আদর্শ উদ্যোক্তার বৈশিষ্ট্য
- উদ্যোক্তা ডেস্ক
ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টদের দৃষ্টিকোণ থেকে একজন আদর্শ উদ্যোক্তার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- তাকে এমন আইডিয়া পেশ করতে হবে যা সহজেই অন্যান্য বিনিয়োগকারীর সামনে কার্যকরভাবে উপস্থাপন করা যায়। আইডিয়ার সাথে প্রাসঙ্গিক রেফারেন্স দিতে হবে। আইডিয়া হতে হবে আকর্ষণীয়। বৈচিত্র্যপূর্ণ দক্ষতা এবং সক্ষমতা আছে এমন একটি দল গঠনের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে হবে এবং জনবল অনুযায়ী সম্পদ বরাদ্দ করতে হবে। কাজের প্রতি পরিশ্রমী হওয়ার সাথে সাথে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের ইচ্ছার প্রতি সহনশীল হতে হবে। সর্বোপরি, বিনিয়োগকৃত অর্থের খরচ এবং চুক্তি অনুযায়ী বাস্তবধর্মী ফলাফল দিতে হবে।
বিনিয়োগের মুনাফা
ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ডের মুনাফা থেকে প্রত্যেক অংশীদারই লাভবান হন। বিএসইসির আইন অনুযায়ী নিবন্ধিত ভেঞ্চার ফান্ডকে মোট সম্পদ মূল্য বা এনএভি-র শূন্য দশমিক ০৫ শতাংশ বার্ষিক ফি দিতে হয়। ফি সংগ্রহ করে কমিশন। ট্রাস্টিরাও তাদের দায়িত্ব পালনের জন্য কমিশন পাবেন। স্টার্ট-আপ উদ্যোক্তাকে চাহিদামতো মূলধন দেওয়া হয় এবং তার বিপরীতে বিনিয়োগকারীরা গঠনতন্ত্রে বর্ণিত ডকুমেন্ট অনুযায়ী নির্দিষ্ট একটি মুনাফা পান। লেনদেনের সব বিষয়ে ভূমিকা রাখার জন্য ফান্ড ম্যানেজার নির্দিষ্ট ম্যানেজমেন্ট ফি এবং বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত মুনাফাও পাবেন। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট) রুলস ২০১৫ তে ফান্ড ম্যানেজারের ম্যানেজমেন্ট ফি সম্পর্কে বিস্তারিত বলা আছে।
একটি ইমপ্যাক্ট ফান্ড ব্যবস্থাপনার জন্য ফান্ড ম্যানেজার মোট সম্পদ মূল্য বা এনএভির ৪ শতাংশ পর্যন্ত বার্ষিক ম্যানেজমেন্ট ফি পেতে পারেন। একটি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ড ব্যবস্থাপনার জন্য এনএভির সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ পর্যন্ত এবং একটি প্রাইভেট ইকুইটি ফান্ড ব্যবস্থাপনার জন্য এনএভির সর্বোচ্চ ২ শতাংশ ম্যানেজমেন্ট ফি নিতে পারবেন।
গঠনতন্ত্রে বর্ণিত শর্ত অনুযায়ী, ফান্ডটি যদি ন্যূনতম মুনাফার হার অর্জন করতে পারে তাহলে ফান্ড ম্যানেজার বার্ষিক মোট মুনাফার ২০ শতাংশ শেয়ার নিতে পারেন। ফান্ড ম্যানেজার তার নিজস্ব বিনিয়োগের উপর নগদ লভ্যাংশ নিতে পারবেন (ফান্ডে ২ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ বিনিয়োগ থাকলে)।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (পাবলিক ইস্যু) রুলস ২০১৫ অনুযায়ী অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ম্যানেজার এবং অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডসমূহ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ হিসেবে ধরা হয়। এর ফলে ফান্ড ম্যানেজার এবং অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড লভ্যাংশ এবং মূলধন আয় দুটোই পেতে পারেন।
ভেঞ্চার ক্যাপিটালের ঝুঁকি
ভেঞ্চার ক্যাপিটালের সফলতার হার খুব বেশি নয়। ভালো বিজনেস প্ল্যান, দক্ষ জনবল এবং কার্যকর উদ্যোগের সমন্বয়ে একটি ব্যবসা গড়ে সাধারণত ১০ বারের মধ্যে মাত্র ১ বার সফলতার মুখ দেখতে পায়। সবচেয়ে ভালো কোম্পানির সফল হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৮০ শতাংশ।
বিনিয়োগের ব্যাপ্তিকাল
ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টরা নতুন কোম্পানিকে এগিয়ে নেয়, কিন্তু শেষমেষ তারা ৩ থেকে ৭ বছরের মধ্যে তাদের বিনিয়োগ মুনাফাসহ ফেরত নেন।
স্টার্ট-আপের একদম প্রাথমিক পর্যায়ে বিনিয়োগ করা হলে ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টরা ৫ থেকে ৭ বছর অপেক্ষা করেন। তবে ব্যবসার পরবর্তী ধাপের বিনিয়োগে মাত্র কয়েকবছর অপেক্ষা করে থাকেন। ভেঞার ক্যাপিটাল বিনিয়োগ দীর্ঘমেয়াদে ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ। এই বিনিয়োগে ঝুঁকির জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত থাকতে হয়। তাছাড়া ব্যবসার মাঝখানে বিনিয়োগের মুনাফা টাকায় ভাঙ্গিয়ে নেওয়া যায় না। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট) রুলস ২০১৫ অনুযায়ী, ভেঞ্চার ফান্ড অবশ্যই ৫ থেকে ১৫ বছরের জন্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে।