যুবসমাজের আদর্শ সায়াদ
- লিডারশিপ ডেস্ক
এ যেন একের ভিতরে অনেক। সামাজিক কর্মকাণ্ড থেকে শুরু করে খেলাধুলা ও নাট্যচর্চা সমানভাবে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন একজন উদীয়মান তরুণ উদ্যোক্তা। পড়াশোনার প্রতি বরাবরই উদাসীন এই তরুণ নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন নিজের আগ্রহের ক্ষেত্রে। এখন তিনি এলাকাবাসী তথা যুবসমাজের অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় এক ব্যক্তিত্ব। মো. আবু সায়াদ আহমেদ চৌধুরী প্রতিবছর তরুণদের বিপথগামিতা থেকে দূরে রাখতে নিজ খরচে মাদক, সন্ত্রাস, ইভটিজিং ও বাল্য বিবাহ বিরোধী সমাবেশসহ বিভিন্ন টুর্নামেন্টের আয়োজন করছেন।
শুধু তাই নয়, একজন সংস্কৃতিমনা তরুণ হিসেবে এলাকায় রয়েছে তার ব্যাপক পরিচিতি। কিছুদিন আগে এটিএন বাংলার আয়োজনে নাট্যযুদ্ধ রিয়েলিটি শোতে দিনাজপুর জেলা দলের পরিচালক হিসেবে সারাদেশের মধ্যে দিনাজপুর জেলাকে সেরা ১০-এ উন্নীত করাতে সক্ষম হন। এছাড়া সমাজসচেনতামূলক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও নাটক নির্মাণ অব্যাহত রেখেছেন। ২০১১ সালে শিশুতোষ চলচ্চিত্র নির্মাণ করে জাতীয় পর্যায়ে প্রথম পুরস্কার লাভ করেন। শুধু কি তাই, এলাকার পতিত জমি ব্যবহার করেই তিনি স্থানীয় পর্যায়ে চাষ করছেন বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ। গড়ে তুলেছেন ডেইরি ফার্ম ও করছেন নেপিয়ার জাতের ঘাসের চাষ। সফল হয়েছেন স্থানীয় বেকার যুবকদের সঙ্গে নিয়ে। স্বীকৃতিস্বরূপ জুটেছে উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ মত্স্য চাষির সম্মান।
এখানেই থেমে নেই এই তরুণ উদ্যোক্তা। স্থানীয়ভাবে যুবকদের সচেতন করার কাজে যেভাবে তিনি আত্মনিয়োগ করেছেন ও এলাকায় ভালো কাজের পরিবেশ তৈরি করেছেন, তাতে করে এ বছর সরকারিভাবে উদযাপিত জাতীয় যুব দিবসে রংপুর বিভাগের একমাত্র প্রতিভাবান তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে গ্রহণ করেছেন জাতীয় যুব পুরস্কার। জাতীয় যুব পুরস্কার প্রাপ্তিতে গত ২৬ নভেম্বর দিনাজপুর জেলাবাসীর কাছ থেকে পেয়েছেন গণসংবর্ধনা। এই তরুণ উদ্যোক্তা দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলার চৌধুরী গোপালপুর গ্রামের কাজী শামসুল হুদা চৌধুরীর ও কাজী মাহাবুবা রহমানের পুত্র। যাকে সবাই সায়াদ চৌধুরী নামেই চেনে।
পড়াশোনার প্রতি উদাসীন থেকেও স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন এই তরুণ উদ্যোক্তা। তিনি বলেন, ‘বর্তমান প্রজন্মকে যদি সঠিকভাবে পরিচালিত করা যায়, তাহলে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ আরও একধাপ এগিয়ে যাবে।’ তাই তিনি এলাকার বেকার ও শিক্ষিত যুবকদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক ও উত্পাদনমুখী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। সায়াদ চৌধুরী বলেন, ‘সমাজের প্রতি প্রতিটি মানুষের যদি দায়বদ্ধতার বহিঃপ্রকাশ ঘটে, তাহলে কোনো সমস্যাই আর সমস্যা থাকবে না। আর বর্তমান যুবসমাজকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতে হলে, শুধু নিজেকে পাঠ্যাভ্যাসের মাধ্যমে ডুবিয়ে রাখলে হবে না। পাশাপাশি সামাজিক কর্মকাণ্ডে আত্মনিয়োগ করতে হবে এবং মাদকসহ যেকোনো প্রকারের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন, ‘এলাকার সকল পতিত জমি যদি শিক্ষিত ও বেকার যুবকেরা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করে তাহলে স্থানীয়ভাবে বেকার সমস্যা দূর হবে এবং সামাজিক দায়বদ্ধতাকে অগ্রাধিকার দিলে সফলতা আসবেই।’