প্রযুক্তি খাতে আধিপত্য বাড়াতে বড় বিনিয়োগ চীনের
- অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক
চীনভিত্তিক শিক্ষাপ্রযুক্তি কোম্পানিগুলোয় গত বছর ১০৭ কোটি ডলার বিনিয়োগ হয়েছে। এ হার ২০১৪ সালের তুলনায় ১৮ শতাংশ বেশি। চলতি বছর এ খাতে দেশটি যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। খবর ভেঞ্চারবিটস।
শিক্ষাপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টসহ প্রযুক্তির অন্য শাখায় শিক্ষা দিয়ে থাকে। বলা হচ্ছে, শিক্ষা স্টার্টআপে এমন বড় বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রযুক্তি খাতে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ নিয়ে এগোচ্ছে চীন। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্ অর্থনীতি উত্পাদন অর্থনীতি থেকে সরে আধিপত্য বিস্তারে সচেষ্ট সেবাভিত্তিক কার্যক্রমে। লক্ষ্য বাস্তবায়নে স্টার্টআপগুলোয় বিনিয়োগের জন্য সরকার সম্প্রতি ৩০ হাজার কোটি ডলারের রাষ্ট্রায়ত্ত ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ডও গঠন করেছে। উদাহরণ হিসবে বলা যায় হ্যাংঝৌয়ের নাম। ২০২০ সালের মধ্যে ৩০ হাজার স্টার্টআপকে আমন্ত্রণের পরিকল্পনা রয়েছে ঝেজিয়াং প্রদেশের রাজধানীর।
দেশটিতে অনেক বিদেশী প্রতিষ্ঠান কার্যালয় স্থাপন করে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। কয়েক দশক ধরে পেশাদারমহলের কাছে বেশ জনপ্রিয় গন্তব্য চীন। আরো বেশি বিদেশী প্রতিভাধরদের আকৃষ্ট করতে সম্প্রতি অভিবাসন কার্যালয় স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির জননিরাপত্তা-বিষয়ক মন্ত্রী গুয়ো শেংকান। কিন্তু এ উদ্যোগের পরিপূর্ণ ফলাফল দেশের নাগরিকদের কাছ থেকেই আসবে, সে সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল চীন। গত কয়েক দশকে স্থানীয়ভাবে এমন অনেক প্রযুক্তি পেশাদার তৈরি হয়েছে। কিন্তু এদের অনেকেই উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য দেশের বাইরে চলে গেছেন। এদের কেউ কেউ দেশে ফিরেছেন। এখন তাদের স্থানীয়ভাবে প্রশিক্ষণ দেয়ার বিষয়টিই গুরুত্বপূর্ণ।
চীনে বর্তমানে ৮০ কোটি ৬০ লাখ কর্মী রয়েছে। এসব কর্মীর পুনরায় প্রশিক্ষণ দেয়া প্রয়োজন। কাজের গুরুত্ব সম্পর্কে সরকারও অবগত। কিন্তু কাজটি সহজ নয় বলেও জানে সরকার। উন্নত প্রতিভা, চাহিদার বৈচিত্র্যতাসহ আরো কিছু বিষয়ের কারণে বদলে যাচ্ছে পৃথিবী। এ পরিবর্তনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সঠিক পথে রয়েছে চীন। দৃষ্টান্ত হিসেবে বলা যায়, দেশটির সরকারের ম্যাসিভ ওপেন অনলাইন কোর্সগুলো। এ কর্মসূচির আওতায় ১ কোটি ৩০ লাখ শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
স্টার্টআপ ও উদ্ভাবনের পথে দ্রুতগতিতে ধাবমান যুক্তরাষ্ট্র, বিশেষ করে সিলিকন ভ্যালি। কিন্তু সিলিকন ভ্যালির যাত্রা মাঝে মধ্যে থমকে পড়ছে উপযুক্ত দক্ষ জনবলের অভাবে। মার্কিন সরকার এর গুরুত্ব বুঝতে পারছে। সেই সুবাদে টেকহায়ার নামের এক প্রতিষ্ঠান নির্মাণে বিনিয়োগ করছে ১৫ কোটি ডলার। এ প্রতিষ্ঠানে মার্কিনদের প্রযুক্তি বিষয়ে প্রয়োজনীয় শিক্ষা দেয়া হবে। এ বিকল্প শিক্ষাব্যবস্থা গ্রহণকারী দরিদ্র শিক্ষার্থীদের অর্থসহায়তাও দেবে মার্কিন সরকার।
কিন্তু চীনের এ পদক্ষেপ যথেষ্ট কিনা, সংশয় প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা। বামপন্থীদের অধীনে থাকা চীনের শিক্ষাব্যবস্থা ছিল পুরোপুরি রাষ্ট্র পরিচালিত। এখন দেশটি দিনবদলে বদ্ধপরিকর। এ পরিবর্তন দেশটির অর্থনীতিতে পরিবর্তন আনবে। ফলে আসছে দশকগুলোয় শিক্ষাপ্রযুক্তি খাতে সরকারি-বেসরকারি— দুই খাত থেকেই সহায়তা পাওয়া যাবে। যুক্তরাষ্ট্রকে চীনের ছাড়িয়ে যাওয়ার যোগ্যতা রয়েছে কিনা, সে বিষয়েও দ্বিধা রয়েছে অনেকের। সংশয় আছে এর বড় উদ্ভাবন শক্তিতে পরিণত হওয়া নিয়ে।