তাঁরা বাংলাদেশের প্রথম
শামীম রিমু : নানা বাধা পেরিয়ে এগিয়ে চলেছেন বাংলাদেশের অকুতোভয় নারীরা। রাষ্ট্র পরিচালনা থেকে শুরু করে পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বত এভারেস্টের চূড়ায় ওঠা- জীবনের সবক্ষেত্রে সাফল্যকে বরণ করছেন তাঁরা। বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রথম কয়েকজন পথিকৃৎ নারীকে নিয়ে এই প্রতিবেদন।
১. প্রথম এভারেস্টজয়ী
- ২০১২ সালের ১৯ মে সকাল ০৯টা ৩০ মিনিট সময়ে এভারেস্ট শৃঙ্গ জয় করেন নিশাত মজুমদার। বর্তমানে নিশাত মজুমদার ঢাকা ওয়াসায় হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। ২০০৩ সালে কেওক্রাডং জয় করেন। ২০০৬ সালের মার্চে বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে বিএমটিসি আয়োজিত বাংলাদেশের নারী অভিযাত্রী দলের সঙ্গে ফের কেওক্রাডং চূড়ায় ওঠেন তিনি। ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে হিমালয়ের মেরা পর্বতশৃঙ্গ (২১ হাজার ৮৩০ ফুট) জয় করেন। এভারেস্ট অভিযানের প্রস্তুতি হিসেবে পরের বছরের মে মাসে হিমালয়ের সিঙ্গুচুলি পর্বতশৃঙ্গে (২১ হাজার ৩২৮ ফুট) ওঠেন। একই বছরের সেপ্টেম্বরে তিনি ভারতের উত্তর কাশীর গঙ্গোত্রী হিমালয়ের গঙ্গোত্রী-১ পর্বতশৃঙ্গে (২১ হাজার ফুট) বাংলাদেশ-ভারত যৌথ অভিযানে অংশ নেন। নিশাত ২০০৯ সালের এপ্রিলে পৃথিবীর ৫ম উচ্চতম শৃঙ্গ মাকালুতে (২৭ হাজার ৮৬৫ ফুট) ভারত-বাংলাদেশ যৌথ অভিযানে অংশ নেন। বিএমটিসি আয়োজিত হিমালয়ের চেকিগো নামের একটি শৃঙ্গেও সফল অভিযানে যান। ১৯৮১ সালের ৫ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন এই অকুতোভয় নারী। ১৯৯৭ সালে ঢাকার ফার্মগেটের বটমূলী হোম উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, ১৯৯৯ সালে শহীদ আনোয়ার গার্লস কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক এবং পরবর্তীতে ঢাকা সিটি কলেজ থেকে হিসাববিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন।
২. প্রথম গারো এ্যাডভোকেট
- বাংলাদেশের গারো জাতির মেয়েদের মধ্যে প্রথম এ্যাডভোকেট বালমি চিসিম তোড়া। বালমি আইন নিয়ে এলএলবি ও এলএলএম পড়াশুনা সম্পন্ন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তার বাবার নাম শুভ্র আরেং ও মায়ের নাম মল্লিকা চিসিম। গ্রামের বাড়ি দুর্গাপুরের বিরিশিরি। বর্তমানে তিনি ওয়াইডব্লিউসিএ এর মাধ্যমে নারী অধিকার নিয়ে কাজ করছেন। এরই মধ্যে সংগঠনটির প্রতিনিধি হিসেবে বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন।
.
৩. প্রথম ট্রেইন চালক
- ২০০৪ সালের ৮ই মার্চ চাকরিতে যোগ দেন সালমা খাতুন। সালমার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুরের অর্জুনা গ্রামে। বাবা প্রয়াত বেলায়েত হোসেন খান। মা সায়রা বেগম। তিন ভাই, দুই বোনের মধ্যে সালমা খাতুন চতুর্থ। তিনি অর্জুনা মহসীন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০০ সালে এসএসসি ও ২০০২ সালে কুমুদিনী সরকারি কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে এইচএসসি পাস করেন। এরপর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগে সম্মান শ্রেণীতে ভর্তি হন। ২০০৩ সালের ১৮ই জুলাই রেলওয়ের রাজশাহী জোনাল অফিসে টাঙ্গাইল জেলা থেকে আরও ১৩৪ জন পরীক্ষার্থীর সঙ্গে তিনিও লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। ঢাকার ১৭টি জেলা থেকে মাত্র দু’জন মেয়ে আবেদনকারী ছিলেন। ওই বছর ২৮শে সেপ্টেম্বর তার বাড়ির ঠিকানায় আসে মৌখিক পরীক্ষার চিঠি। ২০০৪ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারি হাতে পান নিয়োগপত্র। এটিই ছিল তার জীবনে চাকরির প্রথম আবেদন এবং সফলতা। নিয়োগের পর টানা দু’বছর সালমা চট্টগ্রামের হালিশহর প্রশিক্ষণ একাডেমী, পাহাড়তলী ও ঢাকা লোকোমোটিভ শেডসহ বিভিন্ন ওয়ার্কশপে হাতে-কলমে শিক্ষা নেন। দুই বছরের প্রশিক্ষণ শেষে ঢাকা লোকোমোটিভ বিভাগে যোগ দেন। এরপর থেকে তিনি চালকের সঙ্গে ট্রেন চালান।
.
৪. প্রথম ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার
- সারিয়া তানজিম সুমনার জন্ম এবং বড় হওয়া ঢাকার আগারগাঁও তালতলার সরকারি কলোনিতে। চার ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট । ২০০১-এর শেষের দিকে ন্যাশনাল ক্যাম্প আয়োজন করে বিসিবি। তার পরপরই ছয় বছরের জন্য খেলা বন্ধ হয়ে যায় মেয়েদের। ২০০৭-এ যখন জাতীয় মহিলা ক্রিকেট আবার চালু হয় তখন প্রথম ১৮ জনের মধ্যে নির্বাচিত হওয়ার পরেও অনার্স ফাইনাল পরীক্ষার কারণে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে খেলার সুযোগ হয়নি তার। তবে আরও তিন বছর ক্লাব টুর্নামেন্ট এবং জেলা ও বিভাগীয় ক্রিকেট খেলেন মৌলভীবাজার এবং বরিশালের হয়ে। চাকরির ব্যস্ততা এবং বেশ কিছু ইনজুরির কারণে যখন ২০১১-এর শুরুর দিকে খেলা সম্পূর্ণভাবে থামিয়ে দিতে হয়, বিপদে পড়েন সুমনা। ১১ বছর ধরে শয়নে-স্বপনে যেই ক্রিকেট, সেই ক্রিকেট ছাড়া জীবন কীভাবে কাটবে বুঝতে পারে না সে। ঠিক এ সময়ই মহিলা দলের আন্তর্জাতিক খেলায় খোদা বক্স মৃধা এবং চৌধুরী জাফরুল্লাহ সারাফতের সঙ্গে ধারাবিবরণী করার জন্য ডাক পড়ে। স্বপ্ন দেখেন বেতারে জাতীয় পর্যায়ে ধারাভাষ্য দেওয়ার। কিন্তু তার আবেদন রহস্যজনকভাবে বেতার দপ্তরে ‘হারিয়ে’ যায়। একই সঙ্গে হারায় সহ-ধারাভাষ্যকার নাফিজের। বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রতিভাবান দুই ধারাভাষ্যকারকে হারিয়ে আমলাতন্ত্র এবং দুর্নীতির জালে হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। ঠিক এই সময় বেসরকারি রেডিও চ্যানেল রেডিও ভূমিতে খেলার ধারাবিবরণী দেওয়ার জন্য ডাক পড়ে দুজনের। ভূমিতে সুমনার ধারাভাষ্য যাঁরাই শুনেছেন তাঁরাই বলবেন যে মাত্র কিছুদিনের মধ্যেই সুমনা দেশের শ্রেষ্ঠ ধারাভাষ্যকারদের মাঝে নিজের নাম লিখিয়ে নেবেন। খেলার বাইরে বাড়তি কথা বলার অভ্যাস নেই। মাঠে যা হচ্ছে সেটাকে গুছিয়ে বর্ণনা করায় কারো থেকে কোন অংশে কম যান না তিনি।
.
৫. প্রথম আলোকচিত্রী
- সাইদা খানম বাংলাদেশের প্রথম নারী আলোকচিত্রী। ১৫ বছর বয়সে হাতে তুলে নেন ক্যামেরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্য ও লাইব্রেরি সায়েন্সে মাস্টার্স করেন। ১৯৫৬ সালে ঢাকায় আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে অংশ নেন সাইদা খানম। সাইদা খানম ছবি তোলা শুরু করেন ১৯৪৯ সাল থেকে। যেখানেই সুযোগ পেয়েছেন সেখানেই প্রদর্শনী বেগম’ পত্রিকার মাধ্যমে সাইদা খানম আলোকচিত্র সাংবাদিক হিসেবে কাজ শুরু করেন। তাঁর ছবি ছাপা হয় ‘অবজারভার’, ‘মর্নিং নিউজ’, ‘ইত্তেফাক’, ‘সংবাদ’সহ বিভিন্ন পত্রিকায়। আলোকচিত্রী হিসেবে দেশেও দেশের বাইরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংশ নেন তিনি। তার ক্যামেরায় ফ্রেমবন্দি হয়েছেন রানি এলিজাবেথ, মাদার তোরেসা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, নিল আর্মস্ট্রংয়ের মতো ব্যক্তিত্বরা। সাঈদা খানম ১৯৩৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন। পৈত্রিক বাড়ি ফরিদপুরে। তাঁর বাবা মৌলবি আব্দুস সামাদ খান শিক্ষা বিভাগে কাজ করতেন। ফটো সাংবাদিক হিসাবে দীর্ঘ ক্যারিয়ারে সাইদা খানমের তোলা প্রায় ৩ হাজার ছবি প্রকাশিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের পর হাসপাতালে নার্স সংকট দেখা দিলে তিনি হলিফ্যামিলি হাসপাতালে স্বেচ্ছাসেবী নার্সিং-এর কাজ করেছেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় তিনি সেবামূলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। নিজেও তিনি পাকিস্তান শাসনামলে ছাত্র গণআন্দোলনে পরোক্ষভাবে কাজ করেছেন।
.
৬. প্রথম প্রধানমন্ত্রী
- তিনি বাংলাদেশের প্রথম ও মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী তিনি ১৯৯১-১৯৯৬ সাল এবং ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। বেগম খালেদা জিয়ার প্রকৃত নাম খালেদা খানম, ডাক নাম পুতুল। আগস্ট ৫, ১৯৪৬ সালে জলপাইগুড়িতে জন্ম গ্রহণ করেন। তিন বোন এবং দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি তৃতীয়। ভাইয়েরা সবার ছোট। তাঁর পিতামহ হাজী সালামত আলী, মাতামহ তোয়াবুর রহমান। বাবা জনাব ইস্কান্দর মজুমদার এবং মা বেগম তৈয়বা মজুমদার। তার স্বামী বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি লেফটেন্যান্ট জেনারেল জিয়াউর রহমান বীরউত্তম। স্থায়ী নিবাস দিনাজপুর শহরের মুদিপাড়া। খালেদা জিয়ার স্কুলজীবন শুরু হয় পাঁচ বছর বয়সে দিনাজপুরের মিশন স্কুলে। এরপর দিনাজপুর গার্লস স্কুলে ভর্তি হন। তিনি এই স্কুল থেকেই অষ্টম শ্রেণী পাশ করেন। ১৯৮১ সালের ৩০ মে এক ব্যর্থ সামরিক অভুত্থ্যানে জিয়াউর রহমান নিহত হন। এরপর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা কর্মিদের আহ্ববানে তিনি ১৯৮২ সালে ৩ জানুয়ারি বিএনপিতে যোগ দেন। ১৯৮৩ সালের মার্চ মাসে তিনি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন।
.
৭. প্রথম স্পিকার
- তিনি নবম জাতীয় সংসদের স্পিকারসহ বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম নারীস্পিকার হিসেবে এপ্রিল, ২০১৩ তারিখে নির্বাচিত হয়েছেন। ৪৬ বছর বয়সে তিনি সর্বকনিষ্ঠ স্পিকাররূপে সাবেক স্পিকার ও বর্তমান রাষ্ট্রপতি এডভোকেট আব্দুল হামিদের স্থলাভিষিক্ত হন। শিরীন শারমিন চৌধুরী ১৯৬৬ সালের ৬ অক্টোবর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। নোয়াখালী জেলার চাটখিলের সিএসপি অফিসার ও বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব রফিকুল্লাহ চৌধুরীর কন্যা তিনি। আর মা ছিলেন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ ও বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য প্রফেসর নাইয়ার সুলতানা। শিরীন শারমিন চৌধুরী ১৯৮৩ সালে ঢাকা বোর্ডে মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় সম্মিলিত মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। ১৯৮৫ সালে এইচএসসি একই বোর্ডে মানবিক বিভাগে সম্মিলিত মেধা তালিকায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন। ১৯৮৯ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ও ১৯৯০ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলএম-এ প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। শিরীন শারমিন চৌধুরী একজন কমনওয়েলথ স্কলার। ২০০০ সালে তিন যুক্তরাষ্ট্র এসেক্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে পিএইচডি লাভ করেন। তার গবেষণার বিষয়বস্তু হল সংবিধানিক আইন ও মানবাধিকার। এলএলএম পাশ করার পর তিনি ১৯৯২ সালেই বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে তালিকাভুক্ত আইনজীবী হিসেবে যোগদান করেন।
.
৮. প্রথম ক্যাপটেন
- বাংলাদেশের প্রথম নারী ছত্রীসেনা জান্নাতুল ফেরদৌসের বাড়ি ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামে। ব্যবসায়ী বাবা ও মা গৃহিণী। চার ভাই বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়।জান্নাতুল ফেরদৌস বর্তমানে মিলিটারি একাডেমির কম্পিউটার প্রশিক্ষক হিসেবে কর্মরত। তিনি ২০০৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর ৫৯তম বিএমএ লং কোর্সের মাধ্যমে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।২০০৭ সালে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির (বিএমএ) ৫৯তম ব্যাচের ক্যাডেট হিসেবে সেনাবাহিনীতে তাঁর যাত্রা শুরু করেন। তিনি বর্তমানে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন।বাংলাদেশে প্রথম নারী ছত্রীসেনা (প্যারাট্রুপার) হিসেবে তিনি সফলভাবে এক হাজার ফুট উঁচু থেকে অবতরণের সম্মান অর্জন করেছেন। ২০১২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টা ২০মিনিটে তিনি সিলেটের জালালাবাদ সেনানিবাসের পানিছড়া এলাকায় বিমানবাহিনীর একটি বিমান থেকে প্যারাসুটের মাধ্যমে সফলভাবে মাটিতে অবতরণ করেন।
.
৯. প্রথম পাইলট
- বাংলাদেশের প্রথম নারী পাইলট ইয়াসমিন রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৩ মার্চ। বাবা ছিলেন তত্কালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ডাক্তার। বাবার কর্মস্থলের সুবাদে তার শৈশব-কৈশোরের বেশিরভাগ সময় পশ্চিম পাকিস্তানেই কেটেছে। পশ্চিম পাকিস্তানে ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ও লাহোর কলেজ থেকে তিনি এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। ১৯৬৯ সালে তিনি ঢাকায় বুয়েটে ভর্তি হন। এ সময় তার মামার উত্সাহে তিনি আর্কিটেকচারে ভর্তি হন। বুয়েটে পড়ার সময়ই তিনি ফ্লাইং ক্লাবে যোগ দেন। ইয়াসমিন ছিলেন খুবই আত্মবিশ্বাসী। আর্কিটেক্টের বিভিন্ন প্রজেক্টে কাজ করতে শুরু করেন। এভাবেই কিছু টাকা জমিয়ে তিনি ফ্লাইং ক্লাবে ভর্তি হয়ে যান। এক্ষেত্রে ভাগ্যও তার কিছুটা সহায় হয়। সে সময় পাইলটদের প্রশিক্ষণের জন্য একটা সাবসিডি স্কিম চালু হয়। ২৫ জনকে এর জন্য সিলেক্ট করা হয়। ভাগ্যক্রমে ইয়াসমিন বাছাইকৃতদের একজন ছিলেন। এভাবেই চলে তার ফ্লাইং প্রশিক্ষণ।১৯৭৬ সালে তিনি গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেন। ১৯৭৮ সালে তিনি সিপিএল লাইসেন্স পান। এরপর বাংলাদেশ বিমানে পাইলট হিসেবে যোগ দেন তিনি। ২০০৯ সালে তিনি অবসরে যান। ১৯৭৮ সালে ফ্লাইং ক্লাবে প্রথম কোনো নারী প্রশিক্ষণ নিতে আসেন।