প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস : লক্ষণ ও প্রতিরোধ
হেলথ অ্যান্ড লাইফস্টাইল ডেস্ক
চীন দেশের উহান রাজ্য থেকে প্রাণঘাতী এক নতুন ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে এবং চীন থেকে এখন এ ভাইরাস বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। এ ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে ছড়াতে পারে। তাই এই ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো মানুষ দেশে থাকলে তার থেকে অনায়াসেই অন্যান্যদের মাঝে ছড়াতে পারে।
এ রোগের লক্ষণ কী?
এ রোগের লক্ষণ সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগের মতো। সাধারণ লক্ষণগুলো হল: জ্বর, কাশি, কফ, শ্বাসকষ্ট। যেহেতু এ লক্ষণগুলো একদম সাধারণ জ্বর-কাশির মত, তাই এ সময় এসব সাধারণ লক্ষণগুলোকেও উপেক্ষা না করে ডাক্তারের কাছে যাওয়া শ্রেয়। বেশি পরিমাণ আক্রান্ত হলে এর দ্বারা নিউমোনিয়াও হতে পারে।
কতটা ভয়ংকর হতে পারে?
আক্রান্ত রোগীর যে কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যেতে পারে, নিউমোনিয়া হতে পারে এবং এসব থেকে মৃত্যুও ঘটতে পারে। চীনে এ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়ে ইতিমধ্যেই মানুষ মারা গিয়েছে।
এ রোগের চিকিৎসা কী?
এ ভাইরাসটি একদম নতুন। তাই এখনো এর কোনো সুস্পষ্ট চিকিৎসা পদ্ধতি পাওয়া যায়নি।
কীভাবে প্রতিরোধ করা যাবে?
ভালোভাবে হাত ধোয়া: প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে যে বিষয়টি বেশি উঠে এসেছে তা হল: ‘ভালোভাবে হাত ধোয়া’। টয়লেট ব্যবহার করার পর, খাবার আগে এবং বাহির থেকে আসার পর অবশ্যই ভালো করে হাত ধুতে হবে। শুধু হাতের তালু নয়, হাতের নখ, আঙুল ভালোভাবে সাবান দিয়ে ধুতে হবে। ধোয়ার পর হাত ভালোভাবে ঝাড়তে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে যেন সব সাবান ধুয়ে গিয়েছে। হাত ধোয়ার পর হাত শুকাতে হবে। টয়লেট থেকে আসার পর ভেজা হাতে থাকা যাবে না। গণ শৌচাগার ব্যবহার করার সময় দরজা বা অন্যান্য জিনিস কাপড় বা টিস্যু দিয়ে ধরতে হবে।
সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত রোগীর সরাসরি সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা: সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত রোগীকে মুখোশ পরতে দেওয়া এবং তাদের সাথে সরাসরি সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা। যিনি তার সেবা করবেন সতর্কতা হিসেবে তাকেও মুখোশ, গ্লাভস ব্যবহার করতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত, থুথু, কফ বা অন্যান্য কিছুর সংস্পর্শে আসলে সেই গ্লাভস বা কাপড় বাদ দিয়ে নতুন কাপড় বা গ্লাভস ব্যবহার করতে হবে।
মুখোশ বা মাস্ক ব্যবহার করা: হাত দিয়ে নাক মুখ স্পর্শ না করা ও মুখোশ ব্যবহার করা।
খালি হাতে কোনো প্রাণি না ধরা: খামারের, বন্য কিংবা যে কোনো প্রাণিকে খালি হাতে না ধরা।
হাঁচি কাশি দেবার সময় সতর্ক হওয়া: যেহেতু একজন থেকে আরেকজনের কাছে এ রোগ ছড়াতে পারে, তাই হাঁচি-কাশি দেবার সময় সতর্ক হতে হবে। খোলা স্থানে হাঁচি-কাশি না ছড়িয়ে কাপড় বা টিস্যু ব্যবহার করতে হবে।
আক্রান্ত অঞ্চল (যেমন: চীনের উহান) থেকে দেশে এলে নিজের দিকে বা নিজের পরিচিতের প্রতি খেয়াল রাখা। সর্দি, কাশি বা হাঁচি ইত্যাদি দেখা দেওয়া মাত্র ডাক্তারের কাছে পরামর্শের জন্য যেতে হবে। বিমানবন্দরের স্ক্রিনিং বা যাচাইয়ের পরও ভাইরাসের লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে বলে প্রতিবেদনে আশংকা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞ। (করোনাভাইরাস ঠেকাতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতির পরামর্শ বিশেষজ্ঞের)
যেহেতু এ রোগের এখনো কোন প্রতিষেধক পাওয়া যায় নি, তাই এখন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাই একমাত্র উপায় বলে বিবেচ্য। যে কোনো সময় এ রোগ ছড়িয়ে যেতে পারে। এখনো আমাদের দেশে এ জীবাণু পাওয়া যায় নি। তাই ভয় না পেয়ে এ রোগের প্রতিরোধে আমারা সতর্ক থাকতে পারি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউ.এইচ.ও.) প্রকাশিত কিছু তথ্যচিত্র নিচে যুক্ত করা হল:
তথ্যসূত্র:
https://www.bbc.com/bengali/news-51206035
https://www.who.int/westernpacific/emergencies/novel-coronavirus
https://www.who.int/csr/don/21-january-2020-novel-coronavirus-republic-of-korea-ex-china/en/
https://www.who.int/news-room/q-a-detail/q-a-coronaviruses
https://www.cdc.gov/coronavirus/2019-ncov/guidance-prevent-spread.html