পরিচয় মিলেছে ‘পলিথিন মেসি’র
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পলিথিন ব্যাগ কেটে তাতে ‘মেসি’ লিখে বানানো আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলের নীল-সাদা ‘জার্সি’ পরা যে শিশুর ছবি ইন্টারনেটের ভার্চুয়াল জগতে আলোড়ন তুলেছে, তার ‘আসল পরিচয়’ উদঘাটনের কথা জানিয়েছে বিবিসি।
বিবিসি ট্রেন্ডিং বলছে, লিওনেল মেসির ‘সবচেয়ে বড় ভক্ত’ হিসেবে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে পরিচিতি পেয়ে যাওয়া সেই শিশুটির নাম মুর্তজা আহমাদি, বাড়ি আফগানিস্তানের গজনি প্রদেশের জাগুরি গ্রামে দরিদ্র এক কৃষক পরিবারে।
পেছন থেকে তোলা শিশুটির একটি ছবি সম্প্রতি ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়ে যায়। সেখানে পলিথিনের ওপর কলম দিয়ে লেখা দেখা যায় বিশ্বসেরা ফুটবলার মেসির নাম ও তার জার্সি নম্বর ১০।
এরপর একটি টেলিভিশন চ্যানেলের খবরে দাবি করা হয়, মেসির এই ভক্ত ইরাকের এক কুর্দি পরিবারের সন্তান। ছবিটি দেখে বার্সেলোনা তারকা মেসি তার আসল জার্সি উপহার দেওয়ার জন্য সেই ভক্তকে খুঁজে বের করতে আগ্রহী হন বলেও খবর আসে।
এরই মধ্যে আজিম আহমাদি নামে অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী এক আফগান নাগরিক তার ভাতিজা মুর্তাজার কয়েকটি ছবি পোস্ট করে দাবি করেন, পাঁচ বছর বয়সী এই শিশুই সেই পলিথিন জার্সির মেসিভক্ত। আজিমের দেওয়া ছবির সঙ্গে ভাইরাল হওয়া ছবিটির অনেক কিছুই মিলে যায়।
আজিমের মাধ্যমে বিবিসি ট্রেন্ডিংয়ের যোগাযোগ হয় মুর্তাজার বাবা আরিফ আহমাদির সঙ্গে। টেলিফোনে তিনি বিবিসিকে নিশ্চিত করেন, তার ছেলেই সেই মেসিভক্ত, যাকে ইন্টারনেটে খোঁজা হচ্ছে।
আরিফ আহমাদি জানান, তার বড় ছেলে হুমায়ুন ওই ছবি তুলে ফেইসবুকে দিয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘আমার ছেলেটা সত্যিই মেসি আর ফুটবলের পাগল। আমি সাধারণ একজন কৃষক। ওকে একটা জার্সি কিনে দেওয়ার সামর্থ্য আমাদের নেই। এ জন্যই ওরা পলিথিন দিয়ে জার্সি বানিয়েছিল।’
আচমকা বিশ্বজুড়ে এই যে পরিচিতি পেয়ে যাওয়া, সেটা জেনে মুর্তজাও বেজায় খুশি বলে জানালেন তার বাবা, ‘পরিচিত যাদের ইন্টারনেট আছে, তাদের কাছ থেকে ও বিষয়টি শুনেছে। ওরাই আমাদের জানিয়েছে।’
বাবার আশা, এখন তার ছেলের সঙ্গে মেসির দেখা হওয়ার ব্যবস্থা হবে। মুর্তাজা যাতে ‘মেসির মতো বড় ফুটবলার’ হতে পারে, সেজন্য সাহায্যও মিলবে।
মুর্তাজাই পলিথিন জার্সির সেই মেসিভক্ত হয়ে থাকলে ইরাকের কুর্দি টিভির দাবি আর ধোপে টেকে না। ওই টেলিভিশনের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, ওই ছবি ইরাকের দোহুক শহরের হোমিন নামের এক বালকের।
গত সপ্তাহে বিবিসি ট্রেন্ডিংয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দোহুকের ছবি প্রকাশ করে আসলে ইন্টারনেটে গুজব ছড়ানো হয়েছিল। সুইডেনের এক স্কুলছাত্র পরে ট্রেন্ডিংকে জানান, তিনিই সেই গুজবের কারিগর। নিজের ফেলে আসা শহরকে বিখ্যাত করতে পলিথিনের মেসিভক্তকে দোহুক শহরের বাসিন্দা বানিয়ে টুইটারে ওই পোস্ট দেওয়া হয়েছিল।