‘সফল হতে হলে চ্যালেঞ্জ নেয়ার মানসিকতা থাকতে হবে’
- লিডারশিপ ডেস্ক
রেবেকা সুলতানা। অগ্রণী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক। কমলাপুর শাখা প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন। এই মেধাবী নারী ছোটবেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। তবে বাস্তব জীবনে হয়ে গেছেন ব্যাংকার।
রেবেকা সুলতানার বাবা-মা চেয়েছেন বড় হয়ে মেয়ে ডাক্তার হবে। মেয়েটির মন তাতে সায় দেয়নি। রেবেকা চেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে। সব ইচ্ছে তো আর পূরণ হয় না। তার বেলায়ও সেটাই হয়েছে। শেষে কীনা হয়ে গেলেন ব্যাংকার!
ময়মনসিংহের এই মেয়ে এসএসসি করেছেন বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে। এইচএসসি মুমিনুন্নিছা সরকারি মহিলা কলেজ থেকে। আর স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে। সবক্ষেত্রেই কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন।
শিক্ষাজীবনে ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। সেই নেতৃত্ব গুণ কর্মজীবনে এসে ভালোই কাজে লাগছে বলে জানালেন। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। স্বামী শাহে আলম মুরাদ রাজনীতি করেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তিনি। একমাত্র সন্তান রিফায়েত আলম ঋভু ম্যাপললিফ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে এ লেভেলে পড়ছেন।
কথা প্রসঙ্গে রেবেকা সুলতানা বলেন, দেশের সকল ক্ষেত্রেই নারী আজ এগিয়ে চলছে। দেশ ও সমাজকে অগ্রসর করে নিয়ে যাচ্ছে। নারীর অগ্রগতি হলে দেশের অগ্রগতি হয়। নারীর উন্নয়ন হলে দেশ ও সমাজের উন্নয়ন হয়। তিনি বলেন, নিজেকে কখনো নারী হিসেবে চিন্তা করি না। আমি নিজেকে মানুষ মনে করি। সফল হতে হলে দায়িত্ব আর চ্যালেঞ্জ নেয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার পাশাপাশি সামনের সম্ভাবনাও বুঝতে হবে। সততার সঙ্গে সাহস নিয়ে তা মোকাবেলা করতে হবে।
রেবেকা সুলতানা বলেন, দেশের ব্যাংকি খাতসহ সকল ক্ষেত্রেই নারীর ক্ষমতায়ন হয়েছে। তবে পদায়ন হয়েছে বেশি। সংখ্যার দিক দিয়ে বেড়েছে। তবে ক্ষমতায়ন হয়েছে এমনটা পুরোপুরি বলা যাবে না। এখনো নারী প্রতিনিয়ত লড়াই করছে অধিকার আদায়ে। তবে আমি আশাবাদী, সামনে ভালো দিন অপেক্ষা করছে।
তিনি বলেন, কোনো নারী সামনের দিকে যেতে চাইলে ব্যক্তিত্ব, চারিত্রিক দৃঢ়তা আর সাহস থাকতে হবে। যদি নিজের ভিতর সাহস, বিশ্বাস না থাকে তাহলে তিনি কোনো অবস্থাতেই নির্দিষ্ট জায়গায় যেতে পারবেন না।
সংসার আর চাকরি দুটোই সামলাতে হয়। কেমন করে সম্ভব? জানালেন, একজন পেশাজীবী নারীকে কেবল কর্মক্ষেত্রেই নয় নানা জায়গায় নানান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়। তবে আমার শ্বশুর বাড়ির লোকজন সবসময় আমাকে উত্সাহ দেয়। আমার স্বামীও আমাকে সাপোর্ট দেয়। পরিবার আমার পাশেই আছে।
তিনি জানালেন, নারীকে মানুষ হিসেবে দেখতে হবে। এটা বলতেই হবে, একবিংশ শতকের উন্নয়নের বাহক হচ্ছে নারী। আমরা সেটা ভুলে যাই। যুগ যুগ ধরে নারী কাজ করে যাচ্ছে। নারীর কাজের স্বীকৃতি দিতে হবে। পেশাকে পেশার মতো দেখতে হবে, সেখানে নারী-পুরুষ হিসেবে আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই।