টোকাই থেকে কোটিপতি
- টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
মাঝে মাঝেই নিজের অতীতের দিকে চোখ ফেরান মোছলেম উদ্দিন। ফেলে আসা এক টুকরো জীবন দেখতে ভালো লাগে তার। কোথায় থেকে কোথায় এসেছেন। ছিলেন টোকাই, এখন কোটিপতি!
এ গল্প অবিশ্বাস্য সাফল্যের। এ গল্প অকল্পনীয় আত্মবিশ্বাস আর পরিশ্রমের। এ গল্পের নায়ক একজন মোছলেম উদ্দিন। টাঙ্গাইলের সখীপুরে তার বাড়ি। এক সময় অবর্ণনীয় কষ্টে দিন কেটেছে মোছলেমের। তিনবেলা খাবার জোটাতে পরতেন না। কখনো অন্যের বাড়িতে দিন মজুরি করেছেন। কখনো রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে ঘুরে ভাঙা জিনিসপত্র কুড়াতেন। ছিলেন টোকাই। কখনো বাড়ি বাড়ি ফেরি করে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করেছেন।
এত কিছু করেও সৌভাগ্য ঠিক ধরা দিচ্ছিল না। বাড়িতে ছিল ৬টি লেবু গাছ। কি মনে করে সেসবের যত্ন নেওয়া শুরু করলেন। গাছে বেশ লেবু ধরতে শুরু করল। সেসব বিক্রি করে এক মাসে প্রায় ৫০০ টাকা পকেটে এলো তার।
‘৬টি গাছ থেকে আমি শুরু করেছি। এখন আমার বাগান বড় হয়েছে। অন্যের জমি লিজ নিয়ে শুরু করলেও এখন আমার মাসিক আয় তিন লাখ টাকা ছাড়িয়েছে।’
ব্যাপারটা মন্দ না! মনে মনে ভাবলেন মোছলেম। তারপর একদিন সাহস করে সখীপুরের গজারিয়া গ্রামে সাড়ে ছয় একর জমি এক ব্যক্তির কাছ থেকে ১০ বছরের জন্য লিজ নিলেন। সম্পূর্ণ মনোযোগ ঢেলে দিয়ে গড়ে তুললেন লেবু বাগান। তারপর লেবুই তাকে পৌছে দেয় সাফল্যের দরজায়। মোছলেম উদ্দিন বলেন, ‘৬টি গাছ থেকে আমি শুরু করেছি। এখন আমার বাগান বড় হয়েছে। অন্যের জমি লিজ নিয়ে শুরু করলেও এখন আমার মাসিক আয় তিন লাখ টাকা ছাড়িয়েছে।’
মোছলেমের এ সাফল্য দেখে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন এলাকার অনেক চাষীই। তারা বলেন, তার দেখাদেখি আমরা লেবু চাষের দিকে ঝুঁকছি।
তার সাফল্যকে সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. ফায়জুল ইসলাম ভূইয়া ও টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. আবুল হাশিম জানান, মোছলেমের দেখাদেখি এখানকার অন্য কৃষকরা লেবু চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। আমরাও চেষ্টা করছি কৃষকদের মধ্যে লেবুচাষ ছড়িয়ে দিতে।