২০২১ সালে চামড়া খাতে রফতানি আয় হবে ৫০০ কোটি ডলার
- অর্থ ও বাণিজ্য
স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২০২১ সালে ৬ হাজার কোটি ডলার রফতানি আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার। এর মধ্যে চামড়া ও চামড়াজাত শিল্প থেকে ৫০০ কোটি ডলারের পণ্য রফতানির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্য অর্জনে সরকার প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছে। গতকাল সন্ধ্যায় ‘লেদারটেক বাংলাদেশ-২০১৬’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এ কথা বলেন।
ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) আসক ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশন্স প্রাইভেট লিমিটেড চতুর্থবারের মতো তিন দিনব্যাপী ‘লেদারটেক বাংলাদেশ ২০১৬’ এর আয়োজন করেছে। গতকাল এ প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালে বাংলাদেশের রফতানি আয় ৬ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে। এর মধ্যে শুধু তৈরি পোশাক শিল্প খাত থেকেই রফতানি আয় হবে ৫ হাজার কোটি ডলার। বাকিটা আসবে অন্যান্য পণ্য রফতানি থেকে। এ লক্ষ্য অর্জনে চামড়াসহ অন্যান্য পণ্য রফতানিতে সরকার নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, শুধু চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানি থেকে আয় হবে ৫০০ কোটি ডলার। বর্তমানে আমাদের চামড়া খাত থেকে ১১৬ কোটি ডলার রফতানি আয় হচ্ছে। একে ৫০০ কোটি ডলারে উন্নীত করতে যা যা করা প্রয়োজন, তার সবই করা হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে চামড়াজাত পণ্য রফতানি খাতে ১৫ শতাংশ হারে নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। পাশাপাশি সাভারের চামড়া শিল্পনগরীতে স্থানান্তরিত শিল্পপ্রতিষ্ঠান থেকে ক্রাস্ট ও ফিনিশড লেদার রফতানির বিপরীতে ৫ শতাংশ হারে রফতানি-ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, চামড়া আমাদের গুরুত্বপূর্ণ রফতানি পণ্য। সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কারণে আগামীতে চামড়া রফতানি অনেক বৃদ্ধি পাবে। সরকার এরই মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি, ওষুধ, ফার্নিচার, জাহাজ নির্মাণ, কৃষিজাত পণ্য রফতানির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। পাশাপাশি অপ্রচলিত পণ্য রফতানিতেও উত্সাহ দেয়া হচ্ছে। দেশের রফতানি আয় বৃদ্ধির জন্য সরকার বাস্তবসম্মত সব ধরনের সহযোগিতাই প্রদান করবে। চামড়া শিল্পকে গুরুত্ব দিয়ে পরিকল্পিতভাবে আন্তর্জাতিক মানের চামড়াজাত রফতানি পণ্য উত্পাদনের জন্য সাভারে চামড়া শিল্পনগরী গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে কারখানা স্থানান্তরকারী ব্যবসায়ীদের দেয়া হচ্ছে বিশেষ সুবিধা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন বলেন, চামড়া শিল্প উদীয়মান একটি খাত। এটি ভবিষ্যতে আরো বিকশিত হবে। কারণ আমাদের সে ধরনের সক্ষমতা রয়েছে। চামড়া শিল্পে নির্ধারিত কর কাঠামোয় কোনো ধরনের অসামঞ্জস্য থাকলে তা বাস্তবভিত্তিক করা হবে।
উল্লেখ্য, আইসিসি’বির ৩, ৪ ও ৫ নম্বর হলে গতকাল এ লেদারটেক প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। ৫ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে সন্ধা ৭টা পর্যন্ত এ প্রদর্শনী চলবে। এতে বাংলাদেশের চামড়া, চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, কম্পোনেন্ট, কেমিক্যাল এবং অ্যাকসেসরিজ প্রদর্শন করা হচ্ছে। প্রদর্শনীতে বাংলাদেশসহ ১৫টি দেশ অংশ নিচ্ছে। এগুলো হচ্ছে— ভারত, চীন, কোরিয়া, তুরস্ক, মিসর, ভিয়েতনাম, যুক্তরাজ্য, শ্রীলংকা, ইতালি, জার্মানি, সিঙ্গাপুর, জাপান, তাইওয়ান ও হংকং। এসব দেশের মোট ২৫০টি প্রতিষ্ঠান এতে অংশ নিচ্ছে। স্থানীয় শিল্পের দোরগোড়ায় বিশ্বের সর্বাধুনিক ট্যানিং লেদার, ম্যানুফ্যাকচারিং ফুটওয়্যার, চামড়াজাত পণ্য ও এ-সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি উপস্থাপন করতেই মূলত এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। এতে অংশগ্রহণকারী প্যাভিলিয়নগুলোর একটি বড় অংশজুড়ে রয়েছে ভারত ও চীনের বিভিন্ন কোম্পানি।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সেন্ট্রার অব এক্সিলেন্স ফর লেদার স্কিল (সিওইএল) বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সাঈদ নাসিম মঞ্জুর, ইন্ডিয়ান ফুটওয়্যার কম্পোনেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার অ্যাসোসিয়েশনের (আইএফসিওএমএ) প্রেসিডেন্ট বিপিন শেঠ, বাংলাদেশ পাদুকা প্রস্তুতকারক সমিতির সভাপতি শাখাওয়াত হোসাইন বেলাল, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহিন আহমেদ মাহিন, বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএলএলইএফএ) চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ মাহীন, এএসকে ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশনের ডিরেক্টর নন্দগোপাল কে ও টিপু সুলতান ভূঁইয়া।