জামিন পেলেন সোনিয়া-রাহুল
নিউজ ডেস্ক : ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় কংগ্রেসের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও তাঁর ছেলে রাহুল গান্ধী জামিন পেয়েছেন। দিল্লির পাতিয়ালা হাউস আদালতে হাজির হয়ে তাঁরা জামিনের আবেদন করেন। সংবাদ :এনডিটিভি।
এ ছাড়াও এ মামলায় আরও চারজন জামিন পেয়েছেন। তাঁরা হলেন মতিলাল ভোরা, অসকার ফার্নান্দেজ, স্যাম পিত্রদা ও সুমন দুবে। আদালত আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন।
সোনিয়া ও রাহুলের আইনজীবী কপিল শিবাল বলেন, আদালত কোনো ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ না করে জামিন মঞ্জুর করেন। স্থানীয় সময় বেলা তিনটায় শুনানি শুরু হয়। তিন মিনিটের মাথায় শেষ হয়।
শিবাল বলেন, মামলার বাদী বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী আদালতের কাছে সোনিয়া ও রাহুলের ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু আদালত তা আমলে নেননি।
আদালতের আদেশ শেষে সোনিয়া গান্ধী ২৪ আকবর রোডে দলের প্রধান কার্যালয়ে যান। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমরা আদালতের সামনে পরিষ্কার বিবেক নিয়ে হাজির হয়েছিলাম।’
২০১২ সালের ১ নভেম্বর দিল্লির মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে যখন সুব্রহ্মণ্যম এই মামলা দায়ের করেন, তখন তিনি জনতা পার্টির সভাপতি ছিলেন। তাঁর দায়ের করা এই মামলায় সোনিয়া-রাহুলদের জামিনের আরজি দিল্লি হাইকোর্ট খারিজ করার পর কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণতার’ অভিযোগ তোলা হয়েছিল।
দেশ ও দলের জন্য একটা খবরের কাগজ প্রকাশের কথা প্রথম ভেবেছিলেন জওহরলাল নেহরু ১৯৩৭ সালের সাধারণ নির্বাচন জেতার পর। পরের বছরেই ইংরেজি ভাষায় ন্যাশনাল হেরাল্ড ও উর্দু ভাষায় কৌমি আজাদ প্রকাশিত হয়। অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেড (এজেএল) নামে এক কোম্পানি খোলা হয়, যার শেয়ারহোল্ডার ছিলেন ৭৬১ জন কংগ্রেস নেতা। নেহরু হন ন্যাশনাল হেরাল্ড-এর প্রথম সম্পাদক। এত দ্রুত কাগজটি জনপ্রিয় হয়ে যায় যে ১৯৪২ সালের ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের সময় ব্রিটিশ সরকার তা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত সেই নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। উত্তর প্রদেশের লক্ষ্ণৌ থেকে যাত্রা শুরু করে ন্যাশনাল হেরাল্ড দিল্লিসহ বিভিন্ন স্থানে অফিস স্থাপন করে। এজেএলের সেই সব সম্পত্তির বর্তমান বাজারমূল্য, স্বামীর মতে, পাঁচ হাজার কোটি রুপি।
ন্যাশনাল হেরাল্ড-এর পুনরুজ্জীবনে কংগ্রেস ৯০ কোটি রুপি ঋণ দিয়েছিল বিনা সুদে। কিন্তু তাতেও কাগজকে বাঁচানো যায়নি। ২০০৮ সালে সোনিয়া গান্ধী কাগজটিকে একেবারেই বন্ধ করে দেন। ইতিমধ্যে কংগ্রেস ইয়ং ইন্ডিয়ান (ওয়াইআই) নামে অন্য একটি কোম্পানি খোলে, যার শেয়ারহোল্ডাররা এজেএলে যাঁরা ছিলেন তাঁরাই।
জরুরি অবস্থায় বাড়াবাড়ি রকমের মানবাধিকার খর্ব করার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে জনতা পার্টি ১৯৭৭ সালে ক্ষমতায় এসে শাহ কমিশন গঠন করেছিল। ইন্দিরা গান্ধী ও তাঁর পুত্র সঞ্জয়কে সেই কমিশনে হাজিরা দিতে হয়েছিল। ৩৭ বছর পর ইন্দিরার পুত্রবধূ সোনিয়াকেও সপুত্র আদালতে হাজিরা দিতে হল।