সফল নারী উদ্যোক্তা ফারজানা আখি

সফল নারী উদ্যোক্তা ফারজানা আখি

  • লিডারশিপ ডেস্ক

পিছিয়ে থাকার সময় অনেক আগেই শেষ হয়েছে। তাইতো শূন্য হাতে শুরু করে এখন সফল উদ্যোক্তা। তবে এই সফলতার পেছনে রয়েছে শ্রম ও আনন্দ সুখের অনেক কাব্য। তাদেরই একজন বুটিক হাউস ‘আখি’স’এর স্বত্বাধিকারী ফারজানা আখি। তিনি জানিয়েছেন শখ নিয়ে সময় কাটানো থেকে সফল উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প।

৯৯ সালের কথা। মাত্র আড়াই হাজার টাকা নিয়ে আখি ঘরে বসেই নিজ হাতে হরেক ডিজাইনের সালোয়ার-কামিজ সেলাই করতে লাগলেন। বাজার থেকে শাড়ি কিনে তাতে হাতের কাজ করতেন। যারা তার ক্রেতা ছিলেন পোশাক পরার পর তারা তার প্রশংসা করতেন। ক্রেতাদের প্রশংসা তার মনোবল আরো বাড়িয়ে দেয়। সময়ের সাথে অর্ডার বাড়তে থাকে। কিন্তু পুজি না থাকায় আটকে যান।কিন্তু থেমে থাকেননি। বন্ধুদের সহযোগিতায় এগিয়ে যেতে থাকেন। অল্প অল্প করে বাড়তে থাকে পরিচিতি। এরই মধ্যে বাটিক ও নকশার কাজ করা সালোয়ার-কামিজ, থ্রিপিস, শাড়ি, বিছানার চাঁদর, কুশন কভার, শাল চাদরের ব্যাপক চাহিদা বাড়তে লাগল। পরিস্থিতি বলে দিল একটি দোকান ঘর নেবার।

সফল নারী উদ্যোক্তা ফারজানা আখি
সফল নারী উদ্যোক্তা ফারজানা আখি

কিন্তু পুজি সংকটে ঘাবড়ে যান। সর্বশেষ দারস্থ হন ব্যাংকের। সেখানে থেকে প্রথমে মাত্র আড়াই লাখ টাকা ঋন নিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে একটি দোকান দেন। নাম দিলেন ‘আখি’স’এরপর আর তাকে পেছন তাকাতে হয়নি। আলাদীনের চেরাগের যাদুর মতো দ্রুত বদলে গেল সব। তার ডিজাইন করা কাপড়ের চাহিদা এমন বেড়ে গেল যে অর্ডার ডেলিভারি দিতে তাকে হিমশিম খেতে হয়। আখি বলেন, অল্প দিনেই এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ল ‘আখি’স’ এর পরিচিতি। তখন রাজধানীতে নারী উদ্যোক্তাদের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। তিনি বলেন, ‘নিজেই ব্যবসাতে বসতাম। কাঁচামাল কিনতাম। নিজেই ব্যাংক করতাম। নিজেই পাইকারি অর্ডার নিতাম। একজন নারী হয়ে দোকানে বসে ক্রেতা সামলানোর বিষয়টি তখন অনেকেই ভালো চোখে দেখেনি। কিন্তু বাবা-ভাই-বোন উৎসাহ দিতেন। এসবের মধ্যে ভাগ্য খুলে যায়। ক্রেতাদের ভালবাসায় মাথায় ব্যবসার পোকা ঢুকে যায়। মনস্থির করি, আমাকে ব্যবসায় সফল হতে হবে। সেই যুদ্ধ শুরু। এরপর প্রায় শূন্য থেকে আজকের এই অবস্থান।

তিনি জানান, ব্যবসার পাশাপাশি সংসারের দেখভাল করতে হয়েছে। ফলে অবসর বলে কিছু ছিল না। তবে ব্যবসা মেয়েদের জন্য খুব কঠিন, এমনটি কখনো মনে হয়নি। চেষ্টা থাকলে যেকোনো নারীই ব্যবসা বা কর্মক্ষেত্রে সফল হতে পারবেন।’ এসব কথা যখন বলছিলেন, তখন তার মুখে সাফল্যর তৃপ্তির হাসি। বললেন, ‘পরিচিত কোনো মেয়ে যখন চাকরি করার কথা বলেন, আমি তাঁদের উৎসাহ দিই ব্যবসা করো। কারণ, আমাদের একটাই লক্ষ্য, চাকরি করব না, চাকরি দেব। তার মতে কেউ যদি শতভাগ সততার সঙ্গে কাজ করে, সাফল্য তার মুঠোবন্দী হতে বাধ্য। favicon59

 

Sharing is caring!

Leave a Comment