তিন ‘ই’ তে স্বপ্নের ক্যারিয়ার
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
ক্যারিয়ার নিয়ে সবারই কমবেশি ভাবনা থাকে। কিছু কিছু বিষয় আছে যা নিয়ে লেখাপড়া করলে চাকরি পাওয়া কিংবা স্বপ্নের ক্যারিয়ার নিয়ে একটু কমই চিন্তা করতে হয়। এমন একটি বিষয় হচ্ছে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং। সংক্ষেপে যাকে বলে ইইই। বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিষয়টি বেশ আগ্রহ জন্মিয়েছে। এর কারণও আছে। বিদেশ তো বটেই দেশেও ইইই গ্রাজুয়েটদের জন্য প্রচুর কর্মক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। পাস করার পর কাক্সিক্ষত চাকরি পেতে অপেক্ষা করতে হয় না। ইইই ইঞ্জিনিয়াররা বিদেশেও উচ্চতর শিক্ষালাভ কিংবা গবেষণায় ভালো সুযোগ পাচ্ছেন। উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপের দেশগুলোর নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে যাচ্ছেন বাংলাদেশসহ এশিয়ার বহু শিক্ষার্থী।
প্রসপেক্ট
গতানুগতিক বিষয়ে পড়ালেখা করে চাকরি পাওয়া কঠিন। কিন্তু ইইই গ্রাজুয়েটদের ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন। বাংলাদেশে বিভিন্ন টেলিকম কোম্পানি, ইলেকট্রনিক কোম্পানি, বিভিন্ন শিল্প কারখানাসহ অনেক জায়গাতেই এই বিষয়ের ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা রয়েছে। দেশের উদীয়মান অ্যানার্জি ও পাওয়ার সেক্টরে ইইই প্রকৌশলীদের ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হচ্ছে। বুয়েট থেকে ইইই পাস করা একটি বেসরকারি পাওয়ার কোম্পানির কর্মকর্তা আনোয়ারুল আজিম বলেন, ক্যারিয়ারের শুরুতে আমি স্পষ্ট ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছি। এই বিষয়ে যেই পড়তে চান, আমি অবশ্যই তাকে স্বাগত জানাব। দেশে এবং বিদেশে, সব জায়গাতেই এই বিষয়ে পড়াশোনা করার যেমন সুযোগ রয়েছে, তেমনি চাকরির জন্য জায়গাও রয়েছে অনেক। আজহারুল ইসলাম সম্প্রতি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইইই পাস করেছেন। তিনি বিটিআরসির অ্যাসিসটেন্ট ইঞ্জিনিয়ার পদে যোগ দিয়েছেন। প্রসপেক্ট সম্পর্কে বলেন, ইইই প্রকৌশল নিঃসন্দেহে একটি সম্মানজনক পেশা। বাংলাদেশে এই ধরনের পেশার মূল্যায়ন অনেকটাই দৃশ্যমান। আমার মনে হয় আমি সঠিক বিষয় নিয়েই পড়ালেখা করেছি।
সামনে সুদিন
কিছুদিন আগে নাজমুল হাসান জুয়েল ইইই পাস করে ডিপিডিসি’তে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে যোগ দিয়েছেন। নিজের অবস্থান থেকে পর্যবেক্ষণ করে এই পেশা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর যে পরিমাণ ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার তৈরি হয়, তার চেয়ে বহু গুণ চাকরির ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। অন্য সব ইঞ্জিনিয়ারদের তুলনায় দেশে ও বিদেশে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা বেশি। চাহিদা থাকায় দ্রুত প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনও করা যায়। তিনি বলেন, আমরা ৩৮ জন ডিপিডিসি’তে যোগ দিয়েছি। তার মধ্যে ৩৪ জনই হচ্ছে ইলেকট্রিক্যাল, ২ জন সিভিল ও ২ জন সিএসই প্রকৌশলী। তাই নিজের ভবিষ্যৎ বাছাইয়ের বেলায় কোনো প্রকার দ্বিধা ছাড়াই এই বিষয়কে বেছে নিতে পারে যে কেউ।
কোথায় পড়বেন
ইইই পড়তে হলে আপনাকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাস হতে হবে। যারা সদ্য এইচএসসি পাস করেছেন বুয়েট, চুয়েট, রুয়েটসহ দেশের সব সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে আপনিও এ বিষয়ে পড়ার সুযোগ নিতে পারেন। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও বিষয়টি পড়ানো হচ্ছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে চলতি সেশনে অনলাইনে ভর্তি আবেদন ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। হাতেগোনা দু’একটি বাদে প্রায় সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও এ বিষয়টি পড়ানো হচ্ছে।