কিছু কার্যকর প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক
- স্বাস্থ্য ডেস্ক
বিভিন্ন সময় শরীরে নানা ধরণের ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়। অনেক সময় তা মারাত্মক আকার ধারন করে। তখন বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেতে হয়। তবে প্রাকৃতিকভাবে এমন অনেক অ্যান্টিবায়োটিক আছে যেগুলো খেলে শরীর সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার উপযোগী হয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে ক্ষত সারাতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক বেশ কার্যকরী ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাকৃতিক অ্যান্টি বায়োটিক সেবনে সর্দি-ঠাণ্ডা লাগা, জ্বর, নিউমোনিয়া, হাড়ে সংক্রমণ-সহ অন্যান্য রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। শরীর রাখতে নিয়মিত খাদ্যতালিকায় যেসব প্রাকৃতিক অ্যান্টোবায়োটিক রাখতে পারেন-
রসুন : রসুনের ভিতরে যে অ্যান্টিবায়োটিক রয়েছে, তা রোগ সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ কারণে খাদ্যাভ্যাসে অলিভ অয়েলে ভেজানো রসুন যোগ করতে পারেন। এক দিনে দুটি রসুন-দানা খাওয়া যেতেই পারে। অ্যান্টিফাঙ্গাল, অ্যান্টিভাইরাল সমৃদ্ধ রসুনকে প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক বলা হয়ে থাকে। ১৯৯৯ সাল প্রকাশিত এক জার্নালে বলা হয়েছে, রসুনের অ্যালিসিন নামক উপাদান প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। প্রতিদিন সকালে নাস্তা খাওয়ার আগে খালি পেটে ২ থেকে ৩ কোয়া রসুন খাওয়ার অভ্যাস করুন। এছাড়া রসুনের সাপ্লিমেন্টারিও খেতে পারেন। তবে রসুনের সাপ্লিমেন্টারি খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
মধু : মধু ঘরোয়া অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে পরিচিত। চিনির বিকল্প হিসেবে মধু খেতে পারেন। বেশির ভাগ অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ তৈরিতে মধু ব্যবহার করা হয়। এর অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টিসেপটিক উপাদান বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে। মধু ব্যাকটেরিয়ার বিকাশও প্রতিরোধ করে ।
হলুদ : হলুদে আশ্চর্যজনক অনেক গুণ রয়েছে। হলুদে উপস্থিতি কার্কুমিনকে প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক বলা হয়। কারণ কার্কুমিনে শরীরের উপকারী শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি ফ্রি র্যাডিকালগুলির দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতি থেকে শরীরকে রক্ষা করে। হলুদ ব্রেনস্টেম উন্নত করতে এবং গাঁটে ব্যথা কমাতেও সহায়তা করে। আয়ুর্বেদিক এবং চীনা চিকিৎসা অনুযায়ী, হলুদের অ্যান্টিবায়োটিক উপাদান ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে সাহায্য করে। এমনকি ক্ষতস্থান সারাতে হলুদ বেশ কার্যকরী। ১ টেবিল চামচ হলুদ গুঁড়ো এবং ৫-৬ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে এটি এয়ারটাইট জারে সংরক্ষণ করতে পারেন। দিনে দু’বার ১/২ চা চামচ করে এটি খেলে উপকার পাবেন।
আদা : আদা প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করে। তাই একে প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক বলা হয়। আদা খেলে বমি বমি ভাব, বুক জ্বালার মতো সমস্যা দূর হয়। আদা চায়ের সঙ্গে খাওয়া বিশেষ উপকারী। আদাতে থাকা প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক উপাদান নানা ধরনের সমস্যা দূর করে।
নিম : প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে পরিচিত নিম ব্যাকটেরিয়ার সাথে লড়াই করে। এর অ্যান্টিবায়োটিক উপাদান ব্রণ, ত্বকের সংক্রমণ দূর করতে ভূমিকা রাখে। শুধু তাই নয়, এটি মুখের এবং দাঁতের নানা সমস্যাও দূর করতে বেশ কার্যকর। নিম পাতা সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে গোসল করলে চর্মরোগজনিত সমস্যা দূর হয়। এই পাতা বা ফুল বেটে গায়ে কয়েকদিন লাগালে চুলকানি ভালো হয়। যাদের দীর্ঘদিন ধরে পেটের সমস্যা রয়েছে তারা ৩০ ফোটা নিম পাতার রস, এক কাপ পানিতে ৪/১ ভাগ পানির সঙ্গে মিশিয়ে সকালে-বিকেলে খেলে উপকার পাবেন।
সূত্র: সমকাল