ইবির আইন বিভাগে প্রতীকী আদালত
শাহজাহান নবীন, কুষ্টিয়া : ছিমছাম পরিবেশ। ভেতরের পরিবেশ দেখে বোঝার উপায় নেই এটি কোনো আদালত। তবে আইনজ্ঞদের বেশভুশা আর কাঠগড়া দেখে বোঝা গেল এটা নিশ্চয় কোনো আদালত। দেশের অন্যান্য আদালত গুলোর মতো হইহুল্লোড় বা ঢিলেঢালা ভাব দেখা মেলেনি। বিভাগের এক শিক্ষার্থী চাপরাশির সাঁজে গলা ছেড়ে জানালেন কোর্ট বসছেন। বিজ্ঞ বিচারক তার আসনে বসলেন। পেশকার একে একে মামলার শিরোনাম বলা শুরু করলেন। শুরু হল পর্যায়ক্রমে মামলার শুনানী। ঠিক পূর্ব দিকে আসামী কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে। বাদী ও বিবাদী পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে তুমুল যুক্তিতর্ক-পাল্টা যুক্তি চলছে। ঠিক যেন আদালতের পরিবেশ। এমনই আয়োজনে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইন বিভাগে অনুষ্ঠিত হয়েছে মুটকোর্ট ও মক ট্রায়ালের প্রথম পর্ব। এলএলবি কোর্সের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুট কোর্ট রুমে এ কোর্ট বসে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের অর্থায়নে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দেশের প্রচলিত আদালতের আদলে একটি মুটিং আদালত তৈরি করা হয়েছে। দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এই প্রথম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে মুট কোর্ট স্থাপন হল। বিশ্ববিদ্যালয়ে মুট কোর্ট স্থাপনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জহুরুল ইসলাম অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। মুট কোর্টে শুক্রবার ফৌজদারী বিষয়ক তিনটি প্রতীকী মামলার নিষ্পত্তি হয়। আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রতীকী এ মামলায় বাদী, বিবাদী, সাক্ষী, আইনজীবী, চাপরাশি, পেশকারসহ অন্যান্য ভূমিকায় অভিনয় করেন। এতে বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক ও মুট কোর্ট ক্লাসের সমন্বয়কারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জহুরুল ইসলাম ও ঝিনাইদহ জেলার বিজ্ঞ আইনজীবী এ্যাডভোকেট আবু তালেব। আগামী সোমবার দেওয়ানী বিষয়ক মামলার নিষ্পত্তি হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হাকিম সরকার মুট কোর্টের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন বলে জানা গেছে।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এই প্রথম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পূর্ণ কোর্টের আদলে একটি মুট কোর্ট স্থাপিত হয়েছে। এটা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক পাওয়া। শিক্ষার্থীরা যেন এখান থেকে দক্ষ হয়ে বের হতে পারে সেজন্য জোর প্রচেষ্টা থাকবে।’ মুট কোর্টের কার্যক্রমের সাথে জড়িত সকলের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।