কালিজিরার কল্যাণ
ফিচার ডেস্ক: কালিজিরা এক মহাঔষধ। সাধারনত মসলা হিসাবে ব্যবহৃত হলেও কালিজিরা আর দশটা সাধারণ মসলার মত নয়। এতে রয়েছে বিশেষ কিছু গুণ, যার ফলে একে মসলা না বলে বরং মহাঔষধ বলাই শ্রেয়। চলুন জেনে নি কালিজিরার আরও কিছু চমকপ্রদ্য গুণাগুণ।
০১. কালিজিরা ক্ষুধা মন্দা কমিয়ে খাওয়ায় রুচি আনে অর্থাৎ ক্ষুধা বাড়ায়। যারা ক্ষুধা মন্দায় ভুগছেন, কালিজিরা তাদের জন্য খুবই উপকারী। এক-দুই চা চামচ কালিজিরা বেটে পানির সাথে প্রতিদিন তিনবার খেতে থাকুন। অল্প দিনেই ক্ষুধা মন্দা চলে যাবে।
০২. কাশি, জ্বর, শরীরের হালকা ব্যাথা কমাতে মহাঔষধ কালিজিরা। এক চা-চামচ কালিজিরার সাথে দুই চা চামচ মধু মিশিয়ে খেলে সর্দি, কাশি চলে যায়।
০৩. তারুণ্য ধরে রাখতে কালিজিরার জুড়ি নেই। মধু আর কালিজিরা এ ক্ষেত্রে মহাপথ্য। অবশ্য মধ্যপ্রাচ্যবাসিরা তারুণ্য ধরে রাখতে দীর্ঘ্যদিন কালিজিরা খেয়ে থাকে।
০৪. যারা কায়িক পরিশ্রম করেন কালিজিরা তাদের কাজের শক্তিকে বাড়িয়ে দেয় বহুগুন। শরীরের কোষগুলোকে সতেজ রাখে আর ক্লান্তিও দূর করে।
০৫. গ্যাসটিক জনিত সমস্যায় কালিজিরার জুড়ি নেই। কালিজিরা অন্তের জীবণু দুর করে পেটের গ্যাস ধ্বংস করে।
০৬. বার্ধক্য এবং কিডনি জনিত রোগের কারণে বয়ষ্কদের পা ফুলে যায়। কালিজিরা এই পা ফোলা রোধ করে।
০৭. কালিজিরা বুকের দুধ বর্ধক। কাচা কালিজিরা মিহি করে পিষে গরুর দুধের সাথে প্রতিরাতে খেলে মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি পায়। এভাবে ১০-১৫ দিন খেলেই দুধের প্রবাহ বেড়ে যায়।
০৮. কালিজিরা অতিশক্তিশালী অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এজেন্ট, যা সহজে দেহের রোগ-জীবানু ধ্বংস করে দিতে পারে। ফলে শরীর থাকে রোগমুক্ত। এ ছাড়া এই অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এজেন্টের কারণে ঘাঁ, ফোড়া, ক্ষত খুব দ্রুত শুকায়।
০৯. সবজির সাথে কালিজিরা খেলে শিশুদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, দ্রুত মেধার বিকাশ ঘটে।
১০. কালিজিরা এক ধরনের অ্যান্টিসেপটিক। দাঁতে ব্যাথা হলে হালকা গরম পানিতে কালিজিরা দিয়ে কুলকুচি করলে ব্যাথা কমে। সাথে সাথে জিহ্বা ও মাড়ির খাজে লুকিয়ে থাকা খাদ্যের জীবাণু মরে যায়। ফলে মুখ থাকে দূগন্ধমুক্ত।
১১. কালিজিরার তেল উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করে, শ্বাসকষ্ট বা হাপানি দূর করে।
১২. চুল পড়া সমস্যায় কালিজিরা তেল খাওয়া ও ব্যবহার করা খুব উপকারী। তাহলে চুল পর্যাপ্ত পুষ্টি পাবে, ফলে চুল পড়া বন্ধ হবে।
কালিজিরার সমস্থ গুণাগুণ ঠিকঠাক বজায় থাকে এর তেলে। তাই কালিজিরা তেল ব্যবহার করলে ও খেলে কালিজিরার চেয়ে বেশি কাজ দেয়। কেননা তেল গ্রহন করলে আস্ত দানার চেয়ে শরীরে বেশি পরিমানে ক্রিয়া করে।
কালিজিরা তেলে ১০০ টির বেশি উপকারী উপাদান রয়েছে। যার মধ্যে আছে আমিষ, শর্করা, ভেষজ তেল, চর্বি, নাইজেলোন, থাউমোকিনোন, লিনোলিক এসিড, অলিক এসিড, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রন, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম, সেলোনিয়াম, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি ইত্যাদি।
তবে সাবধান। কালিজিরা আবার সবাই হজম করতে পারে না। তাই প্রথম কিছুদিন সাবধানে সামান্য পরিমান করে খাবেন। তারপর শরীরের সাথে মানানসই হলে আর সমস্যা হবে না। যারা হজম করতে পারবেন না, তাদের খাওয়ার দরকার নেই। এবং কোন ক্রমেই গর্ভাবস্থায় কালিজিরার তেল গ্রহন করবেন না।