কোমল পানীয়কে ‘না’ বলার ১০ কারণ

কোমল পানীয়কে ‘না’ বলার ১০ কারণ

  • লাইফস্টাইল ডেস্ক

সোডা অর্থাৎ কোমল পানীয় তো পান করে চলেছেন, কিন্তু একবারও কি স্বাস্থ্যের কথা ভেবেছেন? আপনাকে সুস্থ রাখার উদ্দেশ্যে জানানো যাচ্ছে যে, কোমল পানীয়কে সতেজকারক মনে হলেও এটি স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। এটা কোনো মনগড়া সতর্কবার্তা নয়, বিভিন্ন গবেষণা আপনাকে কোমল পানীয় পানে অনুৎসাহিত করছে। এখানে কোমল পানীয় এড়িয়ে যাওয়ার ১০ কারণ আলোচনা করা হলো।


১. আপনি নিজেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি থেকে বঞ্চিত করছেন

যেসব লোক লো-ফ্যাট মিল্ক ও খাঁটি ফলের শরবতের মতো স্বাস্থ্যকর তরলের পরিবর্তে কোমল পানীয় পান করে তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম পাওয়ার সম্ভাবনা কম। এছাড়া কোমল পানীয়তে ফসফরিক অ্যাসিড থাকে, যা ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের মাত্রা কমায়- এ দুটি পুষ্টি অনাক্রম্যতন্ত্রকে সর্বোচ্চ কার্যকরভাবে পরিচালিত করতে সাহায্য করে।

২. আপনার ডায়াবেটিস বিকশিত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে

কোমল পানীয়তে বিদ্যমান উচ্চ ফ্রুকটোজ কর্ন সিরাপ উচ্চ মাত্রায় ফ্রি র‍্যাডিকেল উৎপাদনের কারণ হতে পারে- যার সঙ্গে টিস্যু ড্যামেজ, ডায়াবেটিসের বিকাশ এবং ডায়াবেটিক জটিলতার যোগসূত্র পাওয়া গেছে।

৩. প্লাস্টিক বোতলের কেমিক্যাল মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি করছে

কোমল পানীয়র প্লাস্টিক বোতলে বিসফেনল এ (বিপিএ) নামক একটি বিষাক্ত কেমিক্যাল থাকে, যা বোতল থেকে পৃথক হয়ে কোমল পানীয়তে মিশে যেতে পারে। বিপিএ’র সঙ্গে বিভিন্ন ম্যালাডি বা মারাত্মক সমস্যার যোগসূত্র পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ইমিউন সিস্টেম ডিপ্রেশন অন্তর্ভুক্ত। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বিপিএ আছে এমন প্রোডাক্টের সংস্পর্শে আসা থেকে শিশুদেরকে রক্ষা করতে পরামর্শ দিচ্ছেন, বিশেষ করে যেসব প্রোডাক্ট প্রতিদিন ব্যবহার করা হয়, যেমন- পানির বোতল।

৪. আপনার ওজন বৃদ্ধি পাচ্ছে

ডায়েট সোডা বা ডায়েট কোমল পানীয় আসলেই ওজন বৃদ্ধিতে অবদান রাখে। ১,৫৫০ জনের ওপর পরিচালিত একটি গবেষণায় যেসব লোক প্রতিদিন এক বোতল ডায়েট কোমল পানীয় পান করেছিল তাদের অতি ওজন বা স্থূলতার বর্ধিত ঝুঁকি ছিল ৪১ শতাংশ। গবেষণায় পাওয়া গেছে যে যেকোনো মিষ্টি স্বাদ শরীরে ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেট জমা করতে সংকেত পাঠায়, যা আপনাকে ক্ষুধার্ত করতে পারে। মিষ্টি স্বাদ ইনসুলিন নিঃসরণ বৃদ্ধি করে, যা আপনার শরীরের ফ্যাট পোড়ানোর ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করে। কোনো গবেষণায় পাওয়া যায়নি যে ডায়েট কোমল পানীয় ওজন হ্রাসে সাহায্য করে।

৫. খুব বেশি চিনি থাকে

এক ক্যান কোমল পানীয়তে ১০ চা-চামচ চিনি থাকে। এটি অবিশ্বাস্য হলেও সত্য। যখন আপনি তরল আকারে এ পরিমাণ চিনি আপনার শরীরকে খাওয়ান, এটি আপনার রক্ত শর্করাকে আকাশচুম্বী করে এবং শরীরে ইনসুলিন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। নিয়মিত কোমল পানীয় পান ওজন বৃদ্ধি, ডায়াবেটিস, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার দিকে ধাবিত করে।

৬. ফসফরিক অ্যাসিড থাকে

ফসফরিক অ্যাসিড শরীরের প্রাকৃতিকভাবে ক্যালসিয়াম শোষণের ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করে। পর্যাপ্ত ক্যালসিয়ামের অভাবে হাড় নরম হয়ে যাওয়া, অস্টিওপোরোসিস এবং ডেন্টাল ক্যাভিটি হতে পারে। এটি পাকস্থলির অ্যাসিডে হস্তক্ষেপ করতে পারে, পুষ্টি শোষণ ব্যাহত করতে পারে এবং হজম ধীর করতে পারে।

৭. আপনি পানিশূন্য হতে পারেন

কোমল পানীয় পান হতে পারে পানিশূন্যতার কারণ, কারণ এতে উচ্চমাত্রায় চিনি-সোডিয়াম-ক্যাফেইন থাকে। অনেকে খাবার খাওয়ার সময় পানির পরিবর্তে কোমল পানীয় পান করেন এবং দৈনিক সুপারিশকৃত প্রয়োজনীয় পানি পান করেন না, যার ফলে তারা পানিশূন্য হয়ে পড়ে।

৮. কৃত্রিম সুইটেনার থাকে

ডায়েট কোমল পানীয়তে চিনির পরিবর্তে অ্যাসপারটামি থাকে এবং এটি আপনার শরীরের জন্য আরো বেশি ক্ষতিকর। গবেষণা প্রতিবেদনে জানা যায় যে অ্যাসপারটামির সঙ্গে খিঁচুনি, মস্তিষ্কের টিউমার, ডায়াবেটিস, ইমোশনাল ডিসঅর্ডার এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার যোগসূত্র থাকতে পারে।

৯. পুষ্টিমান শূন্য

কোমল পানীয় এড়িয়ে যাওয়ার আরেকটি কারণ হলো- এতে পুষ্টিমান নেই বললেই চলে। কোমল পানীয় পানের কোনো ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া নেই, কেবলমাত্র এটি সুস্বাদু হতে পারে।

১০. আপনার দাঁতের ক্ষতি হচ্ছে

নিয়মিত কোমল পানীয় পানে দাঁতে প্লেক বা হলুদ আবরণ জমে, যা ক্যাভিটি ও মাড়ি রোগের কারণ হতে পারে। এছাড়া মুখের প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়া কোমল পানীয়র চিনি খেয়ে অ্যাসিড তৈরি করে। এ অ্যাসিড দাঁতের ক্ষয় বা ক্যাভিটি সৃষ্টি করে।

তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট

ঋণ: রাইজিং বিডি

Sharing is caring!

Leave a Comment