সাইকেলে স্বপ্নপূরণ

সাইকেলে স্বপ্নপূরণ

ইচ্ছে করলে ডিজাইন প্রকৌশলী হিসেবে জীবনটা পার করে দিতে পারতেন জিম টার্নার। জীবনটা শুরুও হয়েছিল সে পথেই। কিন্তু রক্তের মধ্যে যার উদ্যেক্তা হওয়ার নেশা তিনি কেন অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরি করবেন! তাই এক সময় নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়ে ফেলেন। সেই প্রতিষ্ঠানে চাকরি দিতে থাকেন অনেক বেকার তরুণকে। জিম টার্নারের সাফল্যের গল্প শোনাচ্ছেন মারুফ ইসলাম


পড়ালেখা করেছেন প্রকৌশলদিব্যায়। কিন্তু প্রকৌশরী হিসেবে খুব একটা নামযশ নেই তাঁর। বিশ্বব্যাপী এখন তাঁর পরিচয় একজন সাইকেল ব্যবসায়ী হিসেবে। কীভাবে এই পরিচয় তাঁর নামের সাথে সেঁটে গেল? সেটা এক গল্প বটে!

১৯৯৬ সালের কথা – জিম একটি ইলেকট্রিক বাইক কিনলেন। তারপর সেটি চালাতে গিয়ে দেখলেন, সাইকেলটি নিয়ে পাহাড়ে ওঠা যায় না। ধুর! এইটা কোনো সাইকেলই না! মেজাজ খারাপ হয়ে যায় জিমের। তিনি সিদ্ধান্ত নেন অবশ্যই এমন একটা সাইকেল তৈরি করতে হবে যেটা নিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত যাওয়া যায়। যে সাইকেল নিয়ে পাহাড়ে ওঠা যায়। তিনি ভাবতে বসলেন। ভাবতেই থাকলেন। ভাবতেই থাকলেন। চাকরির পাশাপাশি তাঁকে ভাবতে হয়; তাই ভাবনাটা খুব একটা এগোয় না। অবশেষে বছর দুয়েক পরে ১৯৯৮ সালে তিনি একটি সাইকেলের মডেল দাঁড় করালেন। ভাববার কারণ নেই সাইকেলটি তৈরি হয়ে গেছে! জিম এই মডেল নিয়ে আরও ভাবতে শুরু করলেন। অবশেষে ২০০৮ সালে তিনি পূর্ণাঙ্গরূপে সাইকেলটি দাঁড় করাতে পারলেন। নাম দিলেন অপটিবাইক। আপনি কী অনুমান করতে পারছেন, ২০১৫ সালে জিমের কী অবস্থা?

এখন বিশ্বের ৩২টি দেশে জিমের অপটিবাইক মহাজনপ্রিয়। তাঁর কোম্পানির বাৎসরিক আয় এখন ১ দশমিক ৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার!

জিম টার্নারে
জিম টার্নারে

ইলেকট্রনিক বাইসাইকেল জনপ্রিয় করা মোটেও সহজসাধ্য কোনো ব্যাপার ছিল না। এজন্য জিমকে অনেক ব্যবসায়িক উদ্যেগ নিতে হয়েছে। প্রচারণার ব্যাপক কৌশলও অবলম্বন করতে হয়েছে। প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট ইনফিউশনে এক সাক্ষাৎকারে জিম একটি কৌশলের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, বাইসাইকেল নিয়ে আমি একটি ভিডিওচিত্র তৈরি করেছিলাম। সেটা বিভিন্ন চ্যানেলে প্রকাশের ব্যবস্থা করেছিলাম। এই বিজ্ঞাপন সাইকেলটির পরিচিতি আনতে সহায়তা করেছে।

জিম টার্নারের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের ডেনভারে। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি প্রকৌশলবিদ্যায় স্নাতকোত্তর।। শুরুতে ‘ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার’ হিসেব পেশা শুরু করেছিলেন ফোর্ড মোটর কোম্পানিতে। দু বছর চাকরি করার পর যোগ দেন ডাইনেক্স ইন্টারন্যাশনালে। সেই প্রতিষ্ঠানে ছয় বছর চাকরি করার পর তিনি সিদ্ধান্ত নেন নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান দাঁড় করাবেন। তাঁর সেই স্বপ্নের প্রতিষ্ঠানের নাম অপটিবাইক আইএলসি।

ইনফিউশনসফট ও লিঙ্কডইন অবলম্বনে।favicon

Sharing is caring!

Leave a Comment