বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল করবে টাটা
- অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক
বাংলাদেশে একটি বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইজেড) করতে আগ্রহী ভারতের বৃহৎ শিল্প গ্রুপ টাটা। মূল ব্যবসা মোটরগাড়ি ও বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন করে শুল্কমুক্ত সুবিধায় ভারতে রফতানিই এ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রধান লক্ষ্য। অন্যান্য দেশে রফতানিতেও একই সুবিধা নিতে চায় কোম্পানিটি। এ অঞ্চল স্থাপনের বিষয়ে আলোচনা চূড়ান্ত করতে টাটা স্টিল এসইজেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অরুণ মিশ্র আগামী সপ্তাহে ঢাকায় আসছেন।
টাটার মতো বড় গ্রুপকে বিনিয়োগের ব্যবস্থা করে দিতে আগ্রহী বাংলাদেশও। এ বিষয়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, টাটাকে স্বাগত জানাতে তারা প্রস্তুত। দেশের যেখানেই তারা বিনিয়োগের জন্য সুবিধা মনে করবে, সেখানেই তাদের এসইজেড করার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে বিশেষ ব্যবস্থায় অন্যান্য অবকাঠামো সুবিধা দিতে কার্পণ্য করা হবে না। তিনি বলেন, টাটার মতো বিখ্যাত গ্রুপ এ দেশে ইজেড করলে বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে ইমেজ সংকট অনেকটাই কেটে যাবে। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদকে এ দেশে টাটার বিনিয়োগ আনতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে অনেক আগে থেকেই বিশেষভাবে অনুরোধ করেছেন তিনি।
বিনিয়োগে গতি ফেরাতে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। বেজার বোর্ড সভায় এ পর্যন্ত সরকারি ৫৬টি ইজেডের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বেসরকরি খাতে প্রাক-যোগ্যতা যাচাই লাইসেন্স পেয়েছে ১১টি অঞ্চল। পাইপলাইনে রয়েছে আরও একাধিক। এর বাইরে চীন, জাপান ও ভারতকে ইজেড নির্মাণের জন্য জায়গা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এজন্য সমঝোতা চুক্তি সই হয়েছে।
ভারতের সবচেয়ে বড় শিল্প গ্রুপ টাটা বিশ্বের অন্যতম বড় বহুজাতিক কোম্পানি। একশ’ বছরের বেশি পুরনো এ গ্রুপ বেশ কয়েকটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান কিনে বিশ্ববাণিজ্যে পরিচিতি পেয়েছে। টাটা গ্রুপের অধীনে গাড়ি, স্টিল, বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগসহ ৩০টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে গ্রপের রাজস্বের পরিমাণ ছিল প্রায় ১০৪ বিলিয়ন ডলার। কর্মকর্তা-কর্মী আছেন সাত লাখের মতো।
বাংলাদেশে টাটার বড় বিনিয়োগ আনতে এবং ইজেড প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া নিয়ে মূল যোগাযোগ করছে নবগঠিত বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিআইডিএ)। দু’মাস ধরে এ বিষয়ে যোগাযোগ চালিয়ে আসছে সংস্থাটি। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকায় আসছেন টাটার এসইজেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অরুণ মিশ্র। তবে কোথায়, কী ধরনের ইজেড করবে, এ বিষয়ে প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার আগে বিস্তারিত কিছু জানাতে রাজি হয়নি সূত্র।
জানতে চাইলে বিআইডিএ পরিচালক তৌহিদুর রহমান খান বলেন, কয়েক মাস ধরে প্রায় প্রতিদিন টাটা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের নিয়মিত ই-মেইল ও টেলিফোনে যোগাযোগ হচ্ছে। এসব যোগাযোগে এ দেশে একটি বৃহৎ আকারে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় সুবিধা-অসুবিধা জানতে চেয়েছেন তারা। সেসবের জবাব দেওয়া হয়েছে। শেষ পর্যন্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নেতৃত্বে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল আগামী সপ্তাহে ঢাকায় আসছে। এসইজেড প্রতিষ্ঠায় বিস্তারিত নিয়ে ১০ নভেম্বর বৈঠক হবে। বৈঠকে বেজাসহ সংশ্লিষ্ট সেবা খাতের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।