অসফলদের সফলতার কাহিনী
- লিডারশিপ ডেস্ক
যারা জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল হন তাদের সম্পর্কে সবারই আগ্রহ থাকে। এসব সফল ব্যক্তিকে পৃথিবীর প্রায় সবাই চেনেন। তাদের সফল হওয়ার পেছনে থাকে অনেক ঘটনা। কেউ একদিনে সফল হন না। সফলতার পেছনেও থাকে অনেক ব্যর্থতার গল্প। সফল হওয়ার জন্য আমরা সবাই চেষ্টা করি। কিন্তু হয়তো আমাদের সবার চেষ্টা সফল হয় না। এর পেছনেও আছে কিছু ঘটনা। আছে নানা কারণ। যদি একবার চেষ্টা করেই সবাই সফল হয়ে যান তাহলে পৃথিবীতে কোনো সমস্যাই থাকত না। মানুষের জীবনধারা যেত পালটে। কিন্তু তা কোনোদিনই সম্ভব নয়। মানুষ কখনও সফল হবে, কখনও হবে বিফল। এটাই নিয়ম। তবে কেউ যদি ব্যর্থ হয়ে নিজেকে গুটিয়ে নেন তাহলে সাফল্য কখনই আসবে না। ব্যর্থ হলেও ভাবতে হবে, আর একটু চেষ্টা করলেই সাফল্য আসবে আপনার জীবনেও। জেনে রাখুন, সফল ব্যক্তিদের অনেকেই প্রথমে ব্যর্থ হয়েছেন। ব্যর্থ হয়েছেন অনেকবার। তবু চেষ্টা করে গেছেন ব্যর্থতাকে জীবন থেকে মুছে দিতে। অবশেষে একদিন সাফল্য ধরা দিয়েছে হাতের মুঠোয়। তারা জীবনে ব্যর্থ হয়েও সফলতার শীর্ষে আরোহণ করেছেন।
আলবার্ট আইনস্টাইন
পৃথিবীখ্যাত এ বিজ্ঞানী ছোটবেলায় ছিলেন খুব চুপচাপ। অনেকেই হাবাগোবা মনে করতেন তাকে। জন্মের পর ৪ বছর পর্যন্ত তিনি কথা বলতে পারেননি। তার সম্পর্কে শিক্ষকদের ধারণা ছিল, তাকে দিয়ে লেখাপড়া হবে না। জীবনে কিছুই করতে পারবেন না তিনি। তাদের কথা ফলেনি। পরবর্তী সময়ে দুনিয়া নাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। সাধারণ আপেক্ষিকতা এবং বিশেষ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব তারই আবিষ্কার। বিজ্ঞানের সবচেয়ে শক্তিশালী সমীকরণ তারই সৃষ্টি। পদার্থ বিজ্ঞানে তার অনেক অবদান। তিনি একজন নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী।
টমাস আলভা এডিসন
বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসনের নাম শোনেননি এমন মানুষ পৃথিবীতে খুব কমই আছেন। ছেলেবেলায় শিক্ষকরা তার ভবিষ্যৎ নিয়ে হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, তাকে দিয়ে কিছুই হবে না। তিনি কোনো দিন কিছু শিখতে পারবেন না । অথচ তিনি পৃথিবীর বিখ্যাত একজন বিজ্ঞানী যার ১ হাজর ৯৩টি প্যাটেন্ট রয়েছে। তিনি বৈদ্যুতিক বাতি আবিষ্কার করে পৃথিবীর মানুষকে চমকে দিয়েছিলেন।
অবশ্য বৈদ্যুতিক বাল্ব আবিষ্কার করতে গিয়ে তিনি ৯ হাজার বার ব্যর্থ হয়েছিলেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি ব্যর্থ হইনি। এতে আমি শিক্ষা পেয়েছি, এমন ১০ হাজার বিভিন্ন উপায় আছে যেগুলো কাজ করবে না।
ওয়াল্ট ডিজনি
আমরা ছোটবড় অনেকেই কার্টুন ছবি দেখতে পছন্দ করি। আর ওয়াল্ট ডিজনির কার্টুন হলে তো কথাই নেই। ওয়াল্ট ডিজনি এমন এক ব্যক্তির নাম যিনি সারা বিশ্বে কার্টুনের জন্য বিখ্যাত। কার্টুনের জগতে তিনি একনামে পরিচিত। অথচ তার জীবনের শুরুতে ছিল ব্যর্থতা। তিনি একটা পত্রিকায় কাজ করতেন কার্টুন আর্টিস্ট হিসেবে। পত্রিকার মালিক তাকে চাকরিচ্যুত করেন। কারণ হিসেবে জানিয়ে দেন, তার সৃষ্টিশীল আইডিয়া নেই। নতুন কিছু কল্পনা করার শক্তি নেই। তাকে দিয়ে কাজ চলবে না।
ওয়াল্ট ডিজনি নিজের নামে একটা কোম্পানি খোলেন। তার বাড়ির গ্যারেজ হয় এ কোম্পানির অফিস। ওয়াল্ট ডিজনি বর্তমানে হলিউডের একটা বিখ্যাত কোম্পানি। এর বাৎসরিক আয় ৪০ বিলিওন ডলার । আর তিনি বর্তমানে কার্টুন জগতে এক অমর নাম।
স্টিভ জবস
স্টিভ জবসের পরিচয় নতুন করে দেয়ার প্রয়োজন নেই। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের একজন উদ্যোক্তা ও প্রযুক্তি উদ্ভাবক। তাকে পার্সোনাল কম্পিউটার বিপ্লবের পথিকৃৎ বলা হয়। অথচ তিনি তার নিজের কোম্পানি নেক্সট থেকে বিতাড়িত হন। তখন তার বয়স ৩০ বছর। তিনি খুব ভেঙে পড়েছিলেন। কিন্তু হতাশা কাটিয়ে কিছুদিন পর অ্যাপেল নামে নতুন একটা কোম্পানি দেন। ১৯৯৬ সালে তিনি নেক্সটকে কিনে নেন। বিল গেটস আর ওয়াল্ট ডিজনির নাম বিবেচনায় রেখে বলা যায় বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে প্রগতিশীল, প্রভাবশালী, প্রতিভাবান আর সফল প্রযুক্তিক ভাবনার অধিকারী ছিলেন স্টিভ জবস ।
জে কে রাউলিং
প্রথম জীবনে তিনি ছিলেন একজন ব্যর্থ লেখিকা । তার মা মারা যাওয়ার পর তিনি খুব উদাস হয়ে গিয়েছিলেন। একসময় তার স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়িও হয়ে যায়। তার লেখা গল্প হ্যারি পটার কোনো প্রকাশকই ছাপতে চাননি। প্রায় সবার কাছ থেকেই বিমুখ হতে হয়েছিল তাকে। অথচ সেই হ্যারি পটার নিয়েই এখন দুনিয়াজুড়ে হইচই। বইটি পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া বই। বর্তমানে তিনি পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী লেখিকা।