ভারতে বাংলাদেশের বিজয়গাথা
- লিডারশিপ ডেস্ক
ভারতের মুম্বাইয়ে রচিত হলো বাংলাদেশের আরও একটি বিজয়গাথা। মুম্বাইয়ের ‘আদিত্য কলেজ অব আর্কিটেকচার (এসিএ) চতুর্থ আন্তর্জাতিক ডিজাইন প্রতিযোগিতা’র গ্গ্নোবাল ক্যাটাগরিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তিনটি পুরস্কারই এসেছে বাংলাদেশের ঝুলিতে। প্রথম হয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীদের একটি দল, দ্বিতীয় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) ও তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের স্থাপত্য বিভাগের একদল শিক্ষার্থী। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তিন দলই সনদ ছাড়াও ‘প্রাইজমানি’ হিসেবে পেয়েছে যথাক্রমে ১ লাখ, ৭৫ হাজার ও ৫০ হাজার রুপি।
এসিএ ইন্টারন্যাশনাল ডিজাইন কম্পিটিশন আয়োজক মুম্বাইয়ের আদিত্য কলেজ অব আর্কিটেকচার। মূলত দুই ক্যাটাগরিতে নকশা আহ্বান করা হয় শিক্ষার্থীদের কাছে। একটি হলো গেল্গাবাল ক্যাটাগরি, যেখানে বিশ্বের তাবৎ দেশের স্থাপত্যের শিক্ষার্থীরা অংশ নিতে পারেন। অন্যটি ন্যাশনাল ক্যাটাগরি, যা শুধু ভারতীয় শিক্ষার্থীদের জন্য। গ্গ্নোবাল ক্যাটাগরিতে প্রথম তিনটি পুরস্কার ছাড়াও দেওয়া হয় সাইটেশন বা বিশেষ স্বীকৃতি। এ বছর বিশেষ স্বীকৃতি পেয়েছে ভারত, স্পেন ও শ্রীলংকার পাঁচটি দল। এবারের প্রতিযোগিতার বিষয় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল ‘আর্কিটেকচার অব বাউন্ডারিজ’।
প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কারপ্রাপ্ত বুয়েট দলের সদস্যরা হলেন- আতিয়া নুসরাত, শারমিন সুলতানা, তাসনীম ওয়াহেদ ও মেহরী ফারনাজ। সবাই বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। ঊর্মি বলেন, ‘গত বছর আগস্টের দিকে প্রথম সাবমিশন আহ্বান করা হয়েছিল। ৫০০ শব্দের মধ্যে আমরা আমাদের প্রকল্পের বিস্তারিত লিখে পাঠিয়েছি। সঙ্গে প্রয়োজনীয় ড্রয়িং পাঠাতে হয়েছিল।’ তিনি জানান, এবারের প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, ইতালি, জার্মানি, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াসহ প্রায় ২৫টি দেশের শিক্ষার্থীদের তিন শতাধিক প্রকল্প জমা পড়েছিল। সেখান থেকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয় প্রায় দেড়শ’ প্রকল্প। সেগুলো থেকেই হয়েছে চূড়ান্ত বিচার কার্য।
দলের আরেক সদস্য তাসনীম ওয়াহেদ বলেন, আমাদের প্রকল্পের নাম ছিল ‘রিইন্টিগ্রেটিং সেন্ট্রাল জেল’। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জে স্থানান্তরের পর যে জায়গা পাওয়া গেছে, সেখানে সরকারের প্রস্তাবনা মাথায় রেখে আমরা একটি নকশা করেছিলাম। শাবিপ্রবির শোভন শাহরিয়ার পেয়েছেন দ্বিতীয় পুরস্কার। প্রতিযোগিতায় তার দেওয়া প্রস্তাবনা সম্পর্কে বলেন, ‘আমার প্রজেক্টের সাইট হিসেবে বেছে নিয়েছিলাম যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার আলেপ্পো শহরকে। প্রকল্প অনুযায়ী, আলেপ্পো শহরের ধ্বংসাবশেষের যে নিদর্শন আছে, সেই উপাদানগুলোই বিভিন্ন চিত্রশিল্পীর আঁকিবুঁকির মাধ্যমে, গায়ক-গায়িকার গানের মাধ্যমে কিংবা দার্শনিকদের দর্শনশক্তির মাধ্যমে সংরক্ষিত হবে। জায়গাটি ধ্বংসাবশেষ হিসেবে বিবেচিত না হয়ে বরং পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় একটি স্থান হিসেবে বিবেচিত হবে।’ ওদিকে তৃতীয় পুরস্কার এসেছে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের স্থাপত্য বিভাগের চতুর্থ বর্ষের পাঁচ শিক্ষার্থী কাজী মো. আতিকুল ইসলাম, রাজিব কুমার সাহা, অন্তরা তালুকদার, প্রতীতি ইকবাল ও মো. জাহিদুল ইসলামের হাত ধরে। দলের সদস্য অন্তরা বলেন, আমাদের প্রজেক্টের ট্যাগলাইন ছিল, আ প্রেয়ার দ্যাট হ্যাজ নো রিলিজিওন।