পেয়ারার গুণের কথা
রবিউল কমল: ফল হিসেবে পেয়ারার জুড়ি নেই। এটি মূলত শীতকালীন ফল হলেও এখন বাজারে প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায়। তুলনামূলকভাবে কম দামেই মেলে এ ফল। তাই সবার কা্ছেই রয়েছে এর কদর। শুধু স্বাদে আর ঘ্রাণেই নয়, গুণেও পেয়ারা অতুলনীয়! আসুন জেনে নিই পেয়ারার কিছু গুণের কথা।
১.ডায়াবেটিস প্রতিরোধে: অনেক আগেই চীনে চিকিৎসাবিজ্ঞানে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে পেয়ারার গুণের কথা বলা হয়েছে। চীনের এক গবেষনায় দেখা গেছে, ১ কেজি পেয়ারার জুস ডায়াবেটিস রোগীদের সুগারের মাত্রা অনেকখানি কমিয়ে দেয়। পেয়ারায় উচ্চ মাত্রায় তন্তু ও নিম্ন গ্লাইসেমিক জাতীয় উপাদান থাকায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারি।
২.রাতকানা রোগ থেকে বাঁচাতে: এটি অনেক পুষ্টিসমৃদ্ধ ফল। যদিও পেয়ারাতে গাজরের তুলনায় কম ভিটামিন ‘এ’ রয়েছে। এরপরও এটি ভিটামিনের ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে। এর ফলে রাতকানা রোগ থেকে দূরে রাখে।
৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে: এটি একটি ভিটামিন ‘সি’সমৃদ্ধ ফল। একটি কমলা লেবুর চেয়ে চার গুণ বেশি ভিটামিন ‘সি’রয়েছে পেয়ারায়। দিনে দুইবার একটি করে মাঝারি আকারের পেয়ারা খেলে প্রতিদিনের ভিটামিন ‘সি’ ও ভিটামিন ‘এ’ এর চাহিদা পূরণ হয় যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় এবং সাধারণ সংক্রমণজনিত রোগ ও প্যাথোজেন প্রতিরোধে সাহায্য করে।
৪.গর্ভবতী নারীর স্বস্থ্যে : পেয়ারাতে ফলিক এসিড, ভিটামিন-বি৯ উপাদান রয়েছে। এই উপাদানগুলো শিশুর স্নায়ুবিক সমস্যা প্রতিরোধে এবং সুস্থভাবে বাড়ার জন্য খুবই উপকারী। তাই গর্ভকালীন সময়ে পেয়ারা খাওয়া খুবই উপকারি।
৫. হৃদরোগ ও উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে : স্বাস্থ্যবিষয়ক এক জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে যে, পেয়ারা শরীরের সোডিয়াম ও পটাসিয়ামের ভারসাম্য বাড়ায়। পেয়ারা উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখতে সাহায্য করে। হৃদরোগ প্রতিরোধে ও কোলেস্টরল বৃদ্ধিতে সাহা্য্য করে।
৬. ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে: টিউমার ও ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে পেয়ারা। পেয়ারায় ভিটামিন ‘সি’ সহ লাইকোপেন, কুয়াসিন এবং বিভিন্ন পলিফেনলস উপাদান রয়েছে। এই উপাদানগুলো এন্টি অক্সিডেন্টস হিসেবে কাজ করে, যা ব্রেস্ট, প্রস্টেড, কোলন, স্কিন ও ফুসফুস প্রভৃতির ক্যান্সারসহ টিউমার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
৭. মস্তিষ্কের জন্য উপকারি : ব্রেইন আমাদের শরীরের প্রধান অঙ্গ। তাই এটি ভালো রাখা জরুরি। পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি৩, ভিটামিন বি৬ রয়েছে, যা আমাদের মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
৮. ক্লান্তি দূর করতে: পেয়ারায় ম্যাগনেসিয়াম উপাদান থাকায় শারীরিক ও মানসিকভাবে আরামবোধ করতে সাহায্য করে। পেয়ারা খেলে প্রতিদিনের ক্লান্তি অনেকাংশে দূর হয়।
৯. বয়স ধরে রাখতে: পেয়ারায় ক্ষতিকর উপাদান না থাকায় এটি ত্বকের জন্য খুবই উপকারি। এতে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, লাইকোপেন, কেরোটিনের মতো এন্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান থাকায় ত্বকে বয়সের ছাপ বোঝা যায় না। চিরসবুজ থাকতে সবুজ এই ফলের গুণ অবর্ণনীয়।