দেড় লাখ পেঙ্গুইনের বরফ সমাধী
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দক্ষিণ মেরুতে এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মারা গেছে প্রায় দেড় লাখ পেঙ্গুইন। গবেষকরা বলছেন, মূলত পেঙ্গুইনের একটি বাসস্থানের চারপাশে বরফখণ্ড ভেসে আসায় সেগুলো আটকে পড়ে এবং খাদ্যাভাবে মারা যায়। সংবাদ : গার্ডিয়ান।
এক প্রতিবেদনে গার্ডিয়ান জানিয়েছে, অ্যান্টার্কটিকার কেপ ডেনিসন এলাকায় বরফখণ্ডের কারণে আটকে পড়ে পেঙ্গুইনদের একটি বড় দল। সে বরফখণ্ডগুলো পেঙ্গুইনদের বাসস্থানকে চারদিক দিয়ে ঘিরে ধরায় পেঙ্গুইনেরা তাদের স্বাভাবিক খাবার খেতে অক্ষম হয়ে পড়ে। এ বরফখণ্ডগুলোর কারণে পেঙ্গুইনদের খাবার সংগ্রহে ১২০ কিলোমিটার বাড়তি যাতায়াত করতে হয়।
সুস্থভাবে বাঁচার জন্য পেঙ্গুইনদের বাসস্থানের পাশে থাকা প্রয়োজন পর্যাপ্ত খাবারসমৃদ্ধ সাগর। কিন্তু হঠাৎ বরফখণ্ড চারপাশ থেকে ঘিরে ধরায় শুরু হয় পেঙ্গুইনদের খাদ্যাভাব। গবেষকরা মনে করছেন বৈশ্বিক উষ্ণতাজনিত সমস্যার কারণেই পেঙ্গুইনদের মাঝে এ বিপর্যয় নেমে এসেছে। আর এতেই মৃত্যু হয় বিপুলসংখ্যক পেঙ্গুইনের।
২০১১ সালের পর থেকে এ অঞ্চলে ১ লাখ ৬০ হাজার পেঙ্গুইন কমতে কমতে বর্তমানে মাত্র ১০ হাজারে এসে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলসের ক্লাইমেট চেঞ্জ রিসার্চ সেন্টারের গবেষকরা। এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে আগামী ২০ বছরের মধ্যে এ এলাকার সব পেঙ্গুইনই মারা যেতে পারে বলে মনে করছেন গবেষকরা।
পৃথিবীর সবচেয়ে দক্ষিণের মহাদেশ অ্যান্টার্কটিকা। এটি বিশ্বের শীতলতম ও শুষ্কতম মহাদেশ। এখানে কোনো মানুষের স্থায়ী বসবাস না থাকলেও পেঙ্গুইনের মতো প্রবল শৈত্যের সাথে লড়াই করতে সক্ষম উদ্ভিদ ও প্রাণীই এ মহাদেশে টিকে রয়েছে। পেঙ্গুইন ছাড়াও এখানে রয়েছে সিল, নেমাটোড, টার্ডিগ্রেড, মাইট, বিভিন্ন প্রকার শৈবাল এবং অন্যান্য মাইক্রোঅর্গানিজম এবং তুন্দ্রা উদ্ভিদসমূহ। এসব খেয়েই পেঙ্গুইন বেঁচে থাকে। তবে তাদের এ পরিবেশ অত্যন্ত সংবেদনশীল। বৈশ্বি উষ্ণতাসহ মানবসৃষ্ট নানা কারণে আবহাওয়ার সামান্য অদল-বদল হলেই এ অঞ্চলের পেঙ্গুইনসহ নানা প্রাণীর মারাত্মক ক্ষতি হয়।