বাড়ছে পাটপণ্যের চাহিদা
- অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক
দেশে পাটপণ্যের চাহিদা বাড়ছে। বর্তমানে প্রতি মাসে প্রায় ৭০০ কোটি টাকার পাটপণ্য বিদেশে রফতানি হচ্ছে। এ ছাড়া বিশ্ববাজারে ৫০০ বিলিয়ন পিস শপিং ব্যাগের চাহিদা রয়েছে। তবে ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমিয়ে আনা গেলে এ শিল্পকে আরও ভালো অবস্থানে আনা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন উদ্যোক্তারা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইতিমধ্যে পাটের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে পাটপণ্যের বহুমুখী উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ানোর উদ্যোগ হাতে নিয়েছে সরকার। বহুমুখী পাটপণ্য শিল্পের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ।
জানতে চাইলে বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেন, পাটপণ্য পরিবেশবান্ধব হওয়ায় প্রতিনিয়ত বিশ্বে এর চাহিদা বাড়ছে। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ মার্কেটেও এ চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাটের বহুমুখী ব্যবহার প্রসারিত হচ্ছে। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে যে পরিমাণ চাহিদা আসছে তা পূরণ করতে পারছি না। তিনি আরও বলেন, পাট থেকে শুধু ছালা, বস্তা, চট এগুলোই উৎপন্ন হয় না। বর্তমানে দেশে নিজস্ব বিনিয়োগকারীরা ১৫০ ধরনের পাটপণ্য উৎপাদন করছে। ইতিমধ্যেই নতুন প্রযুক্তি পেয়েছি। প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বল্প দামে পলিথিন ব্যাগের বিকল্প হিসেবে পাটের ব্যাগ তৈরি করব। এতে করে পরিবেশ রক্ষা পাবে, পাশাপাশি পাটের হারানো ঐতিহ্য ও গৌরব ফিরে আসবে।
পাট রফতানিকারকদের সংগঠন জুট এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য মতে, বাংলাদেশ থেকে প্রতি মাসে ৬০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকার পাটপণ্য বিদেশে রফতানি হচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২৫টি দেশের বাইরেও কোরিয়া, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়াসহ ১২০টি দেশে এসব পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। এ ছাড়া বিশ্ববাজারে ৫০০ বিলিয়ন পিস শপিং ব্যাগের চাহিদা রয়েছে। তাই পাটজাত শপিং ব্যাগ রফতানির ক্ষেত্রে এ দেশের ভালো সুযোগ রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি মিলে ৭০০-এর বেশি প্রতিষ্ঠান পাটজাত পণ্য তৈরির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। পাটের গতানুগতিক ব্যবহারের ধারণা থেকে বেরিয়ে পাটজাত পণ্যে বৈচিত্র্য আনতে কাজ করছে ১০টি মাঝারি ও ৩৮ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান।
সরকারের পাটের বাধ্যতামূলক ব্যবহারের পাশাপাশি নতুন ব্যবসার পরিকল্পনাতেও ঠাঁই করে নিয়েছে সোনালি এ আঁশ। বস্ত্র, সুতা, কার্পেটের মতো পণ্যের বাইরেও সোনালি আঁশ পাট দিয়ে তৈরি হচ্ছে নান্দনিক সব পণ্য। ছেলেমেয়েদের বিভিন্ন ধরনের পোশাক, শাড়ি, জুতা, ব্যাগ, টেবিল ম্যাটের মতো দরকারি পণ্য ছাড়াও বানানো হচ্ছে পাটের তৈরি কাগজ, পাটের ভিজিটিং কাড, র্যাপিং শিট, দাওয়াতপত্র, অফিস আইটেম, ফাইল ফোল্ডার, ব্যাগ, কার্ড হোল্ডার, পেপার ফোল্ডার, ফাইলবক্স, টিস্যুবক্স, ডেক্স ক্যালেন্ডার, স্কুল ব্যাগ, ল্যাপটপ ব্যাগ, লেডিস পার্স, শপিং ব্যাগ, মোবাইল-পাসপোর্ট ব্যাগ, ভ্যানিটি ব্যাগ, গ্রোসারি ব্যাগ, ট্রাভেল ব্যাগ, স্যুটকেস, ব্রিফকেস, মানিব্যাগসহ নোটবুক, ফটো অ্যালবাম, ল্যাম্প শেড ও পুতুলসহ দৃষ্টিনন্দন শোপিস তৈরি করছে তারা।