শিক্ষকতা একটি মহান পেশা : জাকিয়া সুলতানা

শিক্ষকতা একটি মহান পেশা : জাকিয়া সুলতানা

  • লিডারশিপ ডেস্ক

২০১৬ সালের জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে ‘শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধান’ নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি মাদারীপুরের ডাসার থানার সরকারি শেখ হাসিনা একাডেমি অ্যান্ড উইমেন্স কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ছাত্রজীবন শেষ করে শিক্ষকতাকে জীবনের ব্রত হিসেবে জ্ঞান করে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি। দীর্ঘ ২০ বছরের শিক্ষকতা জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেছেন জাকিয়া সুলতানা। 


‘শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধান’ নির্বাচিত হওয়ার অনুভূতিটা কেমন?
জাকিয়া সুলতানা : ঢাকা বিভাগের মধ্যে ‘শ্রেষ্ঠ কলেজ’ নির্বাচিত হয়েছে আমাদের সরকারি শেখ হাসিনা একাডেমি অ্যান্ড উইমেন্স কলেজ এবং ‘শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধান’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছি আমি। বিষয়টি অনেক আনন্দের। তবে অনেক ভাবনারও বলতে পারেন। কেননা দায়িত্ব আরো বেড়ে গেল। আরো যচেষ্ট হতে হবে প্রতিষ্ঠানের মান অক্ষুণ্ন রাখতে হলে।

কবে এই কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করেন?
জাকিয়া সুলতানা : ২০১১ সালের ০১ মার্চ সরকারি শেখ হাসিনা একাডেমি অ্যান্ড উইমেন্স কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করি। তখন এটি বেসরকারি কলেজ হিসেবে পরিচালিত হতো। পরে ২০১৫ সালের ১৩ নভেম্বর কলেজটিকে সরকারীকরণ করা হয়।  সরকারীকরণের একবছর হতে না হতেই আমরা এ গৌরব অর্জন করতে পেরেছি বলে নিজেও গর্বিত।

আপনার শিক্ষাজীবন সম্পর্কে যদি কিছু বলতেন-
জাকিয়া সুলতানা : আসলে আমার জন্ম, শৈশব, পড়াশোনা সব চট্টগ্রামের রাংগুনিয়াতে। বাবা গাজী আব্দুল মান্নান সরকারি চাকরিজীবী ছিলেন। ফলে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করতে হয়েছে। সবশেষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকর্ম বিভাগে ভর্তি হই । ১৯৯০ সালে অনার্স, ১৯৯১ সালে মাস্টার্স শেষ করি। এছাড়া খুলনা থেকে ১৯৯২ সালে বি.এড শেষ করি।

আপনার প্রথম কর্মজীবন কোথায়?
জাকিয়া সুলতানা : ১৯৯৬ সালে বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জের রওশান আরা মহিলা ডিগ্রি কলেজের মাধ্যমে শিক্ষকতা পেশা শুরু করি। রওশান আরা মহিলা ডিগ্রি কলেজে ১০ বছর শিক্ষকতা করার পরে ২০০৯ সালে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার কয়ারিয়া এসপিএস টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে যোগদান করি। সেখানে দুই বছর চাকরি করার পর সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন প্রতিষ্ঠিত ডাসার শেখ হাসিনা একাডেমি অ্যান্ড উইমেন্স কলেজে যোগদান করি। এখন পর্যন্ত এই কলেজেই কর্মরত আছি।

পেশা হিসেবে শিক্ষকতাকে কীভাবে মূল্যায়ন করেন?
জাকিয়া সুলতানা : শিক্ষকতা একটি মহান পেশা। শিক্ষক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। পেশাগত জীবনের শুরু যেহেতু শিক্ষক হিসেবে, তাই এ পেশায় থেকেই কর্মজীবন শেষ করতে চাই।  শিক্ষার বিস্তৃত অঙ্গনে জীবনটা কাটিয়ে দিতে চাই।

শিক্ষকতার বাইরে আর কোনো গুণ থাকলে-
জাকিয়া সুলতানা : ছোটবেলা থেকে আমার নাচের প্রতি খুব আগ্রহ ছিলো। পাশাপাশি কবিতা আবৃত্তি, বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতাম নিয়মিত। কিন্তু গান গাইতে পারি না। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বক্তৃতা এবং ডিবেটে বরাবরই প্রথম হতাম। এছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ধানী এবং রোটারি ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আমি।

প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে দায়িত্বানুভূতি কেমন?
জাকিয়া সুলতানা : এ প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে আমি নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি।  এখানকার শিক্ষার্থীদের কতটুকু দিতে পেরেছি জানি না। তবে আমার মনে হয়, একজন প্রতিষ্ঠান প্রধানকে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ঠিক রেখে পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে।

প্রতিষ্ঠান নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
জাকিয়া সুলতানা : কলেজের প্রতিষ্ঠাতার পরিকল্পনা ছিল শেখ হাসিনা একাডেমি অ্যান্ড উইমেন্স কলেজকে সরকারীকরণ করবেন।  তিনি সেটা বাস্তবায়ন করেছেন।  এখন আমি এই প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করবো।  যেহেতেু আমাদের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা অত্যন্ত মেধাবী।  এছাড়া শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রেও আমরা মেধার মূল্যায়ন করি। আমরা সিলেবাসের বাহিরেও ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা নিয়ে থাকি। যাতে বিসিএসসহ যেকোনো ভর্তি পরীক্ষা এবং চাকরির পরীক্ষার জন্য কোনো অসুবিধা না হয়।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে আপনার বক্তব্য কী?
জাকিয়া সুলতানা : মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করে দেশের উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে নিজকে গড়ে তুলতে হবে। দেশের প্রতি ভালোবাসা নিয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
জাকিয়া সুলতানা :  ধন্যবাদ। আপনাদের সবার প্রতি সীমাহীন ভালোবাসা রইল।

সূত্র : জাগো নিউজ  favicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment