বৈদেশিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি বেড়েছে ২২৭ গুণ
- নিউজ ডেস্ক
জুলাই-আগস্টের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে বৈদেশিক প্রতিশ্রুতি বেড়েছে সেপ্টেম্বরেও। এ কারণে চলতি অর্থবছরের (২০১৬-১৭) প্রথম তিন মাসে মোট প্রতিশ্রুতির পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি। তবে প্রতিশ্রুতির তুলনায় এই সময়ে অর্থছাড় কম হয়েছে। সেই সঙ্গে কমে গেছে উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণ পরিশোধের পরিমাণও। জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসের এ চিত্র উঠে এসেছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের হালনাগাদ (ইআরডি) তথ্যে। এই তিন মাসে দাতাদের কাছ থেকে প্রায় ১ হাজার ২০৩ কোটি ২ লাখ মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতি এসেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে প্রতিশ্রুতির পরিমাণ ছিল মাত্র ৫ কোটি ২৮ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে চলতি অর্থবছরে বৈদেশিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি বেড়েছে ২২৭ গুণ।
ইআরডি কর্মকর্তারা বলছেন, জঙ্গী হামলার আতঙ্কের মধ্যে অর্থবছরের শুরুতেই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনে রাশিয়ার সঙ্গে প্রায় এক হাজার ১৩৮ কোটি মার্কিন ডলারের চুক্তি হয়। এত বড় প্রকল্পে প্রতিশ্রুতি আদায় সার্বিক প্রতিশ্রুতির পরিমাণ বাড়ার ক্ষেত্রে নিয়ামক ভূমিকা রেখেছে। ইআরডি সূত্র জানায়, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রতিশ্রুতি এসেছে রাশিয়া থেকে। কিন্তু এটিকে ব্যতিক্রম বলা হচ্ছে। কেননা প্রতিবছর এত বড় পরিমাণের প্রতিশ্রুতি আসবে না। সূত্র জানায়, আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে চলতি অর্থবছরের জুলাইতেই উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে প্রায় এক হাজার ১৬৮ কোটি মার্কিন ডলারের সহায়তা প্রতিশ্রুতি আদায় করে বাংলাদেশ। অবশিষ্ট প্রতিশ্রুতির মধ্যে ৪ কোটি ৬২ লাখ ডলার পাওয়া গেছে আগস্টে এবং গত সেপ্টেম্বরে পাওয়া গেছে প্রায় ৩১ কোটি ডলার। তিন মাসের মোট প্রতিশ্রুতির মধ্যে ঋণ প্রায় ১ হাজার ২০০ কোাটি ৪১ লাখ ডলার এবং অনুদান প্রায় ২ কোটি ৭৯ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে পাওয়া প্রতিশ্রুতির মধ্যে কোন ঋণ ছিল না, ৫ কোটি ২৮ লাখ ৩০ হাজার ডলারের পুরোটাই ছিল অনুদান।
সূত্রমতে, তিন মাসে বৈদেশিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি বাড়লেও অর্থছাড় কিছুটা কম হয়েছে। এ সময়ে দাতারা ৫০ কোটি মার্কিন ডলার পরিমাণ অর্থছাড় করেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে অর্থছাড়ের এ পরিমাণ ছিল ৫০ কোটি ২২ লাখ মার্কিন ডলার। চলতি বছর ছাড় করা অর্থের মধ্যে ঋণ হচ্ছে ৪২ কোটি ৭৬ লাখ ডলার আর অনুদান ৭ কোটি ২৪ লাখ মার্কিন ডলার। ছাড় করা অর্থে গত বছর ঋণের পরিমাণ ছিল ৪০ কোটি ৭৯ লাখ ডলার এবং অনুদান ছিল ৯ কোটি ৪৩ লাখ মার্কিন ডলার।
অন্যদিকে গত তিন মাসে উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণ পরিশোধের পরিমাণও কমেছে। জুলাই-সেপ্টেম্বরে সরকার বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করেছে মোট ২৩ কোটি ২১ লাখ মার্কিন ডলার। এর মধ্যে আসলের পরিমাণ ছিল ১৭ কোটি ২৮ লাখ ডলার এবং সুদের পরিমাণ ৫ কোটি ৯৩ লাখ মার্কিন ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে পরিশোধ করা ঋণের পরিমাণ ছিল মোট ২৩ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার। এর মধ্যে আসল ১৮ কোটি ১৯ লাখ ডলার এবং সুদের পরিমাণ ছিল ৫ কোটি ৫৮ লাখ মার্কিন ডলার।