সুতার দাম বেড়েছে পাউন্ডে সর্বোচ্চ ১১ টাকা
- অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক
দেশের অন্যতম পাইকারি পণ্যের মোকাম নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে জমে উঠেছে সুতা বেচাকেনা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীত সামনে রেখে তাঁতিরা শীতের পোশাক তৈরির জন্য সুতার ক্রয় বাড়িয়েছেন। বেচাকেনা বাড়ায় ১৫ দিনের ব্যবধানে সুতার দাম বেড়েছে পাউন্ডে ৩ থেকে ১১ টাকা।
সুতার বাজার ঘুরে দেখা যায়, ১০ কাউন্টের সুতা বিক্রি হচ্ছে প্রতি পাউন্ড ৫০ টাকায়। ১৫ দিন আগে এর দাম ছিল ৪৫ টাকা। গতকাল প্রতি পাউন্ড ২০ কাউন্টের সুতা ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, ৩০ কাউন্টের সুতা ৯১ থেকে ৯৫ টাকায় লেনদেন হয়। দুই সপ্তাহ আগে ৩০ কাউন্টের সুতা প্রতি পাউন্ড ৯০ থেকে ৯২ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এ সময় একই পরিমাণ ৪০ কাউন্টের সুতা ১০৪ থেকে ১০৫ টাকায় লেনদেন হয়েছিল। তবে এখন তা ১০৮ থেকে ১১২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া টানবাজারে ৫০ কাউন্টের সুতা বিক্রি হচ্ছে প্রতি পাউন্ড ১২৮ থেকে ১৩৩ টাকায়। ১৫ দিন আগেও যা ১২০ থেকে ১২২ টাকায় লেনদেন হয়েছিল। সে হিসাবে ৫০ কাউন্টের সুতার দাম বেড়েছে পাউন্ডে ৮ থেকে ১১ টাকা। গতকাল ৬০ কাউন্টের সুতা বিক্রি হয় প্রতি পাউন্ড ১৩২ থেকে ১৩৮ টাকা দরে। দুই সপ্তাহ আগে এর দাম ছিল ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা। এছাড়া ৮০ কাউন্টের সুতা প্রতি পাউন্ড ২২৫ থেকে ২৩০ টাকায় লেনদেন হচ্ছে।
টানবাজারের সুতা ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন জানান, তাঁতিরা শীতের পোশাক তৈরির জন্য মোটা কাপড় বুনছেন। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার দাম বেড়েছে পাউন্ডে ৫ থেকে ৬ টাকা। ভারতীয় তুলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রতি পাউন্ড ৫৪ থেকে ৭৮ টাকায়, দুই সপ্তাহ আগে যা বিক্রি হয়েছিল ৫০ থেকে ৫২ টাকায়। তিনি বলেন, তুলার দাম বাড়ায় সুতার বাজার এখন ঊর্ধ্বমুখী।
ইয়াং ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী জানান, শীত সামনে রেখে নরসিংদী ও আড়াইহাজারের গোপালদীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের তাঁতিরা কাপড় উৎপাদনের জন্য সুতা কিনছেন। যে কারণে টানবাজারে সুতার চাহিদা বেড়েছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার দাম বৃদ্ধির স্পিনিং মিলগুলো ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরবরাহ কিছুটা কমিয়ে দেয়ায় দাম বাড়ছে।
টানবাজারের মুন্ন ইয়াং ট্রেডিংয়ের ম্যানেজার খোকন মিয়া জানান, কোরবানির ঈদের পর পরই সুতার দাম কমে গিয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার দরবৃদ্ধি এবং দেশীয় সুতার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সুতার দাম পাউন্ডে বেড়েছে সর্বোচ্চ ১১ টাকা।
সুতা ব্যবসায়ী সমির ভদ্র জানান, শীত মৌসুম চলে আসায় বাজারে মোটা সুতা অর্থাত্ ১০ ও ২০ কাউন্টের সুতার চাহিদা সবচেয়ে বেড়েছে। পাশাপাশি ৫০ ও ৬০ কাউন্টের সুতার চাহিদাও বাড়তির দিকে আছে। এ কাউন্টের সুতা দিয়ে গার্মেন্ট ও হোসিয়ারি পণ্য উৎপাদন হয়। তিনি আরো বলেন, দেশী সুতার বাজারের মূল বাধা হচ্ছে গার্মেন্টের বন্ডেড সুতা খোলাবাজারে বেচাকেনা। কারণ বন্ডেড ও দেশীয় সুতা প্রায় একই দামে বেচাকেনা হচ্ছে। ফলে ক্রেতারা দেশী সুতার চেয়ে বন্ডেড ২৪ ও ২৬ কাউন্টের সুতা বেশি কিনছেন। বন্ডেড সুতা বাজারে আইন করে নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন। তবেই দেশী সুতার বাজার চাঙ্গা হবে।
বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লিটন সাহা জানান, দুই সপ্তাহ ধরে সুতার দাম কিছুটা বেড়েছে। বাজারে সুতার সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। তবে কিছু কিছু সুতার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দাম একটু বাড়তির দিকে।