বৈশ্বিক ব্যবসার কেন্দ্র হিসেবে লন্ডনের মর্যাদা হুমকির মুখে
- অর্থ ও বাণিজ্য
‘ব্রিটেন ইউরোপের বাইরে যাচ্ছে! কিন্তু আপনি কি যেতে চাচ্ছেন না?’ সম্প্রতি ইনভেস্ট বাভারিয়ার ওয়েবসাইটে ক্লিক করলে এমন একটি নীল রঙা বাক্স সামনে চলে আসে। ইনভেস্ট বাভারিয়া মূলত জার্মানির একটি প্রচার সংস্থা, যার অবস্থান মিউনিখে। এসবকিছুই মূলত ব্যবসা আকৃষ্ট করার প্রয়াস। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে ব্রিটেনের প্রস্থান, ইউরোপজুড়ে অঞ্চলগুলোর সামনে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার সুযোগ উন্মুক্ত করে দিয়েছে। ফলে ইউরোপের পরবর্তী ব্যবসায়িক কেন্দ্রে পরিণত হতে অঞ্চলগুলোর মধ্যে ঠাণ্ডা লড়াই শুরু হয়ে গেছে।
ইইউর ব্যবসার প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত লন্ডন। বহুদিন ধরেই মিউনিখ ডিজিটাইজেশন এবং আইসিটির মতো খাতে লন্ডনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে আসছে। কিন্তু ইংরেজিভাষী দেশ হওয়ার কারণে ইউরোপের প্রবেশদ্বারের মর্যাদা এবং বিশালাকার আন্তর্জাতিক মেধাবৃত্তির সন্নিবেশে প্রবেশাধিকার লন্ডনকে স্পষ্টভাবেই অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে এগিয়ে রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং ভারত থেকে প্রচুর পরিমাণ প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে যুক্তরাজ্যে। কিন্তু ব্রেক্সিট যুক্তরাজ্যের এ অবস্থান নাড়িয়ে দিয়েছে।
একদিকে ব্রিটেন ও ইউরোপের মধ্যে ব্রেক্সিটের রূপরেখা নিয়ে উত্তপ্ত আলোচনা চলছে— যেখানে নিজ সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে সমন্বিত বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পর্যন্ত ত্যাগ করতে রাজি ব্রিটেন— অন্যদিকে থেকে যাওয়া বা ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়া ব্যবসাগুলোর নিয়ন্ত্রণ পেতে মন্থর যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে।
ব্রেক্সিটের পর বেলজিয়াম, ফ্রান্স, জার্মানি ও অন্যান্য দেশের অঞ্চলগুলোর মধ্যে ভারতের সঙ্গে সক্রিয়তা বৃদ্ধির চেষ্টা জোরেশোরে শুরু হয়েছে। দেশটিতে নিজেদের উপস্থিতি বৃদ্ধির দিকে মনোনিবেশ দেয়া শুরু হয়েছে, জানালেন ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফআইসিসিআই) যুক্তরাজ্যের পরিচালক প্রতীক দাত্তানি।
এদিকে শহরগুলো বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন প্রচারণা শুরু করেছে। ‘লন্ডন, যাই ঘটুক, তোমার জন্য মাদ্রিদ রয়েছে’— এমন বিজ্ঞাপন প্রচার শুরু করেছে স্পেনের রাজধানীটি। লন্ডনের বাসের গায়ে সাঁটা বিজ্ঞাপনটি পরিষ্কারভাবেই সেসব লন্ডনারসদের জন্য প্রচারিত, যারা নিজেদের ভবিষ্যত্ নিয়ে ভীত। গত সপ্তাহে লন্ডনারসদের লক্ষ্যে প্যারিসও প্রায় এ ধরনের প্রচারণা শুরু করেছে, যেগুলো হিথরো ও ইউরোস্টার টার্মিনালে দেখা যাচ্ছে। ব্রেক্সিটের প্রভাবে অন্যতম প্রধান বৈশ্বিক কেন্দ্র হিসেবে লন্ডনের মর্যাদা এ মুহূর্তে হুমকির মুখে।