ঐতিহ্যে কুমিল্লার মাতৃভান্ডারের রসমালাই!
- মিথুন মজুমদার ঋত্বিক
বিখ্যাত মাতৃভান্ডার প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৩০ সালে কুমিল্লার মনোহরপুরে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বিখ্যাত রসমালাই হচ্ছে কুমিল্লার মাতৃভান্ডারের রসমালাই।
কুমিল্লা ও তার আশেপাশের জেলা গুলোতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আপ্যায়নের অন্যতম উপকরণ হচ্ছে এই মাতৃভান্ডারের রসমালাই। ঈদ, পূজা, পহেলা বৈশাখ এইসব অনুষ্ঠানে মাতৃভান্ডারের রসমালাইয়ের চাহিদা এতই বেড়ে যায় যে দোকানের ভীড় অনেক বেশি থাকে। এরপরেও অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও অনেকে কিনতে পায় না কাঙ্ক্ষিত রসমালাই।
কুমিল্লা কিংবা তার আশেপাশে জেলা গুলো ছাড়িয়ে মাতৃভান্ডারের রসমালাইয়ে খ্যাতি অনেক আগেই সারাদেশে ছড়িয়েছে। রাষ্ট্রীয় দিবস বা অনুষ্ঠান গুলোতেও আপ্যায়ন এর অন্যতম উপকরণ এই মাতৃভান্ডারের রসমালাই।
কুমিল্লায় রসমালাই তৈরী হতো ১৯০০ সালের দিক থেকে। পরবর্তীতে ১৯৩০ সালের দিকে মাতৃভান্ডার রসমালাই প্রস্তুত করতে শুরু করে এবং অনেক খ্যাতি অর্জন করা শুরু করে। মাতৃভান্ডারের উত্থান শংকর সেনগুপ্তের হাত ধরে। বর্তমানে তার উত্তরসূরীরাই ব্যবসাটি দেখাশোনা করছেন । বর্তমানে যিনি ব্যবসাটি দেখাশোনা করছেন তিনি বলেছেন, তারা তাদের রসমালাইয়ের গুণগত মান সবসময় অক্ষুণ্ণ রাখার চেষ্টা করেন এবং ক্রেতারাও গুণগত মান ও স্বাদের দিক থেকে যথেষ্ট সন্তুষ্ট এখন পর্যন্ত।
মনোহরপুরের মাতৃভান্ডারের রসমালাইয়ের খ্যাতি এতটাই বেশি যে শুধু ‘মাতৃভান্ডার’ নামটি বিভিন্ন উপায়ে ব্যাবহার করে কুমিল্লা ও তার আশেপাশের জেলাগুলোতে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুপাশে এর অনেক ভুয়া শাখা খুলে ব্যবসা করছেন অনেক অসাধু ব্যবসায়ীরা।
মাতৃভান্ডারের একজন কারিগরের সাথে আলাপচারিতায় এক পর্যায়ে তিনি রসমালাই তৈরীর প্রণালী সম্পর্কে ধারণা দিয়েছেন। প্রথমে দুধ সংগ্রহ করা হয় বিভিন্ন গোয়ালা ও দুধ-ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। দুধ সংগ্রহ করার পর বিশাল কড়াইয়ে তা ঢেলে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় জ্বাল দেওয়া হয়। ঘন্টা দুয়েক জ্বাল দিলে দুধ একপর্যায়ে ঘন হয় যা পরবর্তীতে ছানাতে পরিণত হয়। ছানাগুলো কেটে ছোট ছোট দানাদার মিষ্টি বানিয়ে পরবর্তীতে তা রসের মধ্য দিয়ে রসমালাইতে রূপান্তর করা হয়। দুধের ঘনত্বের ওপর রসমালাইয়ের স্বাদের পরিমাণ নির্ভর করে অর্থাৎ ঘনত্ব বেশি হলে স্বাদও বেশি হবে।
দেশ ছাড়িয়ে বাইরের দেশেও এই মাতৃভান্ডারের রসমালাইয়ের খ্যাতি আছে আজ ছড়িয়ে পড়েছে। বর্তমানে মাতৃভান্ডারের রসমালাই প্রতি কেজি মূল্য ২৮০ টাকা।