শখ থেকেই যদি আয় হয় !
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
ফটোগ্রাফি একটা শখের বিষয়। এই শখটাকেই আজকাল অনেকে পেশা বানিয়ে নিচ্ছেন। শখের সঙ্গে যদি পেশার সামঞ্জস্য হয়ে যায় তাহলে ক্ষতি কী? শখ থেকেই যদি হয়ে যায় অন্নের সংস্থান তাহলে সেটাই তো ভালো। তাই নয় কী? ক্যামেরা আবিষ্কারের পর থেকেই বিশ্বের বহুকোটি মানুষ ছবি তোলার শখের কারণে বনে-পাহাড়ে ঘুরে বেড়াতে থাকেন দিনের পর দিন। অতীতে এই কাজটি অনেকটা জটিল থাকলেও বর্তমান সময়ের ডিজিটাল ক্যামেরার এই কাজকে একেবারে সহজ করে দিয়েছে। ফটোগ্রাফির এই শখটি ব্যবহার করেই ইচ্ছা করলে আয় করতে পারবেন ইন্টারনেট থেকে। কিংবা পেশার বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করা যায় ফটোগ্রাফিকে। বর্তমানে অনেকেই এটি করছেন কিংবা এগোচ্ছেন এ পথ ধরে। তাহলে আসুন এবার জেনে নিই শখের ফটোগ্রাফি করে কি কি প্রক্রিয়ায় ইন্টারনেট থেকে আয় করা যায় তার ফিরিস্তি।
ইন্টারনেটে ছবি বিক্রি করে আয়
কম-বেশি সবারই ফটোগ্রাফের চাহিদা থাকে। বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন থেকে শুরু করে শিল্প মূল্যের কারণেও মানুষ ছবি কেনেন। আপনি দক্ষ ফটোগ্রাফার হলে সেই চাহিদা পূরণ করতে পারেন। ইন্টারনেটে ছবি বিক্রির সেবা দেয়ার জন্য রয়েছে বহু প্রতিষ্ঠান। তাদের গ্যালারিতে আপনার ছবি জমা দিতে পারেন। বিক্রি হলে আপনি টাকা পাবেন। কিংবা ওই ঝামেলায় না জড়াতে চাইলে এ বিষয়ে নিজের একটি পার্সোনাল ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন। যে ওয়েবসাইট একেবারে সহজ প্রক্রিয়ায় ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছবি বিক্রি করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে যত ভালো ছবি তুলতে পারবেন তত বেশি টাকায় তা বিক্রি করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনার ছবির মান এমন হতে হবে যা মানুষ টাকা দিয়ে কিনতে আগ্রহী হবেন। এ জন্য প্রয়োজন উঁচুমানের ক্যামেরা, ফটোগ্রাফি বিষয়ে জ্ঞান এবং ছবি তোলার বিষয়ে অত্যধিক আগ্রহ। পেশাদার দক্ষ ফটোগ্রাফারদের জন্য এ ব্যবস্থাটি বর্তমানে সবচেয়ে বেশি কার্যকর ব্যবসা।
ব্লগ থেকে আয়
আপনি ছবি উঠাতে ভালোবাসেন কিন্তু ততটা দক্ষ নন। আপনার জন্য আগের পদ্ধতি কার্যকর না হলে নিজস্ব ব্লগে ছবি রেখে আয় করতে পারেন। ছবি বিক্রি করা প্রয়োজন নেই, বিনামূল্যের ব্লগ তৈরি করে সেখানে ছবিগুলো রাখুন। ছবির পরিমাণ যত বেশি ভিজিটর তত বেশি পাওয়ার সম্ভাবনা। আপনার আয় সরাসরি ছবি থেকে আসবে না, আসবে ভিজিটর থেকে। ব্লগে গুগলের এডসেন্স, ফাস্ট ২ আর্ন, কিংবা এ ধরনের বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্কের বিজ্ঞাপন রাখুন। ভিজিটর যত বাড়বে আয় তত বাড়বে। ব্লগ তৈরি কিংবা ফটোগ্রাফি সম্পর্কে যদি কিছুই জানা না থাকে তাহলেও এ কাজ করা সম্ভব। সাধারণ মানের একটি ক্যামেরা থাকাই যথেষ্ট। তবে মাথায় রাখবেন দক্ষ হওয়া ছাড়া কোনো পথেই বেশি দূর এগোতে পারবেন না আপনি।
ফটোগ্রাফিবিষয়ক লেখা থেকে আয়
এই মুহূর্তে যদি ফটোগ্রাফিতে দক্ষ নন আপনি। কিন্তু দক্ষতার বাড়াতে নানা চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আর এ জন্য এ বিষয়ে বিস্তর পড়াশোনা শুরু করে দিয়েছেন। পাশাপাশি অভিজ্ঞতাও সঞ্চয় করছেন। পরে এ বিষয়ে জ্ঞান নেয়া হলে বিষয়টিকে আয়ের উৎস হিসেবে কাজে লাগাতে পারেন আপনি। ইন্টারনেটে ব্লগগুলোতে বর্তমানে ফটোগ্রাফি বিষয়ক পোস্টের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ বিষয়ে আর্টিকেল লিখতে পারেন। ফটোগ্রাফি বিষয়ক এই আর্টিকেল লিখে ইন্টারনেট থাকে সহজেই আয় করতে পারেন।
ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার হিসেবে আয়
ইন্টারেটে আজকাল আয়ের ব্যাপক ক্ষেত্র তৈরি হলেও সাধারণত আমরা ফ্রিল্যান্সিং মানে প্রোগ্রামিং আর ওয়েবসাইট ডেভেলপিংই বুঝে থাকি। কিন্তু এ মাধ্যম ছাড়াও ইন্টারনেটে ফ্রিল্যান্সিংয়ের আরও অনক সাবজেক্ট রয়েছে। যে বিষয়গুলো থেকে আয় করা যায় হাজার হাজার ডলার। আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিংয়ের ওই সাইটগুলো (ফ্রিল্যান্সার বা ওডেস্ক) দেখে থাকেন তাহলে হয়ত চোখে পড়েছে সেখানেও যে ছবি ওঠানোর কাজ রয়েছে। কারো বিশেষ বিষয়ে ছবি উঠানো প্রয়োজন, আপনি ফ্রিল্যান্সার ফটোগ্রাফার হিসেবে সেই ছবি উঠিয়ে দিতে পারেন। এতে শখ পূরণের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণের অর্থও আয় করতে পারবেন।
গ্রাফিক ডিজাইনে ফটোগ্রাফি ব্যবহার করে আয়
আপনি নিজে গ্রাফিক ডিজাইনার হয়ে থাকেন কিংবা অন্য গ্রাফিক ডিজাইনারের জন্য ছবি সরবরাহকারী হোন তাহলে ফটোগ্রাফি থেকে অনেক সহজেই আয়ের পথ বের করে নিতে পারবেন। কারণ বর্তমান ইন্টারনেট বিজ্ঞাপনের এ যুগে প্রায় সব বিজ্ঞাপনেই ছবির প্রয়োজন হয়। ব্যক্তি, স্থান, প্রকৃতি নানা ধরনের ছবির সংগ্রহ তৈরি করে সেখান থেকে নিয়মিত আয়ের সুযোগ তৈরি করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে একজন ফটোগ্রাফারকে একটু দক্ষতার পরিচয় দিতে দিতে হবে। এই দক্ষতাই আয়ের পথ সুগম করে উপস্থাপন করবে আপনার সামনে।
সাধারণত উপরে ইন্টারনেট ব্যবহার করে ফটোগ্রাফি থেকে আয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর বাইরেও একজন ফটোগ্রাফার সবচেয়ে বেশি আয়ের সুযোগ পান ইভন্টের ফটোগ্রাফি করে। যে কোনো অনুষ্ঠানের ছবি তোলার পাশাপাশি ফটোগ্রাফিক স্টুডিও ও সব ধরনের আয়ের জন্যই ফটোগ্রাফি আপনার অন্যতম প্রধান আয়ের উৎস হতে পারে।