স্বপ্নবাজ তরুণদের স্বপ্ন পূরণ হবে কিভাবে
- মো. মাহবুবুর রহমান
শেক্সপিয়রের বউয়ের নাম কী? আচ্ছা বলুন তো জহির রায়হানের ভাইয়ের নাম কী? পেলের জন্ম তারিখ কবে? প্রশ্নগুলো করা হয়েছিল প্রশাসন, কাস্টমস ক্যাডার প্রত্যাশী কয়েকজনকে। আজ চাকরির বাজারে কম্পিউটার অপারেটর পদের ভাইভাতে প্রশ্ন করা হয়—খাবার স্যালাইন কিভাবে বানাতে হয়? কেন এই অসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রশ্নের মাধ্যমে মেধা যাচাই হবে? ৪ বছর মেয়াদি অনার্স শেষ করে একটা ছাত্রকে পড়তে হয় কারক, সমাস, বিভক্তি; করতে হয় লাভ-ক্ষতি, পাইপ-টাংকি, কতভাবে সাজানো যায়, সুদের হার; সেইসব অঙ্ক। মুখস্ত করতে হয় মুসোলিনী, কাহ্নপার জন্মতারিখ। হরমুজ প্রণালী, আমাজান বন, পাহাড়ের দৈর্ঘ্য, নদীর গভীরতা, রাস্তার নামকরণ, মুদ্রার নাম, রাজধানীর নাম আরো কত কী। যে ছেলেটা দুইটা জিপিএ ৫, অনার্সে সিজিপিএ ৩.৭৫ নিয়ে বের হয় সে এই অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো না জানলে চাকরি পায় না!
মহামনীষী আইনস্টাইনকে একবার সাংবাদিকেরা কিছু প্রশ্ন করেছিল, তিনি উত্তর দিতে পারেননি। সাংবাদিকেরা তখন বলেছিল, এটা তো আপনার জন্য খুবই সহজ হওয়ার কথা। কিন্তু আপনি তো পারলেন না। তখন তিনি বললেন, যে জিনিসটা বইতে খুঁজলে ১ মিনিটের মধ্যে পাওয়া যায়, সেটা কেন মুখস্ত করে ব্রেইনকে কষ্ট দেব? আর আমরা সব মুখস্ত করছি মেধাবী হিসেবে নিজেকে চেনাব বলে।
কারক, সমাস, পাইপ-টাংকির অঙ্ক দিয়ে একটা ছাত্র যখন এএসপি হবে, এগুলো কি কাজে লাগবে তখন? একদিকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের জ্বালা, আরেকদিকে হাস্যকর সব প্রশ্ন যেন গোদের উপর বিষফোঁড়া। হিসাব করলে দেখা যায়, দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বাড়ছে, ১০টি পদের জন্য আজ ৫০০০০ প্রার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে। কতদিন এইসব হতে থাকবে?
শিক্ষার অবমূল্যায়ন রোধ করুন। অসামঞ্জস্যপূর্ণ শিক্ষা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় বের করে মেধার মূল্যায়ন করা হোক।
মো. মাহবুবুর রহমান: শিক্ষার্থী, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়