গণসংযোগ পেশায় এক সফল কর্মী

গণসংযোগ পেশায় এক সফল কর্মী

  • লিডারশিপ ডেস্ক

বর্তমানে আমাদের দেশে একটি সম্ভাবনাময়ী পেশা হলো গণসংযোগ। ইতোমধ্যে অনেকেই এপেশায় এসে সফলতার প্রমান দিতে পেরেছেন। এমন একজন গণসংযোগ কর্মকর্তার হলেন মাহফুজুর রহমান মুকুল।


বর্তমান বাংলা দেশের প্রেক্ষাপটে গণসংযোগকে মানুষ কীভাবে গ্রহণ করছে সে সম্পর্কে মাহফুজুর রহমান মুকুল বলেন, ‘গণসংযোগ যেকোন প্রতিষ্ঠানের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দায়িত্ব। কারণ, একজন গণসংযোগ কর্মকর্তা একটি প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করে থাকেন। তার মাধ্যমেই একজন সাধারন মানুষ আর প্রতিষ্ঠান এর মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি হয়ে থাকে। তবে, সারাবিশ্বের ন্যায় আমাদের দেশে এখনো পর্যন্ত গণসংযোগ বিষয়টি প্রয়োজন অনুযায়ী মূল্যায়িত হচ্ছে না। আপনি অনেক প্রতিষ্ঠানেই দেখবেন, গণসংযোগ বিষয়ক কোনো পজিশনই নেই। অনেক প্রতিষ্ঠানে গণসংযোগ নাম মাত্র থাকে। অনেক প্রতিষ্ঠানে পার্টটাইম ভিত্তিক গণসংযোগ পদে নিয়োগ দেয়া হয়। সেসব প্রতিষ্ঠানে একটা তথ্যের জন্য আপনি যোগাযোগ করে দেখবেন, একজন অন্যজনকে ঠেলছে। কেউই আপনাকে সঠিকভাবে কোনো তথ্য দিতে পারবেন না। শেষ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের মালিক নিজেই গণসংযোগের ভূমিকা পালন করেন। তবে, এসব দৃশ্যপট শুধুই ক্ষুদ্র মাঝারি এবং মাঝারিমানের প্রতিষ্ঠানের। দেশি কিংবা বহুজাতিক বৃহত্ প্রতিষ্ঠানগুলোর দৃশ্যপট ভিন্ন। সেখানে গণসংযোগ বিষয়ক আলাদা বিভাগ থাকে। সেখানে বহুমাত্রিক কাজের ক্ষেত্র প্রস্তুত থাকে। একজন গণসংযোগ কর্মকর্তা সেখানে নিজেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পজিশনে দেখতে পান। সেসব প্রতিষ্ঠান গণমানুষের কাছে নিজেদের সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয় গণসংযোগ বিভাগের মাধ্যমে।’

বাংলাদেশে গণসংযোগ পেশার ভবিষ্যত্ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি যে, বাংলাদেশে গণসংযোগ পেশার ভবিষ্যৎ অত্যন্ত ভালো। কারণ, বর্তমানে যেকোনো প্রতিষ্ঠান আগের তুলনায় অনেক বেশি প্রচারমুখী। যেহেতু, প্রচারের ক্ষেত্রে একজন গণসংযোগ কর্মকর্তা অন্যদের তুলনায় অনেক ভালোভাবে প্রতিষ্ঠানের প্রচারকার্য পরিচালনা করতে সক্ষম। তাই, প্রচারমুখী মার্কেট এ গণসংযোগ পেশার ভবিষ্যত্ অনেক বেশি প্রসারিত।’

মাহফুজুর রহমান মুকুল কীভাবে এই পেশায় এলেন সে সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘প্রথমেই আমার পড়াশোনার ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কে একটু বলতে হবে। আমি মিডিয়া স্টাডিজ অ্যান্ড জার্নালিজম বিষয়ে গ্র্যাজুয়েশন করেছি। সাংবাদিকতা পেশায় এসেছিলাম এই পেশার প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা নিয়ে। আমি প্রায় সাড়ে চার বছর ব্যাপী দুটি দৈনিক পত্রিকা, একটি অনলাইন এবং একটি ম্যাগাজিনে সাংবাদিকতা করেছি। আমি যেখানেই কাজ করেছি সেখানেই এক ধরনের অস্থিরতা দেখেছি। সাংবাদিকতা পেশার প্রতি শ্রদ্ধা থাকলেও প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্থিরতা আমার ভালো লাগেনি। এখানকার অনেক মানুষের এলো-মেলো জীবনটাও আমার ভালো লাগেনি। তাই, নিজেকে এই পেশা থেকে সরিয়ে অন্য কোনো জায়গায় নিয়ে যেতে চেয়েছি। আর সেক্ষেত্রে, গণসংযোগ পেশার চেয়ে অন্য কোনো পেশাকে শ্রেয়তর মনে করিনি। মনস্থির করার পর হঠাত্ একদিন জানতে পারলাম স্মার্ট টেকনোলজিস-এ এই পদে একজন নেওয়া হবে। তখন আবেদন করি, ইন্টারভিউ দিই এবং নিয়োগপ্রাপ্ত হই। পেশাগত দক্ষতার প্রয়োজনে পরবর্তীতে মার্কেটিংয়ে এমবিএ’র পাশাপাশি জার্মানির আই-ভার্সিটি এবং আয়ারল্যান্ডের এলিজন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে কমিউনিকেশন্স বিষয়ক দুটি সার্টিফিকেট কোর্সও সম্পন্ন করেছি।’ এই পেশায় নতুন যারা আসতে চায়, তাদের জন্য পরামর্শে তিনি বলেন, ‘এই পেশায় কাজ করতে হলে অনেক বেশি ধৈর্য্যশীল হতে হবে। কাজের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের ভেতরে এবং বাইরে অনেক ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হবেন। কিন্তু, আশা ছাড়া যাবে না। শেষ পর্যন্ত আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে সমস্যা সমাধানের জন্য। মনে রাখতে হবে, যেখানে যত বেশি সমস্যা, সেখানে ততবেশি সমাধানের রাস্তাও সৃষ্টিকর্তা দিয়ে রেখেছেন। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করবেন, সেই প্রতিষ্ঠানের প্রতি এবং কাজের প্রতি মন থেকে ভালোবাসা নিয়ে পরিশ্রম করতে হবে।’

সূত্র: ইত্তেফাকfavicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment