জ্বরের চিকিৎসায় জরুরি পরামর্শ

জ্বরের চিকিৎসায় জরুরি পরামর্শ

শিমি আক্তার : জ্বর হলে বুঝতে হবে আপনার শরীরের কোনো অংশের স্বাভাবিক কার্যক্রম নিশ্চই ব্যহত হচ্ছে। যদিও সাধারণ জ্বর কোনো মারাত্মক সমস্যা নয় কিন্তু এর ফলে জ্বরাক্রান্ত ব্যক্তিকে চরম অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়। ডাক্তারদের মতে জ্বর হলে শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে আনার জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা করতে হবে। জ্বরের অনেক ধরণের চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে যা প্রয়োগের মাধ্যমে নিজেকে যথাসম্ভ আরামদায়ক অবস্থায় রাখা সম্ভব। অসুস্ততা বা ইনফেকশনের কারণে জ্বর হলে ১০টি কৌশল অবলম্বন করতে পারেন:


১.   পর্যাপ্ত পানি পান : অনেক সময় জ্বরের কারণে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। জ্বরের কারণে মাঝে মাঝে শরীর থেকে অতিরিক্ত ঘাম বের হয় এবং শরীর শীতল হয়ে যায়। তাই এমন হলে আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি বা তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে।

২.   হালকা গরম পানিতে গোসল : জ্বর হলে অধিক গরম বা অধিক ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গোসল করা উচিত নয়। কুসুম গরম পানিতে গোসল করুন এতে জ্বর কমবে এবং একই সাথে আপনি আরও সাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন।

৩.  অতিরিক্ত ঠান্ডা না লাগানো : অনেকেই মনে করেন জ্বর হলে ঠাণ্ডা লাগালে শরীরের তাপমাত্রা কমে জ্বর পড়ে যায় কিন্তু এটা ঠিক নয়। শরীরের তাপমাত্রা অধিক হলে কাপড় ভিজিয়ে ভালোভাবে নিংড়ে নিয়ে শরীর মুছে ফেলুন। খেয়াল রাখবেন যেন শরীরে পানি জমে না থাকে ও ঠাণ্ডা না লেগে যায়।

৪.   পুষ্টিকর তরল পানীয় পান : জ্বর হলে সাধারণত ক্ষুধা মন্দা দেখা যায়। এসময় আপনার শরীরে অতিরিক্ত শক্তির দরকার হয়। তাই চেষ্টা করুন এই সময়ে পুষ্টিকর তরল জাতীয় খাবার খেতে যেমন-বিভিন্ন ধরণের ফলের রস, মাছ, মাংস বা তরকারীর স্যূপ, এবং রসালো সবজি ইত্যাদি। এগুলো আপনার শরীরে বাড়তি শক্তি যোগাতে সহায়তা করবে।

৫.   পর্যাপ্ত বিশ্রাম : জ্বরাক্রান্ত শরীরে প্রচুর বিশ্রামের দরকার। সম্ভব হলে সাধারণ জ্বরের জন্য জ্বর কমানের ওষুধ এড়িযে চলা ও দৌনন্দিন কাজকর্ম চালিয়ে যেতে পারলে ভালো।

৬.  আরামের জন্য সংগ্রাম : অনেকেই মনে করেন ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে জ্বর কমানোর জন্য জোর প্রচেষ্টা চালানো শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রমে হস্তক্ষেপের সামিল। আপনি জ্বরকে তীব্র হতে দিতে না চাইলে, ভিন্নভাবে চেষ্টা করুন নিজেকে আরামদায়ক অবস্থায় রাখতে।

৭.   হালকা ও আরামদায়ক কাপড় পরুন : জ্বরের সময় আপনি আরামদায়ক কাপড় পরিধান করুন, এক্ষেত্রে সুতির কাপড় হলে ভালো। তবে এমন কাপড় পরবেন না যাতে শরীরে বেশি ঘষা বা আঘাত লাগে। ভালো কাপড় ও কম্বল পছন্দ করুন যাতে যথাসম্ভব আরামে থাকতে পারেন। আপনার অতিরিক্ত গরম বা শ্বাসরুদ্ধকর কাপড় পরার দরকার নেই যাতে আপনার অস্বস্তি অনুভুত হয়।

৮.  আলো কমিয়ে দিন : অতিরক্ত বা তীব্র আলোতে জ্বরাক্রান্ত ব্যক্তি অস্বস্তি বোধ করতে পারে। তীব্র আলো চোখের যন্ত্রণা ও মাথার যন্ত্রণা বাড়াতে পারে। তাই দরজা বা জানালার পর্দা নামিয়ে দিন, টিভি ও বৈদ্যুতিক বাতি বন্ধ করে রাখুন।

৯.  পানিশূন্যতার লক্ষণ দেখা দিলে: এসময় প্রচুর পিপাসা লাগবে, অনিয়মিত প্রসাব ও চোখ শুস্ক মনে হতে পারে। এমন অবস্থা দেখা দিলে জরুরী ভিত্তিতে একজন বিশেষজ্ঞ চকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী পরবর্তী চিকিৎসা নিতে হবে।

১০. ডাক্তারের তত্বাবধানে থাকা : যখন জ্বর হয় জ্বরের কিছু নমূনা দেখা যায়, গুরুতর কোনো নমূনা দেখা দিলে সাথে সাথেই ডাক্তারের নিকট যেতে হবে। এমন পরিস্থিতে ডাক্তারের নিকট সবকিছুই অবহিত করতে হবে। তখন ডাক্তার প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
মনে রাখতে হবে যে, শরীরের বিভিন্ন অংশের স্বাভাবিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ হওয়ার ফলে শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বেড়ে যায় ফলে জ্বর হতে পারে। শরীরের মারাত্মক কোনো সমস্যা দেখা দিলে জরুরী ভিত্তিতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

ইনলাইটেনমি ডটকম অবলম্বনেfavicon59

Sharing is caring!

Leave a Comment