কুলি থেকে কোটিপতি
- লিডারশিপ ডেস্ক
বিশ্বের আর্থিক জগতের অন্যতম ধনী জর্জ সোরোসের জন্ম ১৯৩০ সালের ১২ আগস্ট। তিনি জন্মগ্রহণ করেন হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টের এক ইহুদি পরিবারে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এ ধনকুবের বিশ্বখ্যাত আর্থিক প্রতিষ্ঠান সোরোস ফান্ড ম্যানেজমেন্টের চেয়ারম্যান। এ ছাড়া বিশ্বের খ্যাতনামা অলাভজনক জনকল্যাণমূলক সংস্থা ওপেন সোসাইটি ইনস্টিটিউটেরও চেয়ারম্যান তিনি।
১৯৪৪ সালে যখন হিটলারের জার্মানি হাঙ্গেরি দখল করে নেয়, তখন তিনি মাত্র ১৩ বছরের বালক। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে সোরোস চলে আসেন ইংল্যান্ডে। এখানেই শুরু হয় অভিবাসী এক নিঃসম্বল তরুণের জীবনসংগ্রাম। তখন ইহুদি এক চাচার পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেন তিনি। ওই চাচা তার জন্য সামান্য কিছু মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করেছিলেন একটি ধর্মীয় সংগঠন থেকে। তবে দারিদ্র্য দমাতে পারেনি সোরোসকে। তিনি ভর্তি হন লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসে। ১৯৫২ সালে স্নাতক সম্পন্ন করেন তিনি। পেট চালানোর দায়ে ছাত্রাবস্থায় রেলওয়ের কুলিগিরি থেকে শুরু করে হোটেলের ওয়েটার—এ রকম আরও অনেক কাজ করেছেন তিনি।
স্নাতক সম্পন্ন করার পর বহু কষ্টে কাজ শুরু করেন ইংল্যান্ডের বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকে। ১৯৫৬ সালে তিনি নিউইয়র্কে চলে আসেন। এখানেও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু করেন। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। সোরোসের অধিকাংশ জনকল্যাণমূলক কাজের দৃষ্টিভঙ্গি গণতন্ত্র ও সুশাসন। সোরোসের মতে, বেশিরভাগ দারিদ্র্যের কারণ অদক্ষ শাসনব্যবস্থা।
নিউইয়র্কের নিউ স্কুল ফর সোস্যাল রিসার্চ, ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড, ইয়েল ইউনিভার্সিটি ও করভিনাস ইউনিভার্সিটি অব বুদাপেস্ট থেকে অনারারি ডক্টরাল ডিগ্রি লাভ করেন সোরোস। ২০১২ সালের ১২ মার্চ ফোর্বস ম্যাগাজিনের তালিকা অনুযায়ী তিনি পৃথিবীর ২২তম ধনী ব্যক্তি। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ধনীদের মধ্যে তার অবস্থান সপ্তম। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যমতে, তার সম্পদ ২০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। ফোর্বসের তালিকা অনুযায়ী, ধনকুবেরদের তালিকায় তিনি ২২ নম্বরে; তবে নিশ্চিতভাবে আরও কয়েকজনকে ডিঙিয়ে সামনের দিকেই থাকতেন, যদি না তিনি ৮০০ কোটি ডলার দানধ্যানে ব্যয় করতেন।