যেসব খাবার খেলে ইউরিক অ্যাসিড দূর হয়
- স্বাস্থ্য ডেস্ক
রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া এক জটিল সমস্যা। গাঁটে গাঁটে ব্যথা, উচ্চ রক্তচাপ, এমনকি কিডনি অকেজো হয়ে যেতে পারে অত্যাধিক ইউরিক অ্যাসিডের কারণে। সাধারণত অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা, অস্বাস্থ্যকর খাবার রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। অনেক ক্ষেত্রে জীনগত কারণেও ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা দেখা যায়। একজন প্রাপ্তবয়ক পুরুষের দেহে ৩.৪-৭ mg/dL এবং মহিলার ক্ষেত্রে ২.৪-৬ mg/dL হল ইউরিক অ্যাসিডের স্বাভাবিক মাত্রা। এর থেকে বেশি হলে হাজার সমস্যা দেখা দেবে শরীরে।
ইউরিক অ্যাসিড কী?
আমরা ঘুমাই বা জেগে থাকি, আমাদের দেহ ২৪ ঘণ্টা কাজ করে চলেছে। ইউরিক অ্যাসিড হল এক ধরনের রাসায়নিক, যা খাবার হজম করার সময় শরীরে উৎপন্ন হয়। এতে থাকে ‘পিউরিনস’ নামক এক ধরণের অ্যামিনো অ্যাসিড, যা কিছু কিছু খাবারের মধ্যে পাওয়া যায়। ইউরিক অ্যাসিড রক্তের সঙ্গে মিশে গিয়ে কিডনিতে পরিশ্রুত হয়ে প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। কিন্তু এর পরিমাণ বেড়ে গেলে সেটা দেহে জমা হতে থাকে। আর তখনই নানান সমস্যা দেখা দেয়। নির্দিষ্ট রক্ত পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা দেখেন রোগীর শরীরে কতটা পরিমাণ ইউরিক অ্যাসিড আছে। ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে একাধিক খাবারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন চিকিৎসক। তার মধ্যে অতিরিক্ত পিউরিনযুক্ত খাবার, উচ্চ প্রোটিন যুক্ত খাবার খাওয়া যায় না। এছাড়া বীজ রয়েছে এমন সব সবজি থেকে দূরে থাকতে বলা হয়। মদ, মিষ্টি থেকে দূরে থাকাই ভালো।
তবে এরকম কিছু ফলমূল, সবজি রয়েছে যেগুলো আপনি নিশ্চিন্তে খেতে পারেন ইউরিক অ্যাসিড হলে। দেখে নিন সেগুলো কী কী –
১) আপেল
আপেল খেতে মোটামুটি সবাই ভালোবাসেন। ইউরিক অ্যাসিড হলে আপেল খান ভয় না পেয়ে। এই ফলে থাকে ম্যালিক অ্যাসিড, যা রক্তে ইউরিক অ্যাসিড প্রতিরোধ করে। এর ফলে অনেকটা আরাম পান উচ্চ ইউরিক অ্যাসিডে ভোগা রোগীরা।
২) আপেল সাইডার ভিনেগার
আপেল সাইডার ভিনিগার খেলেও উপকৃত হবেন ইউরিক অ্যাসিডে আক্রান্তরা। এক গ্লাস জলে ৩ চা চামচ আপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে দিনে ২-৩ বার খান।
৩) ফ্রেঞ্চ বিন জুস
ঘরোয়া উপায়ে যারা ইউরিক অ্যাসিড সারাতে চান তারা প্রতিদিন ফ্রেঞ্চ বিনের জুস খেতে পারেন। দিনে দু’বার এটি খেলে রক্তে উচ্চ ইউরিক অ্যাসিড উৎপাদন প্রতিরোধ করে। অতিরিক্ত ভিটামিন সি ডেকে আনতে পারে বিপদ! জানুন প্রতিদিন কতটা পরিমাণ গ্রহণ করা উচিত
৪) পানি
প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা ইউরিক অ্যাসিডের আরও একটা ঘরোয়া প্রতিকার। যত পানি খাবেন দেহের টক্সিন এবং অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড বেরিয়ে যাবে। কমপক্ষে ৮-৯ গ্লাস পানি প্রতিদিন খাওয়া উচিত।
৫) চেরি
চেরিতে থাকে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান, যা ইউরিক অ্যাসিড কম করতে সাহায্য করে। এছাড়াও, প্রদাহ এবং ব্যথা প্রতিরোধ করে চেরি।
৬) বেরি
স্ট্রবেরি এবং ব্লু বেরি ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে দারুণ কাজ করে। এতেও থাকে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান, যা রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৭) টাটকা সবজির রস
গাজর, শশা ও বিটের জুস খেলে রক্তে ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৮) লো ফ্যাট ডেয়ারি প্রোডাক্ট
ডায়েটে লো ফ্যাট ডেয়ারি প্রোডাক্ট অন্তর্ভুক্ত করলে ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। লো ফ্যাট দুধ বা দই খেতে পারেন। শুধু স্বাদেই ভালো নয়, পেয়ারায় রয়েছে একাধিক স্বাস্থ্যগুণ!
৯) লেবু
লেবুতে থাকে সাইট্রিক অ্যাসিড, প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় লেবু যোগ করলে উচ্চ ইউরিক অ্যাসিড প্রতিরোধ করে। প্রতিদিন এক গ্লাস পানিতে অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।
১০) গ্রিন টি
প্রতিদিন গ্রিন টি পান করলে ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা কমবে।
সূত্র: বোল্ড স্কাই