কুলি থেকে প্রেসিডেন্ট
- লিডারশিপ ডেস্ক
লন্ডনের ভিক্টোরিয়া স্টেশনে অন্য সব পরিচ্ছন্নতাকর্মীর মতো তিনিও করতেন ঝাড়ামোছার কাজ। সুযোগ পেলে করতেন কুলির কাজও। এভাবে চলত তাঁর দিন। বড় হওয়ার স্বপ্ন, মানবকল্যাণের ব্রত ও নিরলস চেষ্টা তাঁকে নিয়ে গেছে সাফল্যের শিখরে। রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্ম থেকে তিনি পৌঁছে গেছেন রাষ্ট্রপ্রধানের আসনে।
সেদিনের সেই পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও কুলিই আজ জাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট মাইকেল সাতা। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৪৩ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন তিনি। শপথ নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেই দুর্নীতি দমনের অঙ্গীকার করেছিলেন । তিনি লন্ডনের রেলওয়ে স্টেশনের চেয়েও মাতৃভূমিকে বেশি পরিচ্ছন্ন রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন । ৭৪ বছর বয়সী সাতা আট সন্তানের জনক।
পূর্বসূরি রুপিয়া বান্দার সাবেক সরকারের সমালোচনা করে সাতা বলেছেন, দুর্নীতির ব্যাপারে বান্দার সরকার ছিল নমনীয়। তাই তাঁর প্রথম কাজ হচ্ছে দুর্নীতি দমন করে দেশের খনিজ সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টন করা।
স্পষ্টভাষী বলে ‘কিং কোবরা’ হিসেবে পরিচিত সাতা। জাম্বিয়া যখন ব্রিটিশ-শাসকদের উপনিবেশ ছিল, ওই সময় সাতার জন্ম। তিনি লন্ডনে যান গত শতকের পঞ্চাশের দশকের দিকে। পরে পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও কুলি হিসেবে কাজ করেন ভিক্টোরিয়া স্টেশনে। কাজের ফাঁকে খণ্ডকালীন পড়াশোনা করেছেন। দেশে ফিরে যোগ দেন পুলিশ বাহিনীতে।
সারা দেশের মানুষ নিরাপদ পানি পান করার সুযোগ না পাওয়া পর্যন্ত নিজে কোনো বোতলজাত পানি পান করবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন সাতা। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কারণেই সাধারণ মানুষের মন জয় করেছেন তিনি। গঠন করেন প্যাট্রিওটিক ফ্রন্ট।
খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ দেশটিতে চীনের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি ও প্রভাবের ঘোরবিরোধী সাতা। সমালোচকেরা বলছেন, সাতার বেইজিংবিরোধী এ মনোভাবের কারণে জাম্বিয়ার অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা জাম্বিয়ার নতুন প্রেসিডেন্টকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, সাতার সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত তাঁর দেশ। এএফপি।
সূত্রঃ প্রথম আলো