নির্বাহী থেকে উদ্যোক্তা
- লিডারশিপ ডেস্ক
সফল নির্বাহী থেকে সফল উদ্যোক্তা-বাংলাদেশের শিল্প ও ব্যবসায় খাতে এরূপ মানুষের সংখ্যা একেবারেই হাতে গোণা। আর শীর্ষ পর্যায়ের নির্বাহী থেকে শীর্ষ পর্যায়ের উদ্যোক্তা-সে সংখ্যা তো আরও কম। এই স্বল্প সংখ্যক মানুষের তালিকায় রয়েছেন এসিআই গ্রুপের চেয়ারম্যান এম আনিস উদ দৌলা। শীর্ষ এ শিল্পদ্যোক্তার জন্ম ১৯৩৭ সালের পয়লা মার্চ ফরিদপুরে। তাঁর বাবা ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের খ্যাতিমান আইনবিদ ও সমাজসেবী খান বাহাদুর মো. ইসমাইল। আনিস উদ দৌলার মায়ের নাম কাকাবুন্নেছা। ভাই বোনদের মধ্যে সবাই স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। এদের মধ্যে বিশেষভাবে পরিচিত প্রখ্যাত নজরুল সংগীতশিল্পী ফিরোজা বেগম ও সংগীতশিল্পী আসফ উদ দৌলা।
আনিস উদ দৌলার পড়ালেখা শুরু হয়েছিল ফরিদপুর জিলা স্কুলে। এরপর করাচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোকপ্রশাসন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন।
বিশ্ববিদ্যালয় পাশ করার পর ১৯৬০ সালে তিনি যোগ দেন পাকিস্তান অক্সিজেন লিমিটেডে।এরপর ১৯৭০ সাল পর্যন্ত তিনি লাহোর ও করাচিতে আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশ অক্সিজেন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান এবং ১৯৮২ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেন। ৮২ থেকে ৮৭ সাল পর্যন্ত তিনি পূর্ব আফ্রিকান অক্সিজেনের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কেনিয়া ও তানজানিয়ায় দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৭ সালে দেশে ফিরে তিনি ব্রিটেনের বহুজাতিক কোম্পানি আইসিআই গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর ১৯৯২ সালে আইসিআই তাদের বাংলাদেশের কার্যক্রম এসিআইএর কাছে ন্যাস্ত করলে তিনি স্বত্ত্বাধিকারী কর্ণধার হিসেবে কোম্পানিটিকে নিয়ে যাত্রা শুরু করেন এবং একে একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তর করেন।
আনিস উদ দৌলার উদ্যোক্তা-দর্শন হচ্ছে, গুণগত মানের দিক থেকে নিজের কাজ ও পণ্যকে প্রতি মুহূর্তে নিজেরাই অতিক্রম করে যাওয়া। আর সে কারণেই এসিআই-এর পক্ষে সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশের প্রথম কোম্পানি হিসেবে ১৯৯৫ সালে আইএসও ৯০০১ এবং ২০০০ সালে আইএসও ১৪০১ সনদ অর্জন করা। এসিআই গ্রুপের অধীনে বর্তমানে ১২টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা।
আনিস উদ দৌলা ১৯৭৭ সালে নারায়ণগঞ্জ শিল্প বণিক সমিতি, ১৯৭৮, ১৯৯৫ ও ২০১০ সালে মেট্রোপলিটন শিল্প ও বণিক সমিতি, ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৭ ও ১৯৯১ থেকে ৯৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।বর্তমানে তিনি শ্রম বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির সদস্য। তিনি মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক এবং পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির অন্যতম উদ্যোক্তা। তিনি ২০১১ সালে বর্ষসেরা উদ্যোক্তা পুরস্কার ও ২০১২ সালে সেরা সম্মানজনক কোম্পানি পুরস্কার অর্জন করেন।