জনশক্তি রপ্তানি বাড়ছে
- সম্পাদকীয় ডেস্ক
বৈশ্বিক শ্রমবাজারে বাংলাদেশের শ্রমিকদের অন্যতম প্রধান গন্তব্য সৌদি আরব। একসময় বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির বাজারে শীর্ষে ছিল দেশটি।
২০০৮ সালে সেখানে রপ্তানি হয়েছিল এক লাখ ৩২ হাজার কর্মী। ২০০৯ সালে নিষেধাজ্ঞা আসার পর সৌদি বাজারে শ্রমশক্তি রপ্তানিতে ধস নামে। কমতে থাকে জনশক্তি রপ্তানি। এই ধারা অব্যাহত ছিল ২০১২ সাল পর্যন্ত। ২০১৬ সালে নারীকর্মী নিয়োগের ঘোষণার পর নতুন করে বাড়তে থাকে কর্মী যাওয়ার হার। চলতি বছর সৗদি আরবে জনশক্তি রপ্তানি বেড়ে গেছে। একসময় বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানিতে শীর্ষে থাকা দেশটি আবার শীর্ষে চলে এসেছে। এ বছর জনশক্তি রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রাও পূর্ণ হতে চলেছে।
অভ্যন্তরীণ শ্রমবাজার সীমিত বলে বাংলাদেশের বিপুল সম্ভাবনাময় জনশক্তির বড় অংশ বেকার থাকে। এই শ্রমশক্তি কাজে লাগানো যেতে পারে বিদেশের শ্রমবাজারে। অদক্ষ শ্রমশক্তি দক্ষ ও অর্ধদক্ষ হিসেবে তৈরি করে বিদেশের বাজারে পাঠানো গেলে প্রবাসী আয় বাড়বে। চলতি বছরের জুন মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সৌদি আরব সফরের সময় সে দেশে চিকিৎসক, নার্স, প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন পেশায় দক্ষদের নেওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়। সেই আলোচনার ফল এরই মধ্যে পেয়েছে বাংলাদেশ। সৌদি আরব আবার জনশক্তি রপ্তানির শীর্ষে চলে আসায় বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও নতুন গতির সঞ্চার হবে। এখন নতুন নতুন দেশে বাংলাদেশের শ্রমশক্তি রপ্তানির বিষয়টিও সামনে এনে নতুন বাজার খুঁজে বের করতে হবে।
একসময় বাংলাদেশের শ্রমিকদের প্রধান গন্তব্য ছিল তেলসমৃদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। একদিকে তেলের দরপতন, অন্যদিকে ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়াসহ কিছু দেশে চরম অস্থিরতার কারণে এই বাজার সংকুচিত হয়ে গেছে। এ ছাড়া অদক্ষ শ্রমবাজারে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতাও সৃষ্টি হয়েছে। কাজেই এখন দক্ষ শ্রমশক্তি গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। বিকাশমান বিশ্ববাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জনশক্তি গড়ে তুলতে পারলে প্রক্রিয়াটি আরো সহজ হবে। কোন দেশে কোন ধরনের জনশক্তি রপ্তানি করা যায়, সে অনুযায়ী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলে বিশেষ কোনো দেশের ওপর চাপ পড়বে না। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের দূতাবাসগুলো বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে। শ্রমবাজার খুঁজে বের করার পাশাপাশি সেখানে বাংলাদেশের শ্রমশক্তির আত্তীকরণের কাজটি দূতাবাসগুলোকেই করতে হবে। এ জন্য কূটনৈতিক তত্পরতা আরো বাড়াতে হবে।
দেশে শিক্ষিত ও দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে পারলে তা বোঝা না হয়ে আশীর্বাদ হিসেবেই গণ্য হবে।