সুযোগ রয়েছে।