পর্যাপ্ত মজুদ সত্ত্বেও বেড়েছে আলুর দাম
- অর্থ ও বাণিজ্য
দেশের বাজারে আলুর পর্যাপ্ত মজুদ থাকা সত্ত্বেও আকস্মিকভাবে দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত সপ্তাহের হঠাত্ বৃষ্টিতে শীতের সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বাজারে আলুর চাহিদা বেড়েছে। এ কারণে দামও বাড়তির দিকে রয়েছে।
রাষ্ট্রয়াত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাব অনুযায়ী, রোববার রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোয় প্রতি কেজি আলুর দাম ছিল ২০-২৫ টাকা। গতকাল তা বেড়ে হয় ২৮-৩২ টাকা। অর্থাত্ তিনদিনের ব্যবধানে আলুর দাম কেজিতে বেড়েছে ৭-৮ টাকা।
রাজধানীর পুরান ঢাকার শ্যামবাজারের পাইকারি আলুর আড়তদার মেসার্স বাণিজ্যালয়ের ব্যবস্থাপক আবদুর রহিম জানান, গত সপ্তাহে বৃষ্টির কারণে শীতের সবজি উৎপাদন ব্যাহত হয়। এ কারণে বাজারে আলুর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দামে প্রভাব পড়েছে। দুদিন আগে তাদের বাজারে প্রতি কেজি আলুর দাম ছিল ১৮-১৯ টাকা। গতকাল বুধবার তা বিক্রি হয়েছে ২২ থেকে সাড়ে ২২ টাকায়। বাজারে নতুন আলু সরবরাহ না হলে দাম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানান তিনি।
আলু রফতানিকারকরা জানান, দেশে আলুর কোনো সংকট নেই। তবে দাম কম হওয়ায় কৃষকরা লোকসানে ছিলেন। সম্প্রতি দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা লাভবান হবেন। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশে কোনো কৃষকের কাছে আলু মজুদ নেই। আলুর বড় ব্যবসায়ীরা কোল্ড স্টোরেজে মজুদ রেখেছেন। দাম বেড়ে যাওয়ার সুফল মূলত ব্যবসায়ীরাই ভোগ করছেন।
বাংলাদেশ পটেটো এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিইএ) সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, দেশে আলুর কোনো সংকট নেই। তবে কয়েক দিন বৃষ্টি হওয়ায় শীতের সবজি সরবরাহ কমে যায়। এতে আলুর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দাম বেড়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বলছে, ২০১০-১১ অর্থবছরে উৎপাদন হয় ৮৩ লাখ টন আলু। ২০১১-১২ অর্থবছরে তা কমে দাঁড়ায় ৮২ লাখ ৫ হাজার টনে। পরের অর্থবছর উৎপাদন হয় ৮৬ লাখ ৩ হাজার টন। ২০১৩-১৪ অর্থবছর উৎপাদন হয় ৮৯ লাখ ৫০ হাজার এবং ২০১৪-১৫ অর্থবছরে তা আরো বেড়ে দাঁড়ায় ৯২ লাখ ৫৪ হাজার টনে।
রফতানিকরা জানান, গত ছয় দশকে উন্নত বীজ এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে বাংলাদেশে আলু উৎপাদন অব্যাহতভাবে বেড়ে বর্তমানে বছরে ৯৬ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে। আলু উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান বর্তমানে বিশ্বে সপ্তম।