নারী : হয়ে উঠুক পথপ্রদর্শক
- স্বর্ণা কাজী
“সংসার সুখের হয় রমনীর গুণে”- এটি অনেক পুরানো একটি প্রবাদ। আজকের রমনীরা চারদেয়ালের মধ্যেই শুধু সীমাবদ্ধ নয়, তারা আজ আপন আলোয় পথ চলতেশিখেছে।এই রমনীরা খুব চ্যালেঞ্জিং মানসিকতার হয়ে থাকেন।তারা এখন আর শুধু স্ত্রী বা মায়ের ভূমিকাই পালন করছেন না, আত্নপরিচয় গঠনে হয়ে উঠেছেন সচেষ্ট।
বর্তমানে অনেক নারীই নিজস্ব ব্যবসার প্রতি ঝুঁকে পড়ছেন।সংসারে কাজের চাপ, চাকরীর বাজারের মন্দা, চাকরী ক্ষেএের পরিবেশ নিয়ে সংশয়, সর্বোপরি নিজস্ব উদ্যোগে স্বাধীনভাবে উপার্জনের চিন্তা- সাধারণত এই কারণগুলোর জন্যই অনেক নারীই গড়ে তুলছেন নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।এতে যে শুধু মাএ তারাই লাভবান হচ্ছেন তা নয়, তারা অন্যদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করছেন।
এমন উদ্যোগী নারীদের জন্যই আজকের এই কলামটি। আপনাদের জন্য আজ রয়েছে কিছু টিপস্ , যা নিজস্ব ব্যবসা শুরু করতে আপনাকে সাহায্য করবে।
হয়ে উঠুন প্যাশোনেট
- যে কোন ব্যবসা করতে হলে আপনাকে আগে প্যাশোনেট হতে হবে, খুঁজে বের করতে হবে নিজের আগ্রহের জায়গাটি। আর তাহলেই শুধুমাএ আপনি হয়ে উঠতে পারবেন একজন সফল উদ্যোক্তা। কেননা, যখন আপনি নিজের পছন্দের জায়গাটি খুঁজে পাবেন তখন আপনার ক্রেতাদের পছন্দ এবং তাদের চাহিদা বুঝতে পারবেন।আর কথায় আছে- “ক্রেতা ব্যবসার লক্ষী”।
ব্যবসা ও ব্যাক্তিগত জীবনে ব্যালেন্স আনুন
- নারীদের সফল ববসায়ী হয়ে উঠার পিছনের গল্পটি খুব একটা সহজ নয়, কোন কোন ক্ষেএে পুরুষের থেকেও কঠিন।কিন্তু যদি আপনি ব্যবসা ও ব্যক্তিগত জীবনে ব্যলেন্স আনতে পারেন, তবেই আপনার জন্য তা হবে সহজ। ব্যবসা করতে হলেই যে সারাদিন আপনাকে কাজ করতে হবে তা কিন্তু নয়।আপনি যদি বুটিকস বা কনসালটেন্সির ব্যবসা করেন তা হলে আপনাকে সারাদিন কাজ না করলেও চলবে।এতে আপনি আপনার পরিবারকেও সময় দিতে পারবেন। কিন্তু আপনাকে প্রথমেই জানতে হবে ব্যবসা থেকে আপনি কি চান? শুধুই স্বাধীন পরিচলনা নাকি অর্থ? না দুটোই?
কর্মজীবন ও ব্যক্তিগত জীবনের মাঝে টানুন সীমারেখা
- কর্মজীবী নারীদের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।কর্মস্থানে যেমন কাজকে প্রাধান্য দেয়া উচিত, তেমনি ব্যক্তিগত জীবনে নিজেকে এবং পরিবারকে প্রাধান্য দেয়াটা ভীষন দরকার।তাই সীমারেখা টানুন এদু’টোর মাঝে।মনে রাখবেন, আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি যেমন আপনার আত্নপরিচয় বহন করে, তেমনি আপনার পরিবারও এই আত্নপরিচয় অর্জনে আপনার অনুপ্রেরণা এবং শক্তি।
প্রযুক্তিকে যথাযথ ব্যবহার করুন
- বর্তমানের প্রযুক্তি নির্ভর বিশ্বে প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার ছাড়া ব্যবসায় সফল হওয়া সম্ভব নয়।তাই প্রযুক্তি ব্যবহার করুন। নিয়মিত অনলাইনে কানেকটেড থাকুন আপনর ক্রেতাদের সাথে।এতে আপনার ব্যবসার প্রচার ও প্রসার দুটোই ঘটবে।
নিজের চারপাশে গড়ে তুলুন বিস্তর পরিচিতি
- একাকী ব্যবসা পরিচালনা করা খুবই কঠিন একটি কাজ। তাই ব্যবসায় সফল হতে হলে আপনাকে অবশ্যই পরিচিতি বাড়াতে হবে। শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই নয়, যোগাযোগ স্থাপন করুন নারী কল্যাণ সংস্থার মতো বিভিন্ন সংস্থা ও এনজিও-র সাথে। এতে আপনার ব্যবসার প্রসারের সাথে সাথে আপনি পেতে পারেন বিভিন্ন সাহায্য-সহযোগিতা ও সমর্থন, যা আপনার ব্যবসার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার ব্যবসাকে সঠিকভাবে তুলে ধরুন
- ব্যবসায় সফলতা পেতে হলে তাতে স্পষ্টতা এবং স্বচ্ছতা থাকাটা জরুরী। আপনার ব্যবসার উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য, এর ব্র্যান্ড, লোগো, রং, পরিবেশনা সবকিছুই সঠিকভাবে সকলের সামনে তুলে ধরুন। এতে আপনি অর্জন করতে পারবেন মানুষের বিশ্বাস ও আস্থা, যা যে কোন ব্যবসার প্রথম ও প্রধান পুঁজি।
নিজ উদ্যোগে ব্যবসা শুরু করাটা কঠিন-ই বটে। অবশ্য যে কোন কিছুর শুরুটা কঠিনই হয়। তবে সেই চ্যালেঞ্জটা গ্রহণ করতে পারেন আপনিও।ভুলে যাবেন না, “যে রাঁধে, সে চুলও বাঁধে”। আপনি ও হয়ে উঠতে পারেন আরও দশজন চ্যালেঞ্জিং নারীর পথ প্রদর্শক।তাই শুরুটা না হয় আপনিই করুন!