বাড়ছে চালের দাম
- অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক
দেশের বিভিন্ন জেলায় পুরোদমে আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে বাজারে নতুন চাল বিকিকিনিও হচ্ছে। কিন্তু আমনের এ ভরা মৌসুমেও রাজধানীর পাইকারি বাজারে পণ্যটির দাম বেড়েছে বস্তায় (প্রতি কেজি ৫০ কেজি) ১৫০ থেকে ২০০ টাকা।
রাজধানীর বাবুবাজার ও বাদামতলী এলাকার পাইকারি চাল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বিভিন্ন জাতের চালের মধ্যে সবচেয়ে বেড়েছে বিআর-২৮ (লতা নামে পরিচিত) এর দাম। দুই সপ্তাহ আগে পাইকারিতে লতা চাল বিক্রি হয়েছিল প্রতি কেজি ৩৫-৩৬ টাকায়। বর্তমানে তা ৩৭-৩৯ টাকায় লেনদেন হচ্ছে। মিনিকেট চালের দাম কেজিতে ১ টাকা বেড়ে ৪৩-৪৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিনা-৭ জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩৭-৩৮ টাকায়। অন্যান্য চালের দামও কেজিপ্রতি ১ থেকে দেড় টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
বাবুবাজারের চাল ব্যবসায়ী আবদুর রহিম জানান, সরকার আমন মৌসুমে প্রতি কেজি চাল ৩৪ টাকা দামে কিনবে। এমন কথা বাজারে ছড়িয়ে পড়েছে। এ কারণে আমনের ভরা মৌসুমে চালের দাম না কমে উল্টো বাড়ছে। কয়েক দিনের ব্যবধানে পণ্যটির দাম বস্তায় ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
বাদামতলী বাবুবাজার চাল আড়তদার সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক হাজি রফিকুল ইসলাম জানান, প্রতি বছর আমনের ভরা মৌসুমে চালের দাম কমে। কিন্তু এ বছর উল্টো বাড়ছে। কয়েক দিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ১ থেকে দেড় টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তবে বাজারে চালের কোনো সংকট নেই।
চালের পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, গত বছর আমন মৌসুমের শুরুতে রাজধানীর পাইকারি বাজারে নাজিরশাইল ভালো মানের চাল বিক্রি হয়েছিল প্রতি কেজি ৩৮-৩৯ টাকায়। এ বছর তা বিক্রি হচ্ছে ৪৬ টাকায়। এছাড়া ২০১৫ সালের আমন মৌসুমে নাজিরশাইল মাঝারি মানের চালের দাম ছিল কেজিপ্রতি ২৯-৩০ টাকা। এ বছর তা ৩৮-৩৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছ। আর প্রতি কেজি বিনা-৭ চাল (বিআর-২৮-এর মতো দেখতে) গত বছর বিক্রি হয়েছিল ৩২-৩৩ টাকায়। এ বছর তা ৩৭-৩৮ টাকায় লেনদেন হচ্ছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাব অনুযায়ী, গতকাল রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোয় সাধারণ মানের নাজিরশাইল চাল বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৪৬-৪৮ টাকায়। এছাড়া একই পরিমাণ উন্নত মানের নাজিরশাইল ৪৮-৫৬, মাঝারি মানের ৪০-৪৫ ও লতা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪২ টাকায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশে বর্তমানে গত বোরো মৌসুমের বিপুল পরিমাণ চাল মজুদ রয়েছে। চাল আমদানির ওপর সরকার শুল্ক বাড়ানো এবং সরকার প্রতি কেজি মোটা চাল ৩২ টাকায় কেনায় বাজারে পণ্যটির দাম বেড়ে যায়। তবে এ বছর আমন মৌসুমের শুরুতে দাম বৃদ্ধির মাধ্যমে মূলত মিল মালিকরা চালের বাজারকে চাঙ্গা রাখতে চাইছেন। তাদের ধারণা, ভরা মৌসুমে দাম বাড়ানো গেলে সারা বছরই সুযোগ নেয়া যাবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে ৫২ লাখ ৬১ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু আমন ধানের আবাদ ছাড়িয়েছে ৫৩ লাখ ৮০ হাজার ৪০০ হেক্টর; যা লক্ষ্যমাত্রা থেকে ১ লাখ ১৯ হাজার ১০০ হেক্টর বেশি।