স্লিম থাকা খুব সহজ !
মোস্তাফিজুর রহমান : স্মার্ট আকর্ষণীয়, সুন্দর থাকতে কে না চাই। আপনিও ক্রমাগত চেষ্টা করছেন স্লিম থাকতে, মুটিয়ে যাওয়া রোধ করতে। কিন্তু আশানুরুপ ফল পাচ্ছেন না। শরীর ক্রমে মোটা হয়েই যাচ্ছে। আসলে কি স্লিম থাকা খুব কঠিন ? না, প্রত্যাহিক জীবনাচরনে একটু পরিবর্তন আনলেই, একটু নিয়ম মানে চললেই স্লিম থাকা যায়। আজ জেনে নিন স্লিম থাকার কিছু চমৎকার টিপস।
পানি পান: স্লিম এবং সুস্থ থাকার জন প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পানের বিকল্প নেই। পর্যাপ্ত পানি যেমন শরীর সুস্থ রাখে তেমনি শরীরের গঠনও নিয়ন্ত্রন করে। তাই কার্বনেটেড কোমল পানীয় ছেড়ে প্রতিদিন পর্যাপ্ত খনিজ পানি পান করা জরুরী। পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি শরীরে প্রায় ৫০ শতাংশ ক্যালরির অভাব পুরণ করে। প্রতিবার খাওয়ার আগে দুই গ্লাস পানি পান করলে পাকস্থলী সুস্থ থাকে, দ্রুত ভরাট বোধ হয়। কাজেই খাওয়াও কম হয়, যা ডাইটিং এর কাজ করে। এছাড়া, শরীরের সব অঙ্গপ্রতঙ্গ সচল থাকে।
বেশি ঘুম: ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষক বলেন, স্লিম হওয়ার জন্য বেশি কিছু করার প্রয়োজন নেই। শুধু রাতের ঘুম একটু বাড়িয়ে দিলেই স্লিম হওয়া সম্ভব। মার্কিন স্নায়ুবিদ নাথানিয়েল ওয়াটসনের নেতৃত্বাধিন একদল গবেষক ১০৮৮ জোড়া যমজ শিশুর ওজন ও ঘুমের অভ্যাস পর্যকেক্ষণ করে এই সিদ্ধান্তে পৌছান। তিনি লক্ষ করেন, রাতের বেলা নয় ঘন্টার বেশি ঘুমানো শিশুরা স্বাস্থবান হালকা পাতলা গড়নের। অপর দিকে সাত ঘন্টার কম ঘুমানো শিশুরা স্থুল তো বটেই, উপরন্তু শরীরের ওজনের উপর তাদেও কোন নিয়ন্ত্রন থাকে না। এই গবেষক ইউএসএ টুডেকে এক সাক্ষাতকারে বলেন, “আপনি যত কম ঘুমাবেন, আপনার ওজনের উপর জিনের প্রভাব ততটা বাড়বে। আর যত বেশি ঘুমাবেন, আপনার ওজনের উপর জিনের প্রভাব তত কমবে।” ওয়াটসন আর উল্যেখ করনে, অল্প সময় ঘুম স্থুলতার সঙ্গে সম্পির্কিত জিনদের সক্রিয় কওর তোলে। আসলে বেশি ঘুম স্থুলতার সাথে সম্পর্কিত জিনদের নিয়ন্ত্রন করে।
ফল এবং ফলের রস: নিয়ম করে ফল খেলে স্থুলতা কমে। যারা প্রচুর সবুজ ফল খায়, তারা অনেক বেশি স্লিম এবং স্মার্ট থাকেন। এছাড়া ফলের রসও বিশেষ উপকারী। কারন মিষ্টি করতে এর সাথে অতিরিক্ত চিনি মেশানোর দরকার হয় না, যা স্লিম থাকার পক্ষে খুবই কার্যকর। এছাড়া শবসির রসও পুষ্টিকর। এতে ফলের রসের অর্ধেক পরিমান ক্যালরি থাকে।
সবজির মধ্যে টমেটো সব চেয়ে উপকারী। টমেটো ভিটামিন-সি তে পরিপূর্ণ। টমেটো এবং এর জুস খেলে কয়েক সপ্তার মধ্যে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে। সম্প্রতি ডেইলি মেইল এক গবেষণার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, টমেটো খেলে বাড়তি ওজন লাঘব হয়। টমেটোতে এমন কিছু যৌগ থাকে, যা খিদে বাড়াতে হরমোনের মাত্রা পরিবর্তন করে। ফলে বাড়তি ক্ষুধা কমে, যা স্বাস্থ ঠিক রাখতে জরুরী।
অস্বাস্থকর খাবার ত্যাগ: কার্বনেটেড কোমল পানীয় স্বাস্থের জন্য খুবই ক্ষতিকর এবং মুটিয়ে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ। কাজেই কোমল পানীয়, চিপস, সিগারেট, সকল প্রকার মদ ত্যাগ করতে হবে। স্লিম থাকতে অস্বাস্থকর অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার ত্যাগ করতে হবে।
টেনশান কমান: মুটিয়ে যাওয়ার জন্য অতিরিক্ত টেনশান একটা বড় কারণ। যদিও কারো কারো ক্ষেত্রে টেনশান করলে এর বিপরীত ঘটনাও ঘটে। কাজেই স্লিম থাকতে হলে অতিরিক্ত টেনশান কমাতে হবে।
প্রত্যাহিক শৃঙ্খলা: আপনার ওজন নিয়ন্ত্রনে সব চেয়ে বড় হাতিয়ার হল শৃঙ্খলা। একই সময়ে ঘুম থেকে ওঠা, সকালের নাস্তা সময়মত করা, একই সময়ে দুপুর এবং রাতের খাবার খাওয়া, অনিয়মিত, অপরিকল্পিত খাওয়া ত্যাগ করা ওজন নিয়ন্ত্রন তথা স্লিম থাকার জন্য খুবই জরুরী।
প্রত্যাহিক খাদ্যভ্যাস, জীবনাচরন সুসংহত করুন; স্লিম, সুস্থ এবং সুন্দর থাকুন।