শীতেও হাসুক আপনার ত্বক
রবিউল কমল: উত্তরে হিমেল হাওয়া আক্রমণ করছে আপনার কোমল ত্বকে। ঋতু পরিবর্তনের প্রভাব ত্বকে পড়বে এটাই স্বাভাবিক। তবে চাইলে আপনি শীতেকে টপকে আপনার ত্বককে ভালো রাখতে পারবেন। অবশ্য সেজন্যে আপনাকে কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হবে। তবেই আপনি শীতের হাত থেকে আপনার ত্বককে নিরাপদে রাখতে পারবেন। তাহলে আসুন এখন জেনে নিই শীতে ত্বক ভালো রাখার কিছু চমৎকার কৌশল।
১. পরিচ্ছন্নতা: শীতকালে ত্বক সজীব রাখার মূল মন্ত্রই হল নিজেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন রাখা। শীতকালে বাতাসে জলীয়বাস্পের পরিমাণ কমে যাওয়ায় আবহাওয়া হঠাৎ শুষ্ক হয়ে যায়। অন্যদিকে বাতাসে ধূলিকাণার পরিমানও বেড়ে যায়। তাই শুষ্ক ত্বকের যত্নের প্রথম ধাপই হল পরিচ্ছন্নতা।
২. নিয়েমিত গোসল: শীতকালে শুষ্ক আবহাওয়ায় ত্বকে টান পড়ে,যার ফলে কমবেশি আমরা সবাই শরীরে ময়েশ্চরাইজার লাগায়। যার ফলে আমাদের শরীরে ধূলোবালি বেশি জমে। তাই কোনো দিন গোসল করা বাদ দেবেন না। এতে শরীর আরো শুকিয়ে যাবে। দরকার হলে প্রতিদিন হালকা গরম পানিতে গোসল করুন।
৩. সাবানের ব্যবহার: শীতকালে মুখ ফেস ওয়াশ দিয়ে পরিষ্কার করার বদলে তুলোয় ক্লিনজিং মিল্ক লাগিয়ে মুখ পরিষ্কার করে মুছে নিন। তারপর পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। যতদূর সম্ভব সাবান কম ব্যবহার করুন। সাবানের পরিবর্তে লিকুইড সোপ ব্যবহার করতে পারেন।
৪. পায়ের যত্ন: শীতে শরীরের অন্যান অংশের যত্ন নিলেও আমদের মধ্যে অনেকেই ভুলে যাই চরণযুগলের কথা। তাই নজর রাখুন, পা ফাটলে একেবারেই নোংরা জমতে দেবেন না। গরম পানিতে মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে পা ডুবিয়ে রাখুন। কিছুক্ষণ পর নরম ব্রাশ দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করে নিন।
৫. ময়শ্চারাইজিং: শীতে ময়শ্চারাইজিং ভীষণভাবে জরুরি। গোসলের পানিতে কয়েক ফোঁটা গ্লিসারিন ফেলে দিয়ে সেই পানিতে গোসল করলে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে।
গোসলের পর কিংবা বাইরে থেকে ফিরে হাত-মুখ ধোওয়ার পর ভাল করে হালকা কোন ময়শ্চারাইজার মুখ, হাতে এবং পায়ে লাগান। ভারী ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে বাইরে বের হবেন না। এতে ধুলা-ময়লা গায়ে বসে যাবে। ফাটা পা পরিষ্কার করার পর অবশ্যই ভাল ক্রিম লাগিয়ে ঘুমাতে যাবেন। ঠোঁট ফাটলে অল্প গ্লিসারিন আঙুলে নিয়ে ঠোঁটে লাগান। সারাদিন লিপ বামের হালকা পরত লাগিয়ে রাখুন।
৬. কনুই, গোড়ালির যত্ন: শুষ্ক গোড়ালি, কনুইয়ের জন্য এই সময় যদি আপনি ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করেন, তো খুব ভাল। এক টুকরো লেবুর সাথে চিনি লাগিয়ে কিছুক্ষণ কনুইতে ঘষুন। মিনিট তিনেক রেখে ধুয়ে ফেলুন। দারুণ ফল পাবেন।
৭. প্যাক: ময়দা, বেসন বা যে কোনো ধরণের প্যাক যা ত্বককে শুষ্ক করে দেয় তা একেবারেই লাগাবেন না। লাগালে ত্বক আর্দ্রতা হারাবে। এই সময়ের জন্য সবচেয়ে উপকারী ফ্রুট প্যাক। কলা আর মধু মিশিয়ে মুখে, গলায় লাগান। এই প্যাক ত্বক পরিষ্কার যেমন করবে, তেমনি আর্দ্রতাও বজায় রাখবে, আবার উজ্জ্বলতাও বাড়বে।
৮. মেক আপ: যেহেতু এই সময় মেক আপ নষ্ট হয় না তাই সারাদিন মেক আপ করে থাকা যায়। সবসময় ক্রিম বেসড মেকআপ লাগান মুখে। লিপস্টিক লাগালে সেটাও যেন ক্রিম বেসড হয়। না হলে শুষ্ক ত্বকের সমস্যা আরো বাড়বে।
৯. খাওয়া দাওয়া: সঠিক খাওয়া দাওয়া ত্বক ভাল রাখতে খুবই জরুরি। প্রচুর মৌসুমি ফল ও শাক সবজি খান। গরম হার্বাল চায়ের কোনো তুলনা নেই এইসময়। প্রতিদিন সকালে উঠে ১ চামচ মধু খান। তাহলে শীত কম লাগবে আবার ত্বকের উজ্জ্বলতাও বাড়বে।
১০. পানি পান: শরীর ভিতর থেকে শুকিয়ে গেলেই তার প্রভাব বাইরে পড়ে। তাই শুষ্ক ত্বকের সমস্যা দূরে রাখতে প্রচুর পরিমানে পানি খান।
আইস টুডে ম্যাগাজিন অবলম্বনে রচনা রবিউল কমল,
মডেল: সানা হক,
ফটোগ্রাফি: এস এম রাসেল।