বিশ্বকাঁপানো কিশোরীর গল্প

বিশ্বকাঁপানো কিশোরীর গল্প

  • লিডারশিপ ডেস্ক

মাত্র এক বছর আগেও স্টকহোমের ক্লাস নাইনের ছাত্রী ছিলেন ১৬ বছরের থানবার্গ। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে পৃথিবীজুড়ে দারুণ হৈচৈ ফেলে দিয়েছেন তিনি।

২০১৯ সালের পুরোটা সময়ই তিনি ছিলেন আলোচনার কেন্দ্রে। আর বিশ্বজুড়ে এখন সবচেয়ে পরিচিত মুখ। জাতিসংঘের শীর্ষ বৈঠকেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ বিশ্বনেতাদের একহাত নিয়েছেন তিনি। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে গ্রেটা থানবার্গই ধরতে গেলে বিশ্ববাসীকে নতুন করে ভাবার শিক্ষা দিয়েছেন।

২০১৯ সালে জলবায়ু বিষয়ে সবচেয়ে বড় খবরের জন্ম দিয়েছিলেন ১৭ বছরের ছোট মেয়েটিই। তার জন্যই খবরের কাগজগুলোর প্রথম পৃষ্ঠাতেই স্থান করে নিয়েছিল জলবায়ুবিষয়ক নানা খবর।

সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে গ্রেটা যে বক্তব্য রেখেছেন, তা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। তৈরি হয়েছে তার অগণিত অনুসারী, যার মধ্যে রাষ্ট্রপ্রধানরাও রয়েছেন। জলবায়ু নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সৌরবিদ্যুৎচালিত নৌকায় আটলান্টিক সাগর পাড়ি দিয়েছেন তিনি, তার সাক্ষাৎকার নিয়েছে অসংখ্য সংবাদমাধ্যম, নিজের একটি বিস্তারিত উইকিপিডিয়া পেজও রয়েছে তার।

এ বছরের গোড়ার দিকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের বাছাই তালিকায় নাম উঠেছিল তার। টাইম ম্যাগাজিনের বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব নির্বাচিত হয়েছেন।

এসব বাদ দিয়েও কিশোরী থানবার্গের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব হলো, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্বসম্প্রদায়ের মধ্যে সচেতনতা জাগানো। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতেও এখন জলবায়ু বিষয়টা বড় এক নিয়ামক হয়ে উঠেছে। প্রার্থীদের আলাদা করে চোখ রাখতে হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে ভোটারদের সম্ভাব্য বিভিন্ন প্রশ্নের দিকে।

গ্রেটা থানবার্গ জানিয়েছেন, তিনি প্রথমবার জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যার কথা যখন শোনেন, তখন তার বয়স ছিল ৮ বছর। তখনই তার মনে বিস্ময় জেগেছিল, কেন এ নিয়ে কেউ কিছু করছে না। জীবাশ্ম জ্বালানি নিস্কাশন বেআইনি ঘোষণা করা হচ্ছে না কেন, সে নিয়েও প্রশ্ন জেগেছিল তার মনে। ২০১৮ সালের মে মাসে সুইডেনের এক সংবাদপত্র আয়োজিত জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় তিনি প্রথম হন। তার প্রবন্ধ প্রকাশিত হওয়ার পর তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন কয়েকজন জলবায়ুকর্মী। তাদের মধ্যে একজনই গ্রেটা থানবার্গকে স্কুল ধর্মঘটের আইডিয়া দিয়েছিলেন।

থানবার্গের আন্দোলনের প্রভাব পড়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তরুণদের ওপর। সোচ্চার হয়ে উঠেছেন তারা বিশ্বব্যাপী অপরিমিত কার্বন নিঃসরণের বিরুদ্ধে। ২০১৯ সালের ১৫ মার্চ ১১২টি দেশের আনুমানিক ১৪ লাখ শিক্ষার্থী তার ডাকে সাড়া দিয়ে জলবায়ু প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে। চলতি বছর নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন। পুরস্কার পাননি, তবে এই কার্যক্রমের জন্য অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন ছোট্ট এই মেয়েটি।

সূত্র: সমকাল

Sharing is caring!

Leave a Comment