মনের মতো পড়ার ঘর
রবিউল কমল : শহরের বাসাগওলো আকারে বেশ ছোট হয়ে থাকে। শোবার ঘর, বসার ঘর, রান্নাঘর ও খাবার ঘরের কারণে পড়ার ঘরের জন্য আলাদা জায়গার ব্যবস্থা করা বেশ কঠিন। তবে চাইলেই ছোট ঘরের মাঝে মনের মতো করে পড়ার জায়গা করে নেওয়া যায়। অবশ্য সেজন্য আপনাকে একটু ভেবে চিন্তেই পরিকল্পনা করতে হবে। এ ব্যাপারে আরও কিছু সহায়ক পরামর্শ নিম্নরূপ।
জায়গা নির্বাচন:
পড়ার জন্য প্রথমে এমন জায়গা নির্বাচন করুন যেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলো ও বাতাস চলাচল করতে পারে। এজন্য আপনি শোবার ঘর বা বসার ঘরের জানালার পাশকে বেছে নিতে পারেন।
শেলফ নিয়ে ভাবতে হবে:
শেলফ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ভাবতে হবে পড়ার জায়গাটি কার জন্য। তা বিবেচনা করে শেলফের আকার নির্ধারণ করতে হবে। স্কুল পড়ুয়াদের জন্য একটু বড় শেলফ হওয়া ভালো, অবশ্যই তা নাগালের মধ্যে হতে হবে। কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের জন্য বুক শেলফের পাশাপাশি কম্পিউটার টেবিলের কথাও মাথায় রাখতে হবে। শখ বা অবসরে বই পড়ার জন্য হলে একটু নিচু ও ছোট শেলফ হলে ভালো হয়, দেখতে বেশ সুন্দর লাগবে।
কিভাবে সাজাবেন :
জায়গা নির্বাচন করা হয়ে গেলে সেখানের মেঝেতে যেকোনো ম্যাট্র্যাস রাখুন এবং পাশাপাশি রং ও আকৃতির মিল রেখে কুশন বা ছোট বালিশ রাখতে পারেন, যা বই পড়ার সময়কে আরামদায়ক করে তুলবে। সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য নানারকমের ছোট রঙিন কার্পেট, শো-পিসও রাখাতে পারেন। আর রাতে বই পড়ার অভ্যাস থাকলে হাতের কাছে ল্যাম্পশেইড রাখাতে পারেন।
নজর দিন রঙের প্রতি :
পড়ার জায়গায় রঙের ক্ষেত্রে সাদা রঙকে প্রাধান্য দিন। এতে মনের চঞ্চলতা কমে ও মানসিক স্বস্থি বজায় থাকে। তবে আপনি চাইলে আপনার নিজের পছন্দসই যেকোনো হালকা রং ব্যবহার করতে পারেন।
কার কেমন পড়ার ঘর :
পড়ার ঘরের সাথে বয়সের একটি সম্পর্ক আছে। তাই পড়ার ঘর বা জায়গা নির্বাচনে বয়সের ব্যাপারটা অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।
- ছোটদের ক্ষেত্রে তাদের পড়ার ঘরে নানারকমের ছোট খেলনা, পুতুল, রঙিন ছবি, বেলুন বা প্রাকৃতিক দৃশ্য রাখা যেতে পারে। এতে তাদের পড়ার সময়টা বিরক্তিকর বা একঘেঁয়ে লাগবে না। তাছাড়া এতে শিশুর মানসিক বিকাশও সঠিকভাবে হবে।
- অনেকে বই পড়ার সময় গান শুনতে পছন্দ করেন। তারা পড়ার জায়গায় মিউজিক সিস্টেমের ব্যবস্থা রাখতে পারেন। এক্ষেত্রে শেলফের নিচের অংশে সাউন্ডের ব্যবস্থা করে উপরের অংশ বই রাখার জায়গা হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। পাশে একটি হেডফোন রাখুন যাতে আপনার গান শোনা অন্যের জন্য বিরক্তির কারণ না হয়। এটি শুধুমাত্র তাদের জন্য যারা মেঝেতে বসে বই পড়েন।
- অনেকে চেয়ার-টেবিলে বসে পড়তে এবং গান শুনতে পছন্দ করেন। সেক্ষেত্রে টেবিল থেকে খানিকটা দূরে মিউজিক সিস্টেমের ব্যবস্থা করুন। তাহলে পা ঝুলিয়ে এবং দুলিয়ে পড়তে অসুবিধা হবে না।
- আপনি যদি প্রকৃতিপ্রেমি হন তাহলে পড়ার জায়গায় গাছ রাখাতে পারেন। এটি আপনার পড়ার পরিবেশকে অনেক প্রাণবন্ত করে তুলবে। আর এ রকম পড়ার ঘর বসার ঘর বা শোবার ঘরের এক কোণায় অনায়াসে করা যায়।
- আপনি যদি গৃহিনী হয়ে থাকেন তাহলে পড়ার জন্য শোবার ঘরই বেছে নিন। তাহলে সারাদিন খাটাখাটুনির পর অথবা কাজের ফাঁকে বই পড়তে চাইলে শোবার ঘরের চেয়ে উপযুক্ত জায়গা আর পাবেন না।
বই ছাড়া যাদের একটি দিনও চলে না তাদের দরকার একটি মনের মতো পড়ার ঘর বা জায়গা। একটু ভাবলেই ছোট ঘরের মাঝেই মনের মতো পড়ার জায়গা পাওয়া সম্ভব। উপরের পরামর্শগুলো প্রয়োগ করে দেখুন আপনিও পেয়ে যাবেন একটি চমৎকার পড়ার জায়গা।