আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম কমছে
- অর্থ ও বাণিজ্য
আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম কমলেও দেশে তা উল্টো বাড়ছে। আর এ দরবৃদ্ধির পেছনে বড় বড় কোম্পানিকে দায়ী করছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি মানের মিল মালিকরা। তবে গম আমদানিকারকরা বলছেন, এক মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে কানাডীয় গমের দাম টনপ্রতি ৩০-৩৫ ডলার বেড়ে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে স্থানীয় বাজারে।
ইনডেক্স মুন্ডি ডটকম সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার আদর্শ হার্ড রেড উইন্টার গম টনপ্রতি বিক্রি হয় ১৬৩ ডলারে। একই পরিমাণ পণ্যের দাম কমে মে মাসে ১৫৭ ডলার, জুনে ১৫৬, জুলাইয়ে ১৩৩, আগস্টে ১২৭ ও সেপ্টেম্বরে ১২৩ ডলারে বিক্রি হয়। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার আদর্শ সফট রেড উইন্টার গমের দাম এপ্রিলে ছিল টনপ্রতি ১৯২ ডলার। একই পরিমাণ পণ্য মে মাসে ১৮৯, জুনে ১৮৭, জুলাইয়ে ১৬৫, আগস্টে ১৫৯ ও সেপ্টেম্বরে দাম কমে বিক্রি হয় ১৫৭ ডলারে।
রাজধানীর পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারের এক আটা-ময়দা মিল মালিক বণিক বার্তাকে বলেন, সাতদিন আগে প্রতি মণ (৩৭ কেজি ৩২০ গ্রাম) গমের দাম ছিল ৭৮০-৭৮৫ টাকা। বর্তমানে দাম বেড়ে তা বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকায়। অর্থাত্ এক সপ্তাহের ব্যবধানে গমের দাম মণপ্রতি ১২০ টাকা বেড়েছে।
ওই ব্যবসায়ী আরো জানান, বাজারে যখন বড় বড় কোম্পানির পণ্য অপেক্ষাকৃত কম চলে, তখন তারা একজোট হয়ে গমের দাম বাড়িয়ে দেন। এতে দেশের ছোট ও মাঝারি মানের মিলগুলো তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পেরে উঠতে পারে না। বড় মিলারদের কাছে যখন বিপুল পরিমাণ আটা-ময়দার মজুদ হয়, তখনই তারা সুবিধামতো দামে বিক্রি করেন। এদিকে গমের দাম বেড়ে যাওয়ায় ময়দার দাম কেজিপ্রতি ৪-৫ টাকা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তিনি।
তবে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশার চৌধুরী বলেন, এক-দেড় মাস ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে কানাডিয়ান গমের দাম টনপ্রতি ৩০-৩৫ ডলার বেড়েছে। এর প্রভাব কিছুটা দেশের বাজারে পড়েছে। চট্টগ্রামে প্রতি কেজি গমে ১ থেকে ১ টাকা ৭৫ পয়সা দাম বেড়েছে। এতে ময়দা তৈরি হলে কেজিপ্রতি ২ থেকে আড়াই টাকা দাম বাড়বে বলে মনে করছেন তিনি। তবে অস্ট্রেলিয়া কিংবা অন্যান্য দেশের গমের দাম কমতির দিকে আছে।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে খোলা ময়দা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩৪-৩৬ টাকায়। এছাড়া একই পরিমাণ প্যাকেটজাত ময়দা ৪০-৪২ টাকায় লেনদেন হচ্ছে। আর মৌলভীবাজারে পাইকারি পর্যায়ে ময়দা লেনদেন হচ্ছে প্রতি কেজি ২৭-২৮ টাকায়।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে মোট গম উৎপাদন হয়েছে ১৩ লাখ ৪৮ হাজার টন। আর দেশে সারা বছর পণ্যটির চাহিদা রয়েছে প্রায় ৪০ লাখ টন। অবশিষ্ট গম কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, ইউক্রেন, ভারত থেকে আমদানি করে চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে।