আগ্রহই সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার
- লিডারশিপ ডেস্ক
পাঠক, মনে পড়ে সেই মুহূর্তের কথা, যখন বিশাল টাইটানিক জাহাজ চোখের সামনে ডুবে যাচ্ছে, চারদিকে হাহাকার; কিংবা সেই যুদ্ধের কথা, যা চলছিল ভিনগ্রহের মানুষের সঙ্গে পৃথিবীর স্বার্থান্বেষীদের। আমরা প্রায়ই অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অন্য জীবন সম্পর্কে জানতে চাই। আজকে জানাব পর্দার পেছনে কাজ করা মূল কাণ্ডারির অন্য জীবন। জেমস ক্যামেরন, অস্কার পুরস্কারপ্রাপ্ত বিশ্বনন্দিত পরিচালক।
ছেলেবেলায় সায়েন্স ফিকশনের পোকা ছেলেটা চাইত নতুন কিছু করার; কিন্তু সুযোগই পাচ্ছিল না। তাই বলে কি থেমে থাকা যায়? শুধু ছেলেবেলার স্বপ্নকে সত্য করেননি, বরং অনেকের অনুপ্রেরণার মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন।
– বনেও পাবেন তাকে
ভাবছেন, এই বিখ্যাত পরিচালক বনবাসী হয়ে গেলেন নাকি? না। এই ক্যামেরন একটি ব্যাঙ। ২০১৩ সালে ভেনিজুয়েলার বনে খোঁজ পাওয়া এই নতুন ধরনের ব্যাঙকে ক্যামেরনের নাম দেওয়া হয় জেমস ক্যামেরনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে। মূলত পরিবেশবাদী এই পরিচালকের পরিবেশ রক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানাতেই এ প্রয়াস।
– চিত্রশিল্পী
বলা হয়, শিল্পী মন অনেক কাজের কাজী। তেমনি জেমস ক্যামেরন। পরিচালনা, চিত্রনাট্যকার ছাড়াও একজন আঁকিয়ে ক্যামেরন। বিখ্যাত টাইটানিক চলচ্চিত্রে জ্যাকের ডায়েরিতে আঁকা রোজের সব ছবি এঁকেছিলেন জেমস ক্যামেরন নিজে এবং কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াই।
– প্রাথমিক পশু চিকিৎসক
চিত্রশিল্পী, পরিচালক, অভিনেতা, চিত্র নাট্যকার ছাড়াও প্রাথমিক পশু চিকিৎসকের কাজও পারেন ক্যামেরন। তার পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘দি অ্যাবিস’-এর শুটিংয়ের সময় যখন স্টান্ট ইঁদুরটি বেহুঁশ হয়ে যায় তখন ক্যামেরনই প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ইঁদুরটিকে বাঁচিয়ে তোলেন।
– গাড়িবন্দি
সর্বজনস্বীকৃত_ দুর্দান্ত চিত্রনাট্য তৈরির জন্য দরকার শান্ত পরিবেশ। কিন্তু ক্যামেরনের জন্য গল্পটা অন্যরকম। ক্যামেরন ‘দি টার্মিনেটর’-এর চিত্রনাট্য তৈরি করেছিলেন তার গাড়িতে বসে। তার মতে, লেখা লিখতে এবং লেখার আমেজ ধরে রাখতে এই গাড়িবন্দি হওয়াটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল।
– বোহেমিয়ান ক্যামেরন
একসময় খাবার চুরি করে এবং অন্যের আধা খাওয়া খাবার খেয়ে দিন পার করা এই বিলিয়নেয়ারকে সংসারজীবন বেশ ভুগিয়েছে। ৫ বার নতুন করে জীবনের গল্প শুরু করেও ঠিক সফল গল্পে পরিণত হয়নি একটিও। বর্তমানে নিউজিল্যান্ডে থিতু হলেও ক্যামেরনের বাস্তব গল্প সেলুলয়েডের মতো আকর্ষণীয় নয়।
– ধৈর্যের নেই শেষ
পরিচালক জেমস ক্যামেরন টাইটানিক তৈরির পরপরই তৈরি করতে চেয়েছিলেন তার বিশ্বনন্দিত চলচ্চিত্র অ্যাভাটার। কিন্তু বাজেট সংকুলান না হওয়ায় অপেক্ষা করতে হয়েছে তাকে এবং এই অপেক্ষা একদিন-দু’দিন কিংবা ৫ বছরের নয়। এই অপেক্ষা ছিল সুদীর্ঘ ১০ বছরের। ঠিক ১০ বছর অপেক্ষা করার পর ক্যামেরন নির্মাণ করেন স্বপ্নের ‘অ্যাভাটার’। না বললেই নয়; ক্যামেরন অত্যন্ত অধ্যবসায়ী।
– ট্রাক ড্রাইভার থেকে পরিচালনা
ক্যামেরনের সাহসের তারিফ হবে না তো কার হবে বলুন? বড় বড় প্রোজেক্টে কাজ করার মতো সাহস এবং ইচ্ছা তার সেই ছেলেবেলা থেকে ছিল বলেই ট্রাক ড্রাইভারের চাকরি করা সেদিনের ছোকরা পরিচালনার কাজে নেমেছেন। অবাক হচ্ছেন? সত্যিই, ক্যামেরন তার চাকরি জীবন শুরু করেছিলেন একজন ট্রাক ড্রাইভার হিসেবে।
জেমস ক্যামেরন একটি নান্দনিকতার নাম। তার সব কাজে ফুটে ওঠে তার চেষ্টা। ছেলেবেলায় আগ্রহ নিয়ে বই পড়া চোখ এখনও নতুন কিছু করার সুযোগ খোঁজে। এ জন্যই হয়তো তিনি বলেন, ‘আগ্রহই তোমার সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার।’